বৃহস্পতিবার, এপ্রিল ২৫, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

কেমন কাটছে খাদিজার জীবন?

কিছুদিন আগেও যে খাদিজার বেঁচে থাকা নিয়ে সংশয় ছিল, সে আজ স্বাভাবিক জীবনে ফিরবে বলে প্রস্তুত হচ্ছে। ঘাতক বদরুলের চাপাতির আঘাতে যে খাদিজা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে ছিল, আজ সে জীবনের অধরা স্বপ্নগুলো ছুঁতে আবারও স্বপ্নের জাল বুনতে শুরু করেছে। সিলেট শহরতলির আউশা গ্রামের মেয়ে খাদিজা আক্তার নার্গিস প্রবাসী বাবার একমাত্র মেয়ে। বিধাতার ইশারায় খাদিজা এখন স্বাভাবিক জীবনের অপেক্ষায়। জীবনে তাঁর সংকট নেই। স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে খাদিজার শরীরে চলছে থেরাপি।

খাদিজার হাসিমাখা মুখটায় আবার হাসির ফোয়ারা ফুটবে। ক্রমে সুস্থ হতে চলা খাদিজা আক্তার নার্গিসের দিন কাটে ফিজিওথেরাপিতে। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতাল থেকে সাভারের পক্ষাঘাতগ্রস্ত পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) স্থানান্তর হওয়ার পর ফিজিওথেরাপি চলছে। সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় খাদিজার ফিজিওথেরাপি। অল্প বিরতিতে থেরাপি শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টায়। খাদিজাকে সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পায়ের ব্যায়াম করানো হয়। এরপর বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে হাতের ব্যায়াম। আর দুপুর ১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলে উচ্চারণের অনুশীলন। বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত তাঁকে হাঁটানো হয়। এভাবে প্রতিদিন চলে থেরাপি। গত ২৮ নভেম্বর সিআরপিতে ভর্তি করা হয় খাদিজাকে।

খাদিজার থেরাপি চিকিৎসক ডা. ইসরাত জাহান ঊর্মি তাঁকে সারাক্ষণ দেখাশোনা করছেন। সিআরপির নিউরোসার্জন ডা. সাইদ উদ্দিন হেলালের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের চিকিৎসক দল খাদিজার সার্বিক উন্নতির যথাসাধ্য চেষ্টা করে চলেছে। বর্তমানে খাদিজাকে স্পিচ অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েলজি, অকুপেশন ও ফিজিওথেরাপি দেওয়া হচ্ছে। সিআরপিতে ভর্তি হওয়ার আগে খাদিজার ‘মাসেল পাওয়ার’ ছিল ২। স্বাভাবিক অবস্থায় যা থাকার কথা ৫। আগামী তিন মাসে তাঁর মাসেল পাওয়ার স্বাভাবিক পর্যায়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর জন্য খাদিজার পায়ে ওজন ঝুলিয়ে শরীরচর্চা এবং হাঁটানোর অভ্যাস করানো হচ্ছে। পাশাপাশি হাতের ব্যায়াম করানো হচ্ছে।

খাদিজা খুব দ্রুত উন্নতির দিকে যাচ্ছে। তবে ব্রেন ইনজুরি রোগী হওয়ায় যে কোনো সময় তাঁর শরীরের উন্নতি ও অবনতি হতে পারে, এ নিয়ে স্থায়ীভাবে সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য জানানো সম্ভব হচ্ছে না। খাদিজার ওপর হামলাকারী বদরুলের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালানোর জন্য সিলেটে রয়েছেন তাঁর বাবা মাশুক মিয়া। বর্তমানে খাদিজাকে দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা।

গত ৩ অক্টোবর সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের (ডিগ্রি) ছাত্রী খাদিজা পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে শাবি শিক্ষার্থী বদরুল আলমের হামলার শিকার হন। মাথায় গুরুতর আঘাত নিয়ে প্রথমে খাদিজাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের পর অচেতন অবস্থাতেই খাদিজাকে ওই দিন রাতে স্বজনরা ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সংকটজনক অবস্থাতেই খাদিজার মাথায় অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের ৯৬ ঘণ্টা পর চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, ‘খাদিজার আর জীবন-সংশয় নেই।’ সে কথা সত্য হতে চলল। আর কিছুদিন পর তিনি ফিরবেন স্বাভাবিক জীবনে। সেই মহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষা করছে সবাই।

