কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে এই একটি বছর….২০১৫
আজ ৩১ ডিসেম্বর। ২০১৫ সালের শেষ দিন। আজকের দিনটি পার হলেই হারিয়ে যাবে দেয়ালে গত এক বছর ধরে টানিয়ে রাখা ক্যালেন্ডারটির গুরুত্ব। সেখানে ঝুলবে আরেকটি নতুন ক্যালেন্ডার। দিনটি শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কালের গর্ভে হারিয়ে যাবে আরেকটি বছর। স্মৃতির পাতা থেকে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব মুছে শুরু হবে নতুন বছর। অনেক ঘটন-অঘটন, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, চড়াই-উৎরাই, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও আনন্দ-বেদনার সাক্ষী এই বিদায়ী বছর। নানা ঘটনা প্রবাহে আলোচিত ইংরেজি ২০১৫ সাল। সেইন্ট গ্রেগরি প্রবর্তিত ক্যালেন্ডারের হিসাবে এখন সামনে সমাগত ২০১৬।
সময় এক প্রবহমান মহাসমুদ্র। কেবলই সামনে এগিয়ে যাওয়া, পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। তাই তো জীবন এত গতিময়। যে প্রত্যাশার বিশালতা নিয়ে ২০১৫-এর প্রথম দিনটিকে বরণ করা হয়েছিল, সেই প্রত্যাশার সব কি পূরণ হয়েছে? এ হিসাব না হয় নাইবা করলাম।
বিদায়ী বছর প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তির দোলাচলে নিয়েছে অনেক কিছু। তারপরও নতুন বছরের নতুন সূর্যালোকিত দিনের প্রতি অসীম প্রতীক্ষা ও প্রত্যাশা মানুষের মনে। নতুন বছর মানেই নতুন স্বপ্ন। চোখের সামনে এসে দাঁড়ায় ধূসর হয়ে আসা গল্পগাঁথার সারি সারি চিত্রপট। কখনো বুকের ভেতর উঁকি দেয় একান্তই দুঃখ-যাতনা। কখনো পাওয়ার আনন্দে নেচে উঠে হৃদয়। এ বছরটি নতুন সম্ভাবনার দরজা খুলে দেবে আমাদের জীবনে, এমনটিই প্রত্যাশা আমাদের।
‘আছে দুঃখ, আছে মৃত্যু, বিরহদহন লাগে। তবুও শান্তি, তবু আনন্দ, তবু অনন্ত জাগে’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানের এ কথার মতই দুঃখ, কষ্ট সব কিছু কাটিয়ে নতুন জীবনের দিকে যাত্রার প্রেরণা পেতে চাই। নতুন বছরটি যেন সমাজ জীবন থেকে, প্রতিটি মানুষের মন থেকে সকল গ্লানি, অনিশ্চয়তা, হিংসা, লোভ ও পাপ দূর করে। রাজনৈতিক হানাহানি থেমে গিয়ে আমাদের প্রিয় স্বদেশ যেন সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যেতে পারে।
শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী ও মুক্তিযোদ্ধারা ২০১৫ সালকে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বড় প্রাপ্তি ও আনন্দের বছর বলে অভিহিত করেছেন। এমিরেটাস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান ২০১৫ সালকে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বড় প্রাপ্তির বছর হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও শাস্তি কার্যকর হওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি এনে দিয়েছে।’
অন্যদিকে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরী ও জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের রায় কার্যকর করার মধ্যে দিয়ে ২০১৫ সাল মু্িক্তযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য আনন্দ বয়ে এনেছে।’
বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর চেয়ারম্যান কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন বলেন, ‘এই দুই যুদ্ধাপরাধীর রায় কার্যকর করার মধ্যে দিয়ে জাতির দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান হলো। এটাই এখন গভীর আনন্দ।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়ে যারা মানুষ হত্যা করেছে নির্বিচারে, যারা নারীদের বাংকারে পৌঁছে দিয়েছে অনায়াসে, যাদের দেশ ও জাতির প্রতি কোনো ধরনের নৈতিক ও সততার চেতনা কাজ করেনি, তাদের জন্য এই শাস্তি যথোপযুক্ত।’
মুক্তিযুদ্ধের বীর সৈনিক ক্র্যাক প্লাটুনের সদস্য হাবিবুল আলম বীরপ্রতীক বলেন, ‘সাকা-মুজাহিদের ফাঁসির রায় কার্যকর করার মধ্যে দিয়ে সরকারের প্রতি জনগণের আস্থা দশগুণ বেড়ে গিয়েছে। কারণ এই দুইজনের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ, কথা ও দেশ-বিদেশে লবিস্ট নিয়োগের প্রক্রিয়ায় অনেকেই মনে করেছিল যে, এদের বিচার হলেও শাস্তি কার্যকর হবে না। কিন্তু সরকার সেটি করে দেখিয়েছে।’
জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের নির্বাহী সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর ওয়াকার বলেন, ‘এ বছর সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা ১০ হাজার টাকায় উন্নীত করেছে। একাত্তরে যেসব নারী পাক সেনাদের হাতে নির্যাতিত হয়েছেন, তাদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মানিত করা হয়েছে এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের শিক্ষা, চাকুরি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেছে। এটি মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের সন্তানদের জন্য বড় প্রাপ্তি।’
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

তারেক রহমান: আগে ভারতীয় শিল্পী আসতো, এখন পাকিস্তান থেকে আসে
বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে দেশি শিল্পীদের উপেক্ষা করে ভারত ও পাকিস্তানবিস্তারিত পড়ুন

নির্বাচন নিয়ে সরকারের এত গড়িমসি কেন, প্রশ্ন রিজভীর
“নির্বাচন নিয়ে সরকারের এত গড়িমসি কেন”, এমন প্রশ্ন তুলে বিএনপিরবিস্তারিত পড়ুন

সাময়িক বরখাস্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেবিস্তারিত পড়ুন