মানবতা আর দায়িত্ববোধে উজ্জিবীত এক রিয়েল হিরোর গল্প ! যে গল্প শুনে শরীর শিউরে উঠেছিল অনেকের
মানুষকে ভালোবেসে সেবা দেওয়ার মধ্যে যে আনন্দ রয়েছে, তা বোধ করি প্রত্যেক মানুষ স্বীকার করবেন। আর ঠিক তেমনি সেবা দিতে গিয়ে মানবিকতার উদাহরণযোগ্য উৎকর্ষতা দেখানো পুলিশ কনস্টেবল পারভেজ মিয়াদের কথা বিবেকবানমাত্রই প্রাত্যহিক আলোচনায় রাখবেন।
গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারিত হয়েছে পারভেজ মিয়ার বীরত্বের কথা। সোশ্যাল মিডিয়ায় তা এখন রীতিমতো ভাইরাল। শুক্রবার বেলা ১১টা। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দির গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দায়িত্ব পালন করছিলেন হাইওয়ে পুলিশের কনস্টেবল পারভেজ মিয়া। এ সময় ঢাকা থেকে চাঁদপুরের মতলবগামী মতলব এক্সপ্রেস পরিবহনের একটি বাস অর্ধশত যাত্রী নিয়ে ওই বাসস্ট্যান্ড এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে ময়লা পানির খাদে পড়ে যায়। এ দুর্ঘটনা যখন আশপাশের সবাই দাঁড়িয়ে দেখছিলেন, তখন সেই দুর্গন্ধযুক্ত ডোবার ময়লা পানিতে লাফ দেন পারভেজ মিয়া। উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শুরু করেন উদ্ধার তৎপরতা। প্রথমেই তিনি ডুবন্তপ্রায় বাসটির জানালার সব কাচ ভেঙে দেন, যেন যাত্রীরা সহজে বেরিয়ে আসতে পারে। এরপর নিজেই ডুবন্ত বাসটির ভেতরে ঢুকে উদ্ধার করে আনেন সাত মাস বয়সী একটি শিশুকে। এর পর একে একে বের করে আনেন পাঁচ নারীসহ ১৫ যাত্রীকে। পরে উদ্ধার তৎপরতায় যোগ দেন স্থানীয় জনতা ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। পারভেজ মিয়ার বুদ্ধিমত্তায় বেঁচে যায় অর্ধশত মানুষের অমূল্য প্রাণ।
অন্যের জীবনের জন্য যে ঝুঁকিটা পারভেজ নিয়েছিলেন, যে সাহস ও বীরত্ব তিনি দেখিয়েছিলেন তাতে তাঁর জীবন বরবাদ হতে পারত। বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর যে সদিচ্ছা ও টান সব মানুষের হয়তো তা থাকে না। কিন্তু পারভেজের মতো মানুষদের আছে বলেই এখনো সভ্যতা টিকে আছে। অন্তরে অহংকার অনুভব করবার অনুভূতিটাও সগর্বে বেঁচে আছে।
মানুষের বিপদ দেখে পারভেজ কারো নির্দেশনা বা সাহায্য-সহযোগিতার অপেক্ষা করেননি। তাঁর আশপাশে আরো অনেক মানুষ জমে গিয়েছিল। কারোরই ডোবায় নেমে বাসের গ্লাস ভেঙে বিপন্ন মানুষকে উদ্ধার করবার কথা মাথায় আসেনি। তাৎক্ষণিক ভাবতে পেরেছিলেন কেবল পারভেজ। আর তাই তিনিই হলেন মানবিকতার আইকন।
জীবনে হয়তো আরো অনেক দায়িত্বের বোঝা কাঁধে চাপবে পারভেজের। কিন্তু এই যে দুর্বিপাকে পড়া মানুষকে মৃত্যুগহ্বর থেকে টেনে তুললেন তিনি, এর কাছে আর সব নিশ্চয় তুচ্ছ থাকবে। একজীবনে কজন পারেন, বিপদে মাথা ঠিক রেখে অন্ধকারে তলিয়ে যাওয়া প্রাণকে আলোর মুখ দেখাতে?
আমরা এর আগেও দেখেছি, কক্সবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় পড়া বাস থেকে শিশুকে উদ্ধার করে কান্নায় ভেঙে পড়া কনস্টেবল শের আলীর মুখ। আজকের দিনে মানুষ বিপদে পড়লে সবাই যখন সেলফি প্র্যাকটিসে ব্যস্ত হয়ে পড়ে, তখন জীবন বিপন্ন করে হলেও শের আলীরাই এগিয়ে যান। গণমাধ্যম থেকে কক্সবাজার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রুহুল কুদ্দুসের কথা জেনেছি।
আমরা চাই শত প্রতিকূলতা, নেতিবাচকতা ও বদনামকে দূরে ঠেলে পারভেজ বা শের আলীদের আলোয় উদ্ভাসিত হয়ে উঠুক মানবিকতা। সবার অপার ভালোবাসাকে সারথি করে মানুষের কল্যাণে ধ্যান ও জ্ঞানে রিয়েল হিরো হয়ে উঠুক আরো অনেক পারভেজ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
কঠিন রোগে ভুগছেন হিনা খান, চাইলেন ভক্তদের সাহায্য
ভারতীয় টেলিভিশন অভিনেত্রীদের মধ্যে হিনা খানের সাজপোশাক নিয়ে চর্চা লেগেইবিস্তারিত পড়ুন
কান্না জড়িত কন্ঠে কুড়িগ্রামে পুলিশের ট্রেইনি কনস্টেবল
আমার বাবা ভিক্ষা করতো, মা রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো। সংসারে খুববিস্তারিত পড়ুন
অজানা গল্পঃ গহীন অরণ্যে এক সংগ্রামী নারী
গাজীপুরের শ্রীপুরের মাওনা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের একটি গ্রাম ফুলানিরসিট। সেবিস্তারিত পড়ুন