বুধবার, অক্টোবর ২৩, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

অনিশ্চিত এদের ভবিষ্যৎ

আইনি ফাঁক-ফোকর গলে দেশে দুর্নীতিগ্রস্ত ও বিতর্কিত স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠা এবং জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে যাওয়ায় নিরাপত্তাজনিত কারণে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার দায় কোনোভাবেই শিক্ষার্থীদের ঘাড়ে চাপতে পারে না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এমনটাই ঘটেছে। এবং তা-ও আবার শিক্ষাবর্ষের মাঝামাঝি সময়ে। অথচ এ ব্যাপারে সরকার যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তা ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের কোনোই কাজে আসবে না বলে মনে করেন তারা।

জঙ্গি তৎপরতা বেড়ে যাওয়াসহ নানা ইস্যুতে বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আকস্মিক বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কয়েক লাখ শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পাশাপাশি বিভিন্ন স্তরের মানুষের মধ্যেও চরম হতাশার সৃষ্টি হয়েছে।

মালিকানা সংকট, অনিয়ম-দুর্নীতি ও সনদ বাণিজ্যের অভিযোগে গত ২৫ জুলাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দারুল ইহসানের সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। সেই সঙ্গে দেশের সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আউটার ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে আদেশ জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর বিতর্কিত কার্যক্রমে লিপ্ত থাকার অভিযোগে ২ আগস্ট সাময়িক নিবন্ধন পাওয়া ঢাকার লালমাটিয়ায় অবস্থিত পিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের নিবন্ধন বাতিল করে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড। একই দিন দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা অনুমোদনহীন শতাধিক পিস স্কুল বন্ধ করার নির্দেশ জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

এছাড়া নিরাপত্তাজনিত কারণে ২৭ জুলাই হঠাৎ করেই ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশে তাদের সব অফিস বন্ধ করে দিয়েছে। এতে দেশের ইংলিশ মিডিয়ামের কয়েক লাখ ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেল শিক্ষার্থী বিপাকে পড়েছে। কারণ, ইংলিশ মিডিয়ামের ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেলের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার আয়োজন করে ব্রিটিশ কাউন্সিল। ফলে সময়মতো পরীক্ষা দেয়া সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। এছাড়াও নিরাপত্তার কারণে ব্রিটিশ কাউন্সিল বন্ধ করাকে নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন।

যদিও অনেকের দাবি, ব্রিটিশ কাউন্সিল তাদের বাংলাদেশের সব অফিস বন্ধ করে দিলেও ইংলিশ মিডিয়ামের ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেলের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে কোনো অসুবিধা হবে না। কার্ডিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অধ্যক্ষ এ এম এম খাইরুল বাশার বলেন, অনলাইনে প্রতিষ্ঠানটির অধিকাংশ কার্যক্রম অব্যাহত আছে। তাই এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।

তবে এ ধরনের যুক্তি মেনে নিতে নারাজ অনেকেই। তাদের ভাষ্য, অনলাইনে রেজিস্ট্রেশনসহ অন্যান্য কার্যক্রম সম্পন্ন করা সম্ভব হলেও সুষ্ঠুভাবে ‘ও’ লেভেল কিংবা ‘এ’ লেভেল পরীক্ষা দেয়া যাবে কিনা তা কেউ নিশ্চিত করছে না। এমনকি এ ব্যাপারে সরকারিভাবেও সুনির্দিষ্ট কোনো গাইডলাইন নেই। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা কিসের ওপর নির্ভর করে নিশ্চিন্তে পড়াশোনা করবে।

এদিকে গত ২৭ জুলাই আকস্মিকভাবে ব্রিটিশ কাউন্সিল বন্ধ করে দেয়ার পর থেকে প্রতিদিনই ‘ও’ এবং ‘এ’ লেভেলসহ বিভিন্ন কোর্সের অসংখ্য শিক্ষার্থী ও অভিভাবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সংলগ্ন ফুলার রোডস্থ কার্যালয়সহ বিভিন্ন শাখা অফিসের সামনে ভিড় জমাচ্ছেন। প্রতিষ্ঠানটি কবে খুলবে কিংবা বিকল্প কী ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে তা জানার চেষ্টা করছেন। তবে নিরাপত্তাকর্মীদের পাহারায় অফিসগুলোতে তালা বন্ধ থাকায় তাদের সব চেষ্টাই ব্যর্থ হচ্ছে।

অন্যদিকে ব্রিটিশ কাউন্সিলের অধিনে আইইএলটিএস, জিমেট, জিআরইসহ বিভিন্ন কোর্সের জন্য রেজিস্ট্রেশন করে বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী এখন পথে পথে ঘুরছেন। তাদের আশঙ্কা, যে উদ্দেশ্য নিয়ে তারা এসব কোর্সে ভর্তি হয়েছিলেন তা পুরোপুরি ব্যর্থ হবে।

