কুড়িগ্রামে তিন উপজেলার ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি
কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলার ও তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার তিন উপজেলার নিম্নাঞ্চল ও দ্বীপচর প্লাবিত হয়েছে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। কয়েকদিন ধরে এ অবস্থার চলার পর সোমবার (১০ জুলাই) ব্রহ্মপুত্রের চিলমারী পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার পানি বেড়ে বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এর আগে সোমবার সকাল ছয়টা পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের পানি নুনখাওয়া পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার এবং ধরলার পানি ফেরিঘাট পয়েন্টে ২৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। তিস্তার পানি কাওনিয়া পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার বেড়ে গেলেও এখন বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে সোমবার ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
কুড়িগ্রামের-বানভাসী-মানুষের-দুর্ভোগসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের অববাহিকার চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট, অষ্টমীর চর, রমনা, রানীগঞ্জ, চিলমারী ইউনিয়ন, উলিপুর উপজেলার হাতিয়া, বেগমগঞ্জ, রৌমারী উপজেলার শৌলমারী, দাতভাঙ্গা, বন্দবের ইউনিয়ন ও সদর উপজেলার যাত্রাপুরসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলসহ চরাঞ্চলের প্রায় অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ গত পাঁচ দিন ধরে পানিবন্দি অবস্থায় জীবন-যাপন করছেন। এসব এলাকায় শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গবাদি পশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। বানভাসীদের হাতে কাজ না থাকায় খাদ্য সংকট দেখা দিলেও এখনও সরকারি বা বেসরকারি ত্রাণ সহায়তা শুরু হয়নি।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আইয়ুব আলী সরকার বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের দুই তৃতীয়াংশ এলাকা পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বাড়তে থাকলে আজ সোমবার রাত কিংবা মঙ্গলবারের মধ্যে পুরো ইউনিয়ন পানিতে নিমজ্জিত হয়ে যাবে।
ত্রাণ তৎপরতা সম্পর্কে এই জনপ্রতিনিধি আরও বলেন, ‘এখনেও ত্রাণ তৎপরতা শুরু হয়নি। তবে আজ থেকে শুরু হতে পারে।’
নদী-ভাঙ্গনঅষ্টমীরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তালেব জানান, তার ইউনিয়নে প্রায় দেড় হাজারের বেশি পরিবার পানিবন্দি অবস্থায় জীবন-যাপন করছেন। কিন্তু এখনও কোনও ত্রাণ সহায়তা শুরু করা সম্ভব হয়নি। বন্যা কবলিত এলাকাগুলোর কাঁচা সড়ক তলিয়ে থাকায় নৌকায় করে প্রয়োজনীয় কাজ করতে হচ্ছে এলাকার লোকজনকে।
উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের চর অনন্তপুর গ্রামের ইসলাম মিয়া, আজাহার আলীসহ কয়েকজন জানান, ঘরের ভেতর থেকে পানি, কেউ চৌকি আবার কেউ বাঁশের মাচার ওপর পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। ঘরে খাবারও নেই। মেম্বার, চেয়ারম্যানও কোনও সাহায্য দিচ্ছে না।
চিলমারী উপজেলার নয়ারচর ইউনিয়নের রাবেয়া বেগম বলেন, ‘হামরা ছোট ছৈল আর গরু, ছাগল নিয়া বিপদে আছি। ঘর-বড়িত পানি, ঠিকমতো রান্নাও করবার পারি না।’
তিস্তা-ব্যারেজএ ব্যাপারে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান জানান, ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চল গুলোতে পানি প্রবেশ করার কারণে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেও তা ভয়াবহ পর্যায়ের নয়। তারপরও আমরা এলাকাভিত্তিক চাহিদা অনুযায়ী ত্রাণ তৎপরতা শুরু করেছি। কোথাও কোনও সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি রেখেছি।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, সোমবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানি ১৭ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী তিনদিন পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্রের সককটি পয়েন্টে পানি বাড়তে পরে বলেও জানান তিনি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
কুড়িগ্রামে সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার
কুড়িগ্রামে মটর মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান বকসীরবিস্তারিত পড়ুন
স্কুলছাত্রীর সঙ্গে পরকীয়া, জামায়াত নেতাকে গণধোলাই
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে স্কুলছাত্রীর সঙ্গে পরকীয়া হাতেনাতে ধরা পড়ার পর একবিস্তারিত পড়ুন
বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত
কুড়িগ্রামের রৌমারী ধর্মপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে একজনবিস্তারিত পড়ুন