বুধবার, এপ্রিল ১৭, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

অনেক বলাবলি চলছে তারপরও একি নজির গড়লেন উবার চালক রাজ্জাক মল্লিক

ঢাকায় সততার নজির গড়েছেন একজন উবার চালক। আরোহীর ওয়ালেট ফিরিয়ে দিয়ে এই সততার উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন রাজ্জাক মল্লিক নামে একজন উবার চালক।

এ বিষয়ে দৈনিক কালের কণ্ঠে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। স. সুমন এ প্রতিবেদনটি লিখেছেন।

জানা গেছে, স.সুমন উবারের গাড়িতে তার ব্যবহৃত ওয়ালেট ফেলে রেখে যান। এতে টাকা ছাড়াও অফিসের দরকারি কাগজপত্র ছিল। কিন্তু সে কথা স.সুমনের মনে ছিল না। যখন তিনি অন্য গাড়িতে চড়েছেন, তখন তিনি জানতে পারেন যে, তার কাছে ওয়ালেট কাছে নেই। কিন্তু অবাক হন যখন উবার গাড়ির চালক রাজ্জাক মল্লিক তাকে ফোন করে জানান যে, তিনি ওই চালকের গাড়িতে তার ওয়ালেট ফেলে রেখে গেছেন। শুধু তাইই নয়, তিনি প্রতিবেদকের ঠিকানা সংগ্রহ করে তা তার বাসায় পৌঁছেও দিয়েছেন।

নতুন সময়ের পাঠকদের জন্য স. সুমনের সেই প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হলো-

অফিসের সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ঢাকার বাইরে যাওয়ার প্ল্যান ছিল আগে থেকেই। সেই মতে বাস ধরার উদ্দেশ্যে সকাল সকাল বের হলাম দুজন। বাসে প্রচণ্ড ভিড়, সিএনজিওয়ালারা ভিআইপিদের মতো করে চলে যাচ্ছে। ডাকলেও থামাথামির নাম নেই। এমতাবস্থায় ভরসা হলো অ্যাপভিত্তিক ট্যাক্সি সার্ভিস উবার।

রিকোয়েস্ট দেওয়ার ৭-৮ মিনিটের মধ্যে চলে আসল গাড়ি। গন্তব্যে পৌঁছেই দেখি একটি বাস মাত্রই স্টার্ট দিয়ে ধীরে ধীরে এগুতে শুরু করেছে। পরবর্তী বাস ধরতে অপেক্ষা করার ফুরসত নেই। তাই তাড়াহুড়া করে উবার চালককে ভাড়া মিটিয়ে বাসে উঠলাম।

বাসে ওঠার মিনিট পাঁচেক পর ভাড়া চাইতে এলো। লম্বা ট্যুরে গেলে মানিব্যাগে ছাড়াও পকেটে কিছু টাকা থাকে আমার। সেটা দিয়ে ভাড়া মেটালাম। বাসের সুপারভাইজার যে টাকা ফেরত দিল সেটা মানিব্যাগে রাখতে গিয়েই মাথায় যেন বজ্রপাত হলো!

কারণ, পকেটে মানিব্যাগ নেই! এদিকে, বাস চলতে শুরু করেছে। আমি সাধারণত যেভাবে মানিব্যাগ রাখি তাতে পকেটমারকে অনেক কসরৎ করতে হবে সফল হতে হলে। আর উবার থেকে নেমে বাসে ওঠা পর্যন্ত সে রকম কোনো পরিস্থিতিও ছিল না। তাহলে ঘটনাটি কী হলো?

এত জার্নি করেছি, তবে এমন ঘটনার শিকার কোনোদিন হইনি। মনে হলো, সম্ভবত তাড়াহুড়া করে ভাড়া দিতে গিয়ে মানিব্যাগটা উবারেই ফেলে এসেছি! মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়া ছাড়া উপায় ছিল না। বাস থেকে নামব কিনা ভাবছিলাম। আমার সঙ্গী আশ্বাস দিয়ে বলল, `আমার কাছে টাকা আছে, নামার প্রয়োজন নেই। ` কিন্তু মানিব্যাগে আমার কিছু টাকা ছাড়াও ব্যাংকের কার্ড, অফিসের কিছু কাগজ আছে। আসন্ন ঝামেলার আশঙ্কায় আমি ঘামছিলাম। সেই মুহূর্তেই ঘটনাটা ঘটল।

পকেটে আমার মোবাইলখানা বেজে উঠল! সেই উবার চালক আব্দুর রাজ্জাক মল্লিক ছিলেন ফোনের অপর প্রান্তে। বললেন, `আপনার মানিব্যাগ তো ফেলে গেছেন। আমি সিগন্যালে আছি, আপনি আসেন। কোনো চিন্তা নেই। ` আমি তাকে বললাম আমার গাড়ি ছেড়ে দিয়েছে। উনি হেসে বললেন, `কোনো চিন্তা নাই, আপনার ঠিকানাটা দেন, আমি রাতে ট্রিপ শেষ করে পৌঁছে দিয়ে আসব। ` আমি মোটামুটি স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। তাকে কী বলব!

কী বলে ধন্যবাদ দেব- ভাষা খুঁজে পাচ্ছিলাম না!

