শুক্রবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

গৌরনদীতে মুক্তিযোদ্ধা হতে রাজাকার কমান্ডারের আবেদন!

আরিফিন রিয়াদ: বরিশালের গৌরনদী উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের আদম আলী মাষ্টারকে রাজাকার কমান্ডার দাবি করে তার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকাভুক্ত না করার জন্য মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ-এমপির কাছে দাবি জানিয়েছেন এলাকার মুক্তিযোদ্ধারা।
অপরদিকে তার যুদ্ধাপরাধ কর্মকান্ডের বিচারের দাবিতে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল আদালতে লিখিত অভিযোগ করেছেন গৌরনদী উপজেলার শরিকল এলাকার মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক ও উপজেলা আ. লীগের সাবেক সভাপতি আলাউদ্দিন আহম্মেদের ছেলে নাজিম উদ্দিন টিপু।জানাগেছে, স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে তাদের বসত ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল রাজাকার কমান্ডার আদম আলী মাষ্টার। তাই তার নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকা অন্তর্ভুক্ত না করার দাবি জানিয়ে সম্প্রতি উপজেলা চত্বরে একটি ব্যানারও ঝুঁলিয়ে দিয়েছেন টিপু।

এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও এলাকাবাসীর মাঝে আলোচনার ঝড় বইছে। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে তার বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটানো হচ্ছে বলে দাবি আদম আলী মাষ্টারের।

স্থানীয় কয়েক জন মুক্তিযোদ্ধা জানান, গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে গৌরনদীতে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রাজাকার কমান্ডার আদম আলী মাষ্টার মুক্তিযোদ্ধা তালিকাভুক্ত হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। তার আবেদন নং-৫২৯ ও ডিজিআই নং-২০৫২৮০।১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে রাজাকার কমান্ডার আদম আলী মাষ্টার মাহিলাড়ার খাদেম মিলিটারী, বাটাজোরের তোতা মিয়াসহ তার কতিপয় দোষরদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, নারী ধর্ষণ, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে। ওই সময়ে ৭২ জন রাজাকার নিয়ে গঠিত রাজাকার বাহিনীর নেতৃত্বে ছিলেন আদম আলী মাষ্টার।তারা আরো জানান, তার সেকেন্ড ইনকমান্ড ছিলেন মাহিলাড়া গ্রামের খাদেম মিলিটারী। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে গণহত্যা, ধর্ষণ, লুটপাটসহ নানা দুষ্কর্মের অভিযোগে মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষুব্ধ হয়ে রাজাকার খাদেম মিলিটারীসহ তার পরিবারের ১৩ জন সদস্যকে একই সাথে হত্যা করে। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আদম আলীর বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় মামলা হয়।ওই সময় তিনি এলাকা ছেড়ে আত্মগোপন করলেও ১৯৭৫ সালে বঙ্গব্ন্ধু সপরিবারে নিহত হবার পর তিনি এলাকায় ফিরে আসেন। তবে আদম আলীর দুষ্কর্মের এলাকার লোকজনের জানা থাকলেও তার বিরুদ্ধে আজও মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না অনেকেই।নাম প্রকাশ না করার শর্তে চন্দ্রহার গ্রামের কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, ৭১ সালের ১৩ আশ্বিন চন্দ্রহার গ্রামের নেপাল হালদার, রাম সেনের ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা কন্যা সীমা রানী সেন, রুহিনী ঠাকুর, ব্রমা ঠাকুর, সুশীল চন্দ্র হালদার, হীরা লাল হালদারের ১০বছরের পুত্র কালাচান, রাধাকান্ত মাঝির ১৩ বছরের পুত্র কমল মাঝি ও ১১ বছরের পুত্র সুভাষ মাঝিসহ ওই গ্রামের ১১ জনকে গুলি করে হত্যা করে রাজাকার কমান্ডার আদম আলী ও তার দোষর পাকসেনারা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ধারালো অস্ত্রদিয়ে সীমা রানী সেনের পেট কেটে সন্তান বের করে এনে সেদিন উল্লাস করেছিল নরপশুরা।

ঘেয়াঘাট গ্রামের গনক বাড়ির কেষ্ট চক্রবর্তী’র স্ত্রী সবিতা রানী (৬৫) জানান, স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন ভাদ্র মাসের শেষের দিকে রাজাকার কমান্ডার আদম আলী ও তার সহযোগীরা আমাদের বাড়িতে হানা দিয়ে আমার স্বামী কেষ্ট চক্রবর্তী দেবর বলাই চক্রবর্তী, একই বাড়ির নারায়ন চক্রবর্তী, কালাচান চক্রবর্তী, মানিক চক্রবর্তীকে জবাই করে ও গুলি করে হত্যা করে।

