শনিবার, এপ্রিল ২০, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

সাদ্দামের ২৭ লিটার রক্তে লেখা কোরআন শরীফ নিয়ে মহাবিপদে পড়েছে ইরাক

ইরাকের বর্তমান শাসকগোষ্ঠী সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে দেশটির জনগণের মধ্যে যেন কোনো ভালোবাসা ও আবেগ তৈরি না হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেনের জন্য। কিন্তু সাদ্দাম নিজের দেহের ২৭ লিটার রক্ত দিয়ে সমগ্র পবিত্র কোরআন শরীফ লিখে এক অনন্য কীর্তির জন্ম দিয়ে গেছেন, যা ধ্বংস করা নিয়ে মহাবিপদে পড়েছে সরকার।

সাদ্দাম হোসেন তার শাসনামলে ১৯৯০ দশকের শেষের দুই বছর কোরআন লেখার জন্য নিয়মিত রক্ত দান করেন। তার শরীর থেকে একজন নার্স নিয়মিত রক্ত নিতেন। আর একজন ক্যালিগ্রাফি শিল্পী সেই রক্ত দিয়ে পবিত্র কোরআনের আয়াত লিখতেন।

২০০৩ সালে ইরাকে আগ্রাসন চালায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এতে পতন হয় সাদ্দামের। পরে তাকে ফাঁসিতে ঝুলানো হয়।

এরপর প্রায় পাঁচ বছর পর্যন্ত সাদ্দামের রক্তে লেখা কোরআনের কথা গোপন ছিল। কিন্তু, প্রায় আট বছর আগে তিনটি পাল্লা দিয়ে সুরক্ষিত কোরআনটির কথা জানাজানি হয়ে যায়। এরপর থেকে এ পর্যন্ত ইরাকের আগ্রাসন পরবর্তী কর্তৃপক্ষ দ্বিধাগ্রস্ত রয়েছে যে, তারা কি কোরআনটি ধ্বংস করে ফেলবে না সংরক্ষণ করবে।

সাদ্দামের ২৭ লিটার রক্তে লেখা কোরআন শরীফ নিয়ে মহাবিপদে পড়েছে ইরাকবর্তমানে ইরাকের রাজধানী বাগদাদের পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত সবচেয়ে বড় মসজিদটির সংগ্রহশালায় সাদ্দামের রক্তে লেখা কোরআনটি রাখা হয়েছে। গত তিন বছর ধরে এই কোরআনটি জনসাধারণের দৃষ্টির আড়ালে রাখতে তালাবদ্ধ রয়েছে।

নিষিদ্ধ সংগ্রহশালাটিতে প্রবেশ করতে হলে একটি প্যাঁচানো পথ অনুসরণ করতে হয়। এর পাশেই একটি সরকারি অফিস ছিল, যার মাধ্যমে এখানে প্রবেশ আটকানো হয়।

ইরাকের আগ্রাসন পরবর্তী শিয়া শাসকরা খুবই সতর্ক, যাতে এমন কোনো প্রতীক ফের জনপ্রিয় হয়ে না ওঠে যা বাথ পার্টিপন্থী জনগণকে সাহসী না করে তোলে।

এ কারণে সরকারি শাস্তির ভয়ে ইরাকেরা সুন্নিরা সাদ্দামের রক্তে লেখা কোরআনের ভল্টটির দরজা খুলতে ভয় পেয়ে আসছে। এছাড়া তারা মনে করে, যদি পবিত্র কোরআনের এ কপিটির সঙ্গে যথাযথ সম্মানজনক আচরণ না করে, তারা ভয়ংকর গজবের শিকার হতে পারে।

সাদ্দামের পর থেকে ইরাক শাসন করছে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিতরা। এ পর্যন্ত চারটি সরকার ক্ষমতার মসনদে বসেছে। তারা সব সময় চেষ্টা করে যাচ্ছে মার্কিনদের স্বার্থ উদ্ধারে।

ইরাকের সুন্নি অনুদান তহবিলের প্রধান শেখ আহমেদ আল সামারাই বাগদাদের সাদ্দাম নির্মিত ওই মসজিদটির মিনারের পাশে দাঁড়িয়ে বলেন, এখান যা আছে তা অমূল্য, নিশ্চিতভাবেই এটি লাখ লাখ ডলার মূল্যবান এক সম্পদ।