রাজ্জাক ভাই আবার বললেন, `আপনি আমাকে ঠিকানাটা এসএমএস করে দেন। তারপর ঘুরে আসেন। কোনো চিন্তা নাই। `

তাকে ঠিকানা পাঠালাম। মনটা আসলেই নিশ্চিন্ত হয়ে গেল। তারপর বেড়ানো শেষে সে দিনই সন্ধ্যায় আমরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা দিলাম। রাজ্জাক ভাই মানিব্যাগ নিয়ে আসার কথা ছিল রাত ১০টায়। সাড়ে ১০টার দিকে তিনি জানালেন, গাড়িতে গ্যাস ভরার জন্য সিএনজি পাম্পে আছেন। বেশি রাত হয়ে গেলে পরের দিন সকালে তিনি মানিব্যাগ নিয়ে আসবেন। সত্যি বলতে, আমার কোনো দুশ্চিন্তা হয়নি। এমন একজন মানুষ থাকলে দুশ্চিন্তা কেন হবে?!

রাজধানীর বিখ্যাত যানজট কাটিয়ে অবশেষে রাত ১২টার দিকে বাসায় পৌঁছলাম। ৫ মিনিট পরই ফোন এলো রাজ্জাক ভাইয়ের, `ভাই আপনার বাসায় আসতে আমার ৬-৭ মিনিট লাগবে। আপনি কাউকে পাঠান। ` আমি নিজেই চলে এসেছি বলে তাকে জানালাম। তিনি আসলেন। মানিব্যাগ দিলেন। বললাম, আপনি গাড়ি থেকে নামেন, আপনার সাথে বুক মিলাব। তিনি হেসে বললেন, ভাই, এইটা কোনো ব্যাপার না। তার সাথে করমর্দন করলাম। সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে তার ছবিও তুললাম। এমন অস্থির সময়ে রাজ্জাক ভাই যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন তা তো সবাইকে জানাতে হবে।

পরের দিন আবার কথা হলো রাজ্জাক ভাইয়ের সাথে। সাক্ষাৎকারের কথা বলতেই তিনি একটু লজ্জা পেলেন। বললাম, `আপনার ভালো কাজের কথা তো সবাইকে জানাতে হবে। তাহলে আরও দশজন ভালো কাজে উৎসাহ পাবে। `

রাজ্জাক মল্লিক জানালেন, তার বাড়ি শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া থানাধীন চামটা ইউনিয়নে। ১০ বছরের বেশি সময় ধরে ঢাকায় ড্রাইভিং করেন। ট্যাক্সি থেকে শুরু করে রেন্ট-এ-কার, তারপর উবারে যুক্ত হয়েছেন।

আমার সাথে যে ঘটনাটি ঘটেছিল, এমন ঘটনা তার জীবনে অনেকবার ঘটেছে। একবার রামপুরায় নামার সময় ট্যাক্সিতে এক যাত্রী মোবাইল ফেলে গিয়েছিলেন। ওই ট্রিপ শেষ করে তিনি তাবলিগে যান। তাবলিগ শেষ করে ফিরে এসে তিনি দেখতে পান তার ট্যাক্সিতে মোবাইল পড়ে আছে। এরপর সঠিক ব্যক্তিকে খুঁজে বের করে সেই মোবাইল তিনি ফেরত দিয়েছিলেন। এমন কাজ করে ভীষণ আনন্দ পান আব্দুর রাজ্জাক মল্লিক।

মানুষের উপকার করার চেয়ে আনন্দের কিছু হতে পারে না- এই কথাটি রাজ্জাক ভাই আমাকে বলেননি। কিন্তু তার অভিব্যক্তি আর আচরণ আমার কানে বারবার, এটিই বলে যাচ্ছে যেন।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

টাঙ্গাইলে ছাত্রলীগ নেতাকে কুপিয়ে হত্যা

টাঙ্গাইলের নাগরপুরে ছাত্রলীগ নেতা জাহিদ হাসান ঝলককে বাড়ি থেকে ডেকেবিস্তারিত পড়ুন

সন্ত্রাসী হামলায় আইনজীবী আহত

নিজস্ব সংবাদদাতা : কোর্টে বিরোধীদলীয় মামলা পরিচালনা করার কারনে সন্ত্রাসীবিস্তারিত পড়ুন

রাজধানীতে হাতিরপুলের আগুন নিয়ন্ত্রণে

রাজধানীর হাতিরপুলে কাঁচাবাজার সংলগ্ন ‘রাজ কমপ্লেক্স’ ভবনের দ্বিতীয় তলায় লাগাবিস্তারিত পড়ুন

  • ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি: জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আল্টিমেটাম
  • শিশুর গলায় পিস্তল ঠেঁকিয়ে স্বর্ণালঙ্কার লুট
  • তালাশ টিমের উপর হামলা, ক্র্যাবের নিন্দা ও প্রতিবাদ
  • ক্যাম্পে নাশকতার পরিকল্পনা, অস্ত্র-গোলাসহ ৪ গ্রেপ্তার
  • নাতনিকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে দাদা আটক নীলফামারীতে
  • আমতলীতে তৃতীয়বার মেয়র হলেন মতিয়ার রহমান
  • সোনারগাঁয়ে ভোটকেন্দ্রে গুলিবিদ্ধ হয়ে যুবক নিহত
  • চুয়াডাঙ্গার সীমান্তে কোটি টাকার স্বর্ণের বারসহ যুবক আটক
  • মৌলভীবাজারে ২৯০ বস্তা ভারতীয় অবৈধ চিনি জব্দ
  • কলেজের পিয়ন আবার স্কুলের প্রধান শিক্ষকও তিনি
  • মানিকগঞ্জে হুমকি দিয়ে মন্দিরের মাটি কেটে রাস্তা নির্মাণ
  • বরগুনায় কোটি টাকা মূল্যের তক্ষক উদ্ধার