আবারো ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ, এখন পর্যন্ত ৩ সেনা সদস্য নিহত
একদিন আগেই কাশ্মির সীমান্তে ৬ ভারতীয় সেনা হত্যার দাবি করেছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনী। তার একদিন পর পাকিস্তানি সেনার হামলায় আরো ৩ সেনা সদস্য নিহত হওয়ার কথা জানিয়েছ ভারত।
মঙ্গলবার উত্তর কাশ্মীরের কুপওয়ারা জেলার মছিল সেক্টরে পাক হামলায় মৃত্যু হয় তিন সেনা সদস্যের। ভারতীয় বাহিনীর পক্ষ থেকে এদের মধ্যে এক সেনার অঙ্গচ্ছেদের দাবি করা হয়েছে। ভারতীয় সেনা বাহিনীর নর্দার্ন কম্যান্ডের তরফে টুইট করে এ খবর জানানো হয়। তবে সেনা হত্যার কথা স্বীকার করলেও অঙ্গচ্ছেদের অভিযোগ নাকচ করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
ভারতীয় সেনা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা জানান, পাকিস্তানি সেনার বিশেষ সীমান্ত বাহিনী ব্যাট (বর্ডার অ্যাকশন টিম)-এর হামলাতেই মৃত্যু হয়েছে এই তিন সেনার। ঘন কুয়াশার সুযোগ নিয়ে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতে ঢুকে তারা হামলা চালিয়েছে। তিন জনকে মেরে ও নিজ ভূখণ্ডে ফিরেও যায় তারা।
নিহতদের নাম মনোজ কুশওয়াহা, শশাঙ্ক সিংহ এবং প্রভু সিংহ। ২৫ বছর বয়সী প্রভুর দেহই বিকৃত করেছে পাক বাহিনী।
চলতি মাসের মধ্যে এ ধরনের হামলা এই নিয়ে দ্বিতীয়বার। গত মাসের ২৯ তারিখ এই মছিল সেক্টরেই মনদীপ সিংহ নামে এক ভারতীয় সেনার দেহ ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছিল জঙ্গিরা। মাস পেরোনোর আগেই ফের একই ধরনের হামলা।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর একাংশ অবশ্য এটাকে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের জবাব বলছে। তাদের ব্যাখ্যা, মূলত এ ভাবে ভারতীয় বাহিনীর সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের জবাব দিয়েছে পাকিস্তান। এই হামলার যোগ্য জবাব সীমান্তে দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছে ভারতীয় সেনার নর্দার্ন কম্যান্ড।
ভারতীয় সেনা কর্তারা জানিয়েছেন, ব্যাটের বাহিনীতে মূলত দক্ষ জঙ্গিদের রাখে পাক সেনা। যারা শত্রু পক্ষের মাটিতে (এক থেকে তিন কিলোমিটার এলাকার মধ্যে) ঢুকে অতর্কিতে আক্রমণ করে নিজেরা গা ঢা়কা দিতে পটু।
সেনা হত্যার বিষয় নিয়ে ভারতীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরকে বিশদ আলোচনা করেন উপ-সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল বিপিন রাওয়ত। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এই হামলাকে ‘কাপুরুষোচিত’ অ্যাখ্যা দেন পর্রীকর।
২০১৩ সালে প্রথম বার বড়সড় হামলা চালায় ব্যাট। সেই বছর অাগস্টে ভারতে ঢুকে একটি টহলদারি বাহিনীর উপর হামলা চালিয়েছিল তারা। ২০১৩-রই জানুয়ারিতে কাশ্মীরের কৃষ্ণগতি সেক্টরে হামলা চালিয়েছিল ব্যাট বাহিনী। তাতে মৃত্যু হয় ল্যান্স নায়েক হেমরাজ ও ল্যান্স নায়েক সুধাকর সিংহের। তখন দুই সেনারই দেহ ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছিল পাক সেনা। হেমরাজের মাথাও কেটে ফেলেছিল তারা।
তবে ভারতের অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিয়েছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদের দাবি, তাদের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই এমন দাবি করেছে দিল্লি। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মছিলে হামলার পরে ভারতীয় বাহিনীর সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের গুরুত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ভারতের কায়দাতেই পাল্টা আঘাত হেনেছে পাক সেনা। ভবিষ্যতে যে পাকিস্তান এই ধরনের আরও হামলা চালাতে পারে তা এখন থেকেই বুঝতে পারছে সেনা। তিন সেনাকে হত্যার পরেও সীমান্তের ওপার থেকে বেশ গোলা বর্ষণ চালিয়েছে পাকিস্তান সেনা।
ভারতীয় সেনা কর্মকর্তাদের ব্যাখ্যা, ‘আমরা যে পাল্টা জবাব দেব, তা পাকিস্তান জানে। তাই গোলাগুলি চালিয়ে ব্যস্ত রাখতে চাইছে।’
গত সোমাবারও কাশ্মির সীমান্তে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর হামলায় ভারতীয় এক সেনাসদস্য নিহত হয়। এ সময় গুরুতর আহত হয় আরও ৪ জন।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে অংশে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইট অভিযান পরিচালিত হয়। এর পর থেকে নিয়ন্ত্রণরেখা ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত বরাবর ২৯০টি গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ২৩ জন ভারতীয় সেনাসহ মোট ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যপক্ষে পাকিস্তানের ৭ সেনাসহ নিহত হয়েছে ১৫ জনের বেশি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন
বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নত রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নতবিস্তারিত পড়ুন