মোবাইল অ্যাপে জনমত জানতে চাইলেন মোদি
ভারতে পাঁচশো ও হাজার রুপির নোট নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশের সাধারণ মানুষ কী ভাবছেন, সেটা জানতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবার তাঁর মোবাইল অ্যাপে তাদের মতামত জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
কংগ্রেস-সহ দেশের বিরোধী দলগুলো অবশ্য বলছে দেশের মানুষ যখন ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে গিয়ে মারা যাচ্ছেন – তখন এই ধরনের জনমত যাচাই প্রহসন ছাড়া কিছুই নয়, কারণ দেশের খুব কম লোকেরই অ্যাপ বা ইন্টারনেটে অ্যাক্সেস আছে।
প্রধানমন্ত্রীকে সংসদে এসে কালো টাকা নিয়ে বিতর্কে অংশ নিতে হবে, এই দাবিতে তারা অনড় – পাশাপাশি তারা দেশ জুড়ে বিক্ষোভ সমাবেশ বা বনধ ডাকারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ভারতে রাতারাতি বড় অঙ্কের নোট নিষিদ্ধ করার ঠিক দুসপ্তাহের মাথায় এসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবার টুইট করে জানালেন, তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সরাসরি মানুষের রায় জানতে চান – আর তাই নিজের অ্যাপে তিনি একটি জরিপ শুরু করেছেন।
নরেন্দ্র মোদি অ্যাপ লঞ্চ করা হয়েছিল গত বছর, সেখানেই এই জরিপে মোট দশটি প্রশ্ন রাখা হয়েছে।
যেমন, দেশে কালো টাকা আছে কি না, কালো টাকার বিরুদ্ধে সরকারের লড়াই নিয়ে আপনার রায় কী, পাঁচশো ও হাজারের নোট বাতিল করা কতটা ভাল সিদ্ধান্ত ইত্যাদি ইত্যাদি।
এমন কী এর ফলে জমিবাড়ির দাম কমবে কি না কিংবা কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের স্বার্থে মানুষ সাময়িক অসুবিধা সইতে প্রস্তুত কি না সেটাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
আজ বিজেপি সংসদীয় দলের বৈঠকেও প্রধানমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তকে দল সর্বাত্মক সমর্থন জানিয়েছে।
ওই বৈঠকের পর সিনিয়র ক্যাবিনেট মন্ত্রী অনন্ত কুমার জানান, “৮ নভেম্বর যে ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদি কালো টাকা, ভেজাল টাকা ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়ার অঙ্গীকার করেছেন, আজকের বৈঠকে বিজেপি তাতে পুরোপুরি তাঁর পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
কিন্তু বিরোধী দলগুলো মনে করছে টাকা জোগাড় করার চেষ্টায় আমজনতা যখন চূড়ান্ত নাকাল হচ্ছেন, তখন তাদের অ্যাপে সার্ভে করতে বলা নির্মম পরিহাস ছাড়া কিছু নয়।
বিরোধী কংগ্রেসের মুখপাত্র ও এমপি সুস্মিতা দেব যেমন বিবিসিকে বলছিলেন, নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে বেশি একজন শো-ম্যান আমি বলব। ভারতে কতজন মানুষ ইন্টারনেট বা মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করেন সে খবর কি উনি রাখেন না? উনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী না সুইডেনের, সেটাই তো আমার বোধগম্য নয়!
নতুন টাকা তোলার ভোগান্তিতে বা টাকা জোগাড় করতে না-পারার ধকলে এযাবত দেশে অন্তত দেড়শো মানুষ মারা গেছেন বলে দাবি করে তিনি আরও বলেন, “প্রধানমন্ত্রী কি মনে করছেন এই দেড়শো মানুষের পরিবার অ্যাপের মাধ্যমে তাদের রায় জানাবেন?”
প্রতিবাদে অনড় বিরোধী দলগুলো আজও পার্লামেন্ট চলতে দেয়নি – এবং নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে তারা আগামী দিনেও ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচীর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
তৃণমূল এমপি সুখেন্দুশেখর রায় যেমন জানাচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে পার্লামেন্টে এসে ব্যাখ্যা না-দেওয়া পর্যন্ত তারা সভা চলতেই দেবেন না।
তিনি বলছিলেন, “প্রধানমন্ত্রী দেশের নানা জায়গায় গিয়ে এই ইস্যুতে বক্তৃতা দিয়ে বেড়াবেন – কিন্তু পার্লামেন্টে এসে বিরোধীদের মুখোমুখি হওয়ার সাহস দেখাতে পারবেন না এটা তো আমরা মানতে পারব না। আমরা মনে করি তিনি এর মাধ্যমে সংসদীয় গণতন্ত্রের অবমাননা করছেন।”
এই ইস্যুতে মোদি সরকারকে চাপে ফেলতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জিও আজ সন্ধ্যায় দিল্লিতে আসছেন – কাল রাজধানীতে তিনি প্রতিবাদ সমাবেশও করবেন।
ডিসেম্বরের গোড়ায় বিরোধীরা সারা দেশে ভারত বনধ ডাকার কথাও ভাবছেন – যা থেকে স্পষ্ট এই ইস্যুতে তারাও সরকারকে এতটুকু জমি ছাড়তে রাজি নন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরলেন ১৭৩ বাংলাদেশি
মিয়ানমারের কারাগারে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ শেষে ১৭৩ বাংলাদেশি দেশেবিস্তারিত পড়ুন
বাংলাদেশ-কাতারের মধ্যে ১০ চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই
দ্বৈতকর পরিহারসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে পাঁচটি চুক্তি এবং পাঁচটিবিস্তারিত পড়ুন
একলাফে সোনার দাম ভরিতে কমলো ৩১৩৮ টাকা
দেশের বাজারে এক লাফে ৩১৩৮ টাকা কমিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনবিস্তারিত পড়ুন