এদিকে বিতর্কিত কর্মকান্ডেরর জন্য আকস্মিক পিস স্কুলের অনুমোদনহীন সব শাখা বন্ধ করে দেয়ায় দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা এর প্রায় একশ’ প্রতিষ্ঠানের নূ্যনতম ১০ হাজার শিক্ষার্থীর একটি বছর নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যদিও বেশকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের ‘পিস’ অংশটুকু পরিবর্তন করে ভিন্ন নামে স্কুল পরিচালনার চেষ্টা করছেন। তবে অভিভাবকদের আশঙ্কা, যে অভিযোগে এসব স্কুল বন্ধ করা হয়েছে- এ দুর্নাম সহজে ঘোচার সম্ভাবনা কম। তাই অধিকাংশ বাবা-মা তাদের সন্তানদের ভিন্ন স্কুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। অথচ বছরের মাঝামাঝি সময়ে নামিদামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দূরে থাক মধ্যমমানের কোনো স্কুলেও নতুন করে কাউকে ভর্তি করানো অসম্ভব। এ বাস্তবতায় বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীকে অন্তত এ বছর ঘরে বসেই কাটাতে হবে।

রাজধানীর বিভিন্ন পিস স্কুল ঘুরে দেখা গেছে, সেখানকার শিক্ষাকার্যক্রমই শুধু গুটিয়ে নেয়া হয়নি, অনেক স্কুলের সাইনবোর্ডও খুলে ফেলা হয়েছে। কোনো কোনো স্কুলে বাড়িভাড়ার নোটিশ ঝুলছে। বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী-অভিভাবক হতাশ হয়ে এসব প্রতিষ্ঠানের আশপাশ দিয়ে ঘুরছেন। সরকার সেখানকার শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেবে কিনা তা জানার চেষ্টা করছেন।

যদিও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ এ ব্যাপারে তার সুস্পষ্ট বক্তব্য বিভিন্ন মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। গত বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানের শুরুতে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বন্ধের নির্দেশ দেয়া পিস স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের দায়দায়িত্ব ওই সব স্কুল কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে।

এদিকে বন্ধ হয়ে যাওয়া দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবেন এবং তা আদায়ে সরকার থেকে শিক্ষার্থীদের সহায়তা করা হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ঘোষণা দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। গত ২৫ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে দারুল ইহসানের সব কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণার পর একজন শিক্ষার্থীও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টিকি ছুঁতে পারেনি। এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তা পাওয়ারও কোনো নজির নেই। অথচ মাঝপথে শিক্ষাসুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থী এখন পথে পথে ঘুরছে।

এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার বলেন, বিভিন্ন কারণে বন্ধ হওয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের জীবন ঝুঁকির মুখে থাকাটাই স্বাভাবিক। এজন্য সরকারের উচিত, শিক্ষার্থীদের ক্ষতিপূরণ হিসেবে বিকল্প ব্যবস্থা করা। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের ভিন্ন কোনো প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠগ্রহণের সুযোগ করে দেয়া। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আসন সংখ্যা বাড়ানো যেতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করার আগে এটাও চিন্তা করতে হবে- দেশে বর্তমানে তিন ধারার (বাংলা মাধ্যম, মাদ্রাসা শিক্ষা এবং ইংরেজি মাধ্যম) শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে, যা কোনোভাবেই ঠিক না। তিনি বলেন, ১৬ কোটি মানুষের একটি দেশে তিন ধারার শিক্ষা ব্যবস্থা পাকিস্তান আমলে শুরু হলেও বাংলাদেশ আমলে ব্যাপক বিস্তার ঘটেছে। এদের মধ্যে আবার বাংলা মাধ্যম ও মাদ্রাসায় শিক্ষায় একটু-আধটু মাতৃভাষার চর্চা করা হলেও ইংরেজি মাধ্যমে একেবারেই নেই। যেটা বিভাজন তৈরি করে দিচ্ছে।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

১ লাখ ৪০ হাজার ছাড়াল স্বর্ণের ভরি

দেশের বাজারে ফের স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্সবিস্তারিত পড়ুন

জাতিসংঘ: বাংলাদেশে চরম দারিদ্র্যে ৪ কোটি ১৭ লাখ মানুষ

জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে চরমবিস্তারিত পড়ুন

টাঙ্গাইলে বাসার সামনে থেকে পুলিশ সুপারের মোবাইল ফোন ছিনতাই

টাঙ্গাইলে বাসার সামনে থেকে ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টারের কমান্ড্যান্ট পুলিশ সুপারবিস্তারিত পড়ুন

  • আসিফ নজরুল: সাকিবের প্রতি মানুষের ক্ষোভ অযৌক্তিক নয়
  • খুলনায় মসজিদে দানের ছাগল নিয়ে সংঘর্ষ, মুসল্লির মৃত্যু
  • নওগাঁয় কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় সমন্বয়ক ও শিক্ষার্থী আহত, আটক ৩
  • প্রবারণা পূর্ণিমার বর্ণিল উৎসব বান্দরবানে
  • দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ চান তারেক
  • মতিয়া চৌধুরী মারা গেছেন
  • হাইকোর্টে ১২ বিচারপতিকে বেঞ্চ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আঁকা গ্রাফিতি হেঁটে দেখলেন ড. ইউনূস
  • মাধ্যমিকে ফের চালু হচ্ছে বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগ
  • তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনতে মির্জা ফখরুলের রিভিউ আবেদন
  • শিক্ষা ভবনের সামনে সড়কে শুয়ে শিক্ষকদের অবরোধ
  • ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ৩ জনের মৃত্যু