সৎমেয়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের বিষয়ে আরমানের স্বীকারোক্তি শুনে বিস্মিত সবাই
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সৎ মেয়েকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন আরমান হোসেন সুমন। তবে এই নিয়ে তার কোনো অনুশোচনা নেই, উল্টো সৎ মেয়েকে আরমান বিয়ের দাবিও করেছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা ঢাকার কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি)অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (সাইবার ক্রাইম) নাজমুল ইসলাম।
সিটিটিসির একজন কর্মকর্তা বলেন, জিজ্ঞাসবাদে সৎ মেয়ের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের বিষয়ে আরমানের স্বীকারোক্তি শুনে বিস্মিত হয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এজন্য বিন্দুমাত্র অনুশোচনাও দেখা যায়নি আরমানের মধ্যে।
উপপুলিশ কমিশনার নাজমুল ইসলাম বলেন, আরমানকে আদালতে সোপর্দ করে পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছিল। আদালত শুনানি শেষে দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আরমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে সৎ মেয়েকে ধর্ষণ, ধর্ষণের ভিডিও ধারণ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেয়েটির নামে ভুয়া আইডি খুলে হয়রানির কথা স্বীকার করেছে। আরও বিস্তারিত জানার জন্য তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আরমান তার সৎ মেয়েকে বিয়ে করারও দাবি করেছে। কিন্তু তাকে কোরআন শরীফের সূরা আন-নিসায় এ সংক্রান্ত বিধিনিষেধের কথা বলা হলে সে চুপ করে ছিল। আমরা তার বিয়ের বিষয়টিও যাচাই করে দেখছি।
বৃহ্স্পতিবার (১৩ জুলাই) সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইউনিট আরমানকে আদালতের মাধ্যমে দু’দিনের রিমান্ডে নিয়েছে। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) রাজধানীর রমনা থানায় ২০ বছর বয়সী ওই তরুণী তার সৎ বাবা আরমানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। বুধবার সন্ধ্যায় মগবাজার থেকে আরমানকে গ্রেফতার করে সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইউনিট।
এদিকে ৮ বছর যাবত সৎমেয়েকে ধর্ষণ করে আসছিলেন বাবা বেসরকারি টিভি চ্যানেল নিউজ ২৪-এর শব্দ প্রকৌশলী আরমান হোসেন ওরফে সুমন (৩৮)। গত মঙ্গলবার রাতে রমনা মডেল থানায় ২০ বছর বয়সী ওই মেয়েটি মামলা করার পর ধর্ষণের বিষয়টি সামনে উঠে আসে।
নির্যাতনের শিকার ওই তরুণী মামলার এজাহারে বলেন, ‘২০০৫ সালে তার মায়ের সঙ্গে আরমানের বিয়ে হয়। এর এক বছর পর থেকে তিনি মা ও সৎ বাবার সঙ্গে মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোডের একটি বাসায় থাকতে শুরু করেন।
২০০৮ সালে তার বয়স যখন ১২ বছর, সপ্তম শ্রেণিতে পড়েন তখন আরমান তাকে ধর্ষণ করে। কৌশলে মোবাইল ফোন দিয়ে কিছু ছবিও তোলে রাখে। ওই ঘটনার সময় তরুণীর মা কর্মস্থলে ছিলেন। পরে বিষয়টি কাউকে না জানানোর জন্য আরমান ভয়ভীতি দেখায়। আমি বয়সে ছোট থাকায় এবং আসামি আমার মায়ের স্বামী বিধায় ভয়ে বিষয়টি গোপন রাখি।
আম্মু অফিসে যাওয়ায় দিনের বেলায় আমি একাই বাসায় থাকি। সেই সুযোগে আসামি (আরমান) মোবাইল ফোনে ধারণ করা আমার নগ্ন ছবি প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ও নানা কৌশলে বহুবার ধর্ষণ করে। ধর্ষণের ভিডিও এবং ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করে।’
এজাহারে বলা হয়, মোহাম্মদপুর ছেড়ে পরে রমনা থানার দিলু রোড এলাকার দুটি বাসায় বাস করেন তারা। ২০১৫ সাল পর্যন্ত এই দুই বাসায়ও সৎ বাবা নিয়মিত তাকে ধর্ষণ করত। এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে একটি হাসপাতালে গিয়ে গর্ভপাত ঘটান ওই তরুণী।
নির্যাতিত এই তরুণী জানান, সর্বশেষ গত বছরের ২৬ নভেম্বর খিলগাঁও এলাকার ৫৩৯/সি নম্বর বাসার পঞ্চম তলায় থাকা অবস্থায়ও সৎ বাবা তাকে ধর্ষণ করে।
পরে সৎ বাবার কার্যকলাপে অতিষ্ঠ হয়ে গত বছরের ৫ ডিসেম্বর তিনি খিলগাঁওয়ের ওই বাসা ছেড়ে ইস্কাটনে খালার বাসায় গিয়ে ওঠেন। খালার বাসায় চলে আসার কারণে সৎ বাবা আরমান ক্ষিপ্ত হয়ে তার একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট থেকে তরুণীর এক বন্ধুর কাছে আপত্তিকর ভিডিও ও অডিও ক্লিপ পাঠায়।
এছাড়া, কল্লোল খান নামে একটি ভুয়া আইডি খুলে আরমান তার ওই বন্ধুর কাছে আপত্তিকর নানারকম বার্তা পাঠায়। এবিষয়ে তরুণী চলতি বছরের ২১ জুন রমনা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপরও ওই ফেসবুক আইডি দু’টি থেকে তরুণীর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হত। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, তরুণীর মা বিষয়টি জানলেও মেয়ের ওপর নির্যাতন বন্ধ করতে পারেননি।
ধর্ষক পিতা আরমান বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ টুয়েন্টিফোরের শব্দ প্রকৌশলী হিসেবে কর্মরত ছিল। মামলার পরপরই আরমানকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে জানান ওই প্রতিষ্ঠানের একজন কর্মকর্তা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
বেনজীরের বিরুদ্ধে দুদকে ব্যারিস্টার সুমনের অভিযোগ
পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ ও তার পরিবারের সদস্যদেরবিস্তারিত পড়ুন
টাকার বিনিময়ে স্ত্রীকে ধর্ষকদের হাতে তুলে দেন স্বামী, অতঃপর…
কুমিল্লায় ৫ হাজার টাকার বিনিময়ে স্ত্রীকে তিন ধর্ষকের হাতে তুলেবিস্তারিত পড়ুন
ইরানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দিলো যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য
ইসরায়েলে হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরানের ড্রোন কর্মসূচির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রবিস্তারিত পড়ুন