বাটাজোরের সিংগা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বারেক ফকির, দেওপাড়া গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা বিমল চন্দ্র দাশ জানান, ৭১ সালের ১৫ মে পাকসেনাদের আসার খবর পেয়ে বাটাজোরের হরহর গ্রামের বাড়ৈ বাড়ির মরার ভিটায় (স্বাধীনতা পরবর্তি সময়ে নামকরণ করা হয়) প্রাণ বাচঁতে বিভিন্ন এলাকার শতশত হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ ও শিশুরা আশ্রয় নিয়েছিল।কিন্তু নরপশুদের কবল থেকে সেদিন তারা রেহাই পাননি। সকাল ১১ টার দিকে আদম আলী পাকসেনাদের নিয়ে ওই স্থানে হানা দেয়। পাকসেনাদের এলোপাথারী গুলিতে সেদিন ১৩৫ জন নিরাপরাধ মানুষ প্রাণ হারিয়ে ছিল। হরহর গ্রামের অশ্বিনী দাসসহ তার পরিবারের ৫ জন ওইদিন নিহত হন। ওইদিন গুলিবিদ্ধ হয়ে হরহর গ্রামের অবিনাশ নন্দি ও গীতারানী প্রাণে বেঁচে যায় ।ওই সময় অবিনাশের বয়স ছিল মাত্র ৩ বছর। সে ছিল তার মা নির্মলা রানীর কোলে, নির্মলা গুলিবিদ্ধ হয়ে ওইদিন মারা যান। পরবর্তিতে এলাকাবাসী লাশ গুলো সৎকার করতে না পেরে গণকবর দেয়।রাজাকার কমান্ডার আদম আলী মাষ্টারের ব্যাপারে গৌরনদী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার সৈয়দ মনিরুল ইসলাম বুলেট সেন্টু বলেন, আদম আলী মাষ্টারের নাম মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা। অনেকের ন্যায় ভূয়া সনদ কিনে মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার জন্য তিনি আবেদন করতে পারেন। কিন্তু আমাদের শরীরে একবিন্দু রক্ত থাকতে আমরা কুখ্যাত রাজাকার, খুনি, লুটেরাকে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে দেবনা। বাটাজোর এলাকায় পাকসেনারা বহু লোককে গুলি করে হত্যা করেছে, অনেক বাড়িঘর লুট ও অগ্নিসংযোগ হয়েছে। অনেক মা বোনের ইজ্জত হরন হয়েছে। এ কথা এলাকার কে না জানে?উল্লেখিত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে আদম আলী মাষ্টার মুঠোফোনে বলেন, রাজাকারের খাতায় নাম দিয়ে আমি ১২দিন তাদের সাথে ছিলাম। এরপর ৩৬ জন রাজাকারকে নিয়ে আমি নিজাম বাহিনীর সাথে মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করি। তাই আমি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা।তিনি দাবি করেন, আমার কাছে ওসমানী ও মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নিজামের পৃথক ২টি সনদ আছে। আমি যাতে মুক্তিযোদ্ধা না হতে পারি এ জন্য আমার প্রতিপক্ষরা আমার বিরুদ্ধে নানা কুৎসা রটাচ্ছে বলে আদম আলী জানান।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

বরিশালে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার

বরিশাল নগরীর সাগরদী এলাকা থেকে দুই মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূরবিস্তারিত পড়ুন

বরিশাল মহানগর বিএনপি অফিসে তালা লাগিয়েছে বিদ্রোহীরা

বরিশাল মহানগর যুবদলের কমিটিতে স্থান না পাওয়াই বিএনপি অফিসে তালাবিস্তারিত পড়ুন

  • ইয়াবাসহ উপজেলা প্রকৌশলী আটক
  • বাল্য বিয়েতে রাজি না হওয়ায় স্কুলছাত্রীসহ মা ও বোনকে পিটিয়ে আহত, পাত্র আটক
  • বরিশালে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক
  • বরিশালে নবদম্পত্তি স্বামী – স্ত্রীর লাশ উদ্ধার !!
  • বরিশালে আবাসিক হোটেল থেকে যৌনকর্মীসহ আটক ৫
  • বরিশালে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা, বখাটে গ্রেফতার
  • চাঁদা দাবি মামলায় ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সভাপতিসহ গ্রেফতার ৪
  • বরিশালে নানা আয়োজনে পালিত হচ্ছে জাতির পিতার জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস।।
  • বাসায় কাজে গিয়ে ধর্ষণের শিকার শিশু, হাসপাতালে মৃত্যু
  • বরিশালে স্বামীর সহায়তায় স্ত্রীকে গণধর্ষণ
  • বরিশালে মন্ত্রীর সঙ্গে সেলফি তুলে পুলিশ সদস্য সাসপেন্ড