অর্থমন্ত্রীকে হত্যার ১২ কোটি টাকায় চুক্তি করেছেন!
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহিরকে হত্যার জন্য ১২ কোটি টাকায় চুক্তি করেছিলেন হবিগঞ্জ পৌরসভার বরখাস্তকৃত মেয়র ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জি কে গউছ। কারাগারে বসে এ চুক্তি করা হয়। সোমবার দুপুরে হবিগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহম্মদ খোন্দকারের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য জানায় দুটি হত্যা মামলায় জেলা কারাগারে আটক আসামি ইলিয়াছ মিয়া ওরফে ছোটন।
১৮ জুলাই ঈদের দিন সকালে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরয়িা হত্যা মামলায় কারাগারে আটক জি কে গউছের ওপর হামলার ঘটনায় রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আদালতে হাজির করা হলে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। জবানবন্দিতে সে জানায়, কারাগারে থাকা অবস্থায় জি কে গউছ তার সঙ্গে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে হত্যার জন্য ১০ কোটি এবং হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহিরকে হত্যার জন্য ২ কোটি টাকায় চুক্তি করেন। চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল তাকে ঈদের আগে জামিনে মুক্ত করে অগ্রিম হিসেবে ১০ লাখ টাকা দেয়া হবে। কিন্তু এর কিছুই করেননি জি কে গউছ।
এতে তার মনে সন্দেহ হয়, চুক্তির বিষয়টি ফাঁসের আশংকায় তাকে হত্যা করা হতে পারে। এ আশংকায় সে জি কে গউছের ওপর হামলা চালিয়েছিল। অপরদিকে অর্থমন্ত্রী ও স্থানীয় এমপিকে হত্যা ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো প্রতিবাদ সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে। আদালত সূত্রে জানা গেছে, কারাগারে জি কে গউছের ওপর হামলার ঘটনায় করা মামলায় ইলিয়াছকে রোববার তিন দিনের রিমান্ডে নেয় সদর মডেল থানা পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসি নাজিম উদ্দিন জানান, রোববার রাত ৮টা থেকে ৯টা এবং ১০টা থেকে ৩টা পর্যন্ত ইলিয়াছকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদকালে ইলিয়াছ হত্যা ষড়যন্ত্রের ঘটনা বর্ণনা করে। এ সময় সে ষড়যন্ত্রে জড়িত আরও কয়েকজনের নাম প্রকাশ করেছে। সোমবার সকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। দুপুর ১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করেন বিচারক। তবে জবানবন্দির লিখিত কাগজপত্র এখনও থানায় পাঠানো হয়নি। জবানবন্দির কপি পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এর আগে ২২ জুলাই ইলিয়াছ মিয়া ওরফে ছোটনের ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনৃুর রহমান ছিদ্দিকী। এদিকে কারাগারের ভেতরে হবিগঞ্জ পৌরসভার সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র জি কে গউছের ওপর হামলা এবং পরবর্তীকালে জেলে ভাংচুরসহ বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহের বিষয়ে তদন্ত করছে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি। এ কমিটি রোববার ইলিয়াছের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করে।
তদন্ত কমিটির প্রধান এডিএম সফিউল আলম জানান, আশা করছি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে পারব। তিনি বলেন, আমরা তার বক্তব্য নিয়েছি। আরও অনেকের বক্তব্য নিচ্ছি। সবগুলো মিলিয়ে কমিটি সিদ্ধান্ত দেবে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাবে না। উল্লেখ্য, জেলা প্রশাসক সাবিনা আলম ১৮ জুলাই ৫ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। পরবতীকালে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য সময় বাড়ান তদন্ত কমিটি।
১৮ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন সকালে কারাগারে জি কে গউছের ওপর হামলা করে ২টি হত্যা মামলার আসামি ইলিয়াছ মিয়া ওরফে ছোটন। ওই দিনই আহত জি কে গউছকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এর প্রতিবাদে জেলা বিএনপি ১৯ জুলাই হবিগঞ্জে আধাবেলা হরতালসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। অর্থমন্ত্রী ও স্থানীয় এমপিকে হত্যা ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো প্রতিবাদ সমাবেশ অব্যাহত রেখেছে।
শায়েস্তাগঞ্জের সালেহ আহমেদ কনা মিয়ার ছেলে ইলিয়াছ দুটি হত্যা মামলায় ২০১১ সাল থেকে হবিগঞ্জ কারাগারে আটক আছে। অপরদিকে জি কে গউছ সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর থেকে কারাগারে আছেন। ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে গ্রেনেড হামলায় নিহত হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া, তার ভাতিজা শাহ মঞ্জুর হুদাসহ ৫ জন। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে পৃথক দুটি মামলা করা হয়। হত্যা মামলাটি বর্তমানে সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন ও বিস্ফোরক মামলাটি তদন্তাধীন আছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
আড়াই বছর পর কারাগার থেকে বের হলেন পি কে হালদার
বাংলাদেশে আর্থিক কেলেঙ্কারিতে জড়িত প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদার ভারতেরবিস্তারিত পড়ুন
আয়কর রিটার্ন জমার সময় আবারও এক মাস বাড়লো
ব্যক্তি শ্রেণির করদাতাদের ২০২৪-২৫ করবর্ষেরর আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় আরওবিস্তারিত পড়ুন
বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হলো বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক মইনুলকে
বিদেশে যাওয়ার সময় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলস-বিডিআরেরবিস্তারিত পড়ুন