তবে শেখ সামারাই মনে করেন, সাদ্দাম রক্ত দিয়ে কোরআন লিখিয়ে ভুল করেছিলেন। কারণ এমনটি করা হারাম।

এমন মনোভাব সত্ত্বেও ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনকালীন হাঙ্গামার মাঝে পর থেকে রক্তে লেখা কোরআনের পাতাগুলো রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা করে আসছেন সামারাই। তিনি প্রথমে পাতাগুলো নিজের বাসায় লুকিয়ে রাখেন। পরে নিরাপত্তার কারণে তার আত্মীয়-স্বজনদের বাসায়ও এগুলো লুকিয়ে রাখেন।

তিনি বলেন, আমি জানতাম যে, এগুলো সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য আমাকে জবাবদিহি করতে হবে, তারপরেও আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু, বর্তমানে এগুলোকে হেফাজত করা সহজ হচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, ভল্টটিতে ঢোকার তিনটি চাবি রয়েছে। তবে কোনোটিই এক জায়গায় নেই। আমার কাছে একটি, এখানকার পুলিশ প্রধানের কাছে একটি এবং আরেকটি বাগদাদের পূর্বাঞ্চলে রাখা আছে।

ভল্টটিতে কাউকে ঢোকার অনুমতি দেয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য একটি কমিটি আছে বলেও জানান শেখ সামারাই।

সাদ্দামের রক্ত দিয়ে কোরআন লেখার কাজটি করেছিলেন ক্যালিগ্রাফার আব্বাস শাকির জুদি আল বাগদাদি।

সাদ্দাম নিজে তাকে ফোন করে ডেকে নিয়ে কোরআন লেখার কাজটি দেন। পরে দু’বছর ধরে আল বাগদাদি সাদ্দামের পাশে বসে কোরআন লেখেন।

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া স্টেটের বাসিন্দা আল বাগদাদি। টেলিফোনে তার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি এখন আর এ বিষয়ে কথা বলতে চাই না। এটি আমার জীবনের বেদনায়দায়ক অংশ, যা আমি ভুলে যেতে চাই।

আগে সাদ্দামের স্মারকগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া খুব সহজ ছিল। যেমন আগ্রাসনকালে ২০০৩ সালের এপ্রিলে মার্কিন নৌসেনারা সাদ্দামের মূর্তি অপসারণ করেছিল।পরবর্তীতে সারা দেশেই বাথ পার্টির নেতাদের মূর্তি ভাঙা হয়।

ওই সময় সাদ্দাম ও তার দলের নেতাদের স্মারকগুলো অপসারণ করা সহজ ছিল। কিন্তু, বর্তমানে সাদ্দামের স্মৃতিগুলো সরিয়ে ফেলাটা অনেকটাই জটিল হয়ে গেছে। কারণ এসবের অনেক কিছুই ইরাকের পরিচিতিমূলক নির্দশন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। যেমন: বাগদাদের কেন্দ্রস্থলে সামরিক প্যারেড ময়দানে অবস্থিত আড়াআড়িভাবে রাখা দুটি তলোয়ার, যা ইস্তাম্বুলের হাজিয়া সোফিয়া মসজিদ বা দামেশকের পুরাতন শহরগুলোর মতোই পরিচিতিমূলক।

আহমেদ চালাবিসহ ইরাকের অনেক বিখ্যাত রাজনীতিকই সাদ্দামের সংশ্লিষ্ট যে কোনো কিছুই নির্মূলের ব্যাপারে অনড়।

ইরাককে বাথ পার্টিমুক্ত করার জন্য গঠিত জাতীয় কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন চালাবি। তার মতে, সাদ্দামের যে কোনো নির্দশনই ইরাকের জনগণের মানসিকতার জন্য ধ্বংসাত্মক। কারণ এসব সাদ্দামের সমগ্রতাবাদী শাসনের কথা মনে করিয়ে দেয় এবং এমন এক ব্যক্তির কথা মনে করিয়ে দেয়, যিনি শয়তানের প্রতিমূর্তি।

তবে এর সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করে সাদ্দামকে অপসারণে প্রধান ভূমিকা পালনকারী এবং তার বিচারের মাধ্যমে ফাঁসি কার্যকরকারী মোয়াফ্ফাক আর রুবাই।