এ ঘটনার পর ক্ষোভে ফেটে পড়ে সারা সিলেট। বিক্ষোভে উত্তাল জনতা প্রতিবাদ করতে থাকে সারা দেশে। ঘাতক বদরুলের বিচার চেয়ে রাস্তায় নেমে আসে ছাত্র-জনতা। সবারই প্রত্যাশা ছিল, খাদিজা সুস্থ হয়ে ফিরবে প্রিয়জনদের মাঝে। প্রিয় ক্যাম্পাসের বান্ধবীদের সঙ্গে মিলবে তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে। গ্রামের চিরচেনা মেঠোপথে আবারও ফিরবে খাদিজা। শারীরিক অবস্থার যেভাবে উন্নতি হচ্ছে, তাতে খাদিজার মৃত্যুঞ্জয়ী হয়ে ফিরে আসাটা এখন সময়ের ব্যাপার। সমাজের কাছে বিবেকের দায়বদ্ধতা বাড়িয়ে দিতে খাদিজার এই বেঁচে থাকা হবে প্রেরণার। বদরুলের মতো ঘাতকের মুখে চুনকালি দিতে খাদিজার ফিরে আসাটা আজ খুব বেশি প্রয়োজন ছিল।

বদরুলের বিচারিক প্রক্রিয়াও শুরু হলো। এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে সংগঠিত নৃশংসতার শিকার খাদিজা আক্তার নার্গিসের দোষীর শাস্তির গণদাবি আজ আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে; যেভাবে আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে খাদিজার জীবন। স্কয়ারের সংকটকাল এখন আর নেই। আশা করা যায়, খাদিজা একদিন তাঁর কলেজের ফিরবেন। বন্ধুদের সঙ্গে মিলবেন। চাইলে হয়তো দেখে নেবেন তাঁর আক্রান্ত হওয়ার সেই স্থান!

লেখক : শিক্ষার্থী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

খেলার জগতের সামাজিক দায়বদ্ধতা ও পেশাদারি কাঠামো

লাল-সবুজের তরুণ প্রজন্মের এ সময়ের প্রিয় শ্লোগান, ‘বাংলাদেশের জান, সাকিববিস্তারিত পড়ুন

আগস্টের শোককে শক্তি হিসেবে নিতে পারি আমরা তরুণেরা

“যতদিন রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান, ততদিন রবে কীর্তিবিস্তারিত পড়ুন

বাবা যখন ধর্ষক

যেখানে আপন বাবাই ধর্ষণ করে, সেখানে সৎ বাবার ধর্ষণ আমাদেরবিস্তারিত পড়ুন

  • দুই বড় দেশ যখন প্রতিবেশী ও প্রতিযোগী
  • মৌসুমি নৌকা শোরুম
  • ভারতবিদ্বেষ কেন বেড়ে চলেছে?
  • জনগণের কাছে শেখ হাসিনাই জয়ী
  • ‘গুলিস্তান’ নেই, তবু আছে ৬৪ বছর ধরে
  • পদ্মা ব্রিজ দিয়ে কী হবে?
  • যুদ্ধাহতের ভাষ্য: ৭০– “এখন অমুক্তিযোদ্ধারাই শনাক্ত করছে মুক্তিযোদ্ধাদের”
  • আসুন, বড় হই
  • আসুন, পিঠের চামড়া না তুলে পিঠ চাপড়ে দিতে শিখি
  • বাড়িওয়ালা মওদুদ ও বাড়িছাড়া মওদুদ
  • ব্রিটেনের নতুন সরকার নিয়ে যে শঙ্কা!
  • আওয়ামী লীগ ছাড়া কি আসলে কোনো বিকল্প আছে?