ইরাকের এই সাবেক নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, সাদ্দাম ইরাককে শাসন করেছেন। তিনি আমাদের ইতিহাসের অংশ। তিনি আমাদের ইতিহাসের একটি বাজে অংশ হলেও আমরা পছন্দ করি বা না করি তিনি অনেক বৈচিত্রও সৃষ্টি করেছিলেন। ওই জমানার নজিরগুলো ধ্বংস করা আমাদের উচিত নয়। ভালো-মন্দ যাই থাকুক তা রেখে দেয়া উচিত যেন আমরা এর থেকে শিক্ষা নিতে পারি।

২০০৫ সালে ইরাক সরকার একটি কমিটি গঠন করেছিল, যার কাজ ছিল সাদ্দামের সংশ্লিষ্ট প্রতীকগুলো অপসারণের কাজ দেখভাল করা।

অবশ্য ইরাকের প্রধানমন্ত্রী নূর আল মালিকির মুখপাত্র আলি আল মুসাভির কথায় স্পষ্ট যে, সাদ্দামের সব কিছু অপসারণের ব্যাপারে সরকারের দোলাচলের বিষয়টি।

যেখান থেকে সাদ্দামের আড়াআড়ি তরবারি দেখা যায়, এমন একটি জায়গায় অবস্থিত অফিসে বসে মুসাভি বলেন, সাদ্দাম জমানায় নির্মিত সবকিছু অপসারণ করা আমাদের জন্য উচিত হবে না।

তিনি বলেন, রাস্তায় সাদ্দাম মূর্তিগুলো রাখার মোটেই সুযোগ নেই। কিন্তু, সাদ্দামের রক্তে লেখা কোরআন আমাদের সংরক্ষণ করা উচিত। কারণ এটি সাদ্দামের বর্ববরতার নিদর্শন, তার এমনটি করা মোটেই উচিত হয়নি।

তবে মুসাভির মতে, সাদ্দামের রক্তে লেখা কোরআনটি ইরাকের কোনো সরকারি জাদুঘরে রাখা উচিত হবে না। কারণ কোনো ইরাকি দেখতে চাইবেন না।সম্ভবত এই কোরআনটি কোনো ব্যক্তিগত জাদুঘরে পাঠানো হবে, যেমনটি ঘটেছে হিটলার এবং স্টালিনের জমানার ক্ষেত্রে।

বর্তমানে ইরাকে জাতীয় পর্যায়ে সাদ্দাম হোসেন এবং তার ৩০ বছরের শাসনামলের স্মারকগুলো সংরক্ষণের বিষয়ে তুমুল বিতর্ক হচ্ছে।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে কেনিয়ার সামরিক বাহিনীর প্রধানসহ নিহত ১০

কেনিয়ায় হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল ফ্রান্সিস ওমন্ডিবিস্তারিত পড়ুন

ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দিলো যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য

ইসরায়েলে হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের ড্রোন কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রবিস্তারিত পড়ুন

গবেষণায় বাংলাদেশে বিক্রি হওয়া শিশুখাদ্য সেরেলাক নিয়ে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য

সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান নেসলের শিশুখাদ্য সেরেলাকে বাড়তি চিনি পাওয়া গেছে বলেবিস্তারিত পড়ুন

  • স্বর্ণের দাম সব রেকর্ড ভাঙল
  • গাজায় শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি হামলা, ৪ শিশুসহ নিহত ১৪
  • ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে বিশ্ববাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা ফিলিস্তিনিদের
  • চার দিনেরে সফরে ঢাকায় ভুটানের রাজা
  • ভোরে গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ২০
  • কঠিন রোগে ভুগছেন হিনা খান, চাইলেন ভক্তদের সাহায্য
  • আফগানিস্তানে তীব্র তুষারপাত ও বৃষ্টিতে ৬০ জনের মৃত্যু
  • গুরুতর আহত মমতা, হাসপাতালে ভর্তি
  • কে কোন ক্যাটাগরিতে জিতলেন অস্কার?
  • মিস ওয়ার্ল্ড-২০২৪ জিতলেন ক্রিস্টিনা পিসকোভা
  • আর অভিনয় করতে পারবেন না সামান্থা!
  • রেকর্ড গড়ে আবারও পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জারদারি