শনিবার, জুলাই ২৭, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

কেন মানুষ বাঁ-হাতি হয়? বাঁ-হাতি হলে কী হয়?

আজ আন্তর্জাতিক বাঁ-হাতি দিবস। বাম হাত ব্যবহারকে প্রাধান্য দিয়ে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের অধিকার রক্ষা ও সচেতনতার জন্য বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালন করা হয়। গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বে ৯-২০ শতাংশ মানুষ বাঁ-হাতি। ইউরোপের ১৭টি দেশের মানুষের লেখার অভ্যাস পর্যবেক্ষণ করে এক গবেষণায় বলা হয়, ২.৫ থেকে ১২.৮ শতাংশের মতো মানুষ বাঁ-হাতে লেখেন।

আরেক গবেষণার বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, সাধারণত বাঁ-হাতির সংখ্যা পুরুষদের মধ্যে বেশি।

প্রাচীনকাল থেকেই বাঁ-হাতিরা বিশ্বব্যাপী নানা সামাজিক অপবাদ ও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। একসময় সারা পৃথিবীতেই বাঁ-হাতিদের দুর্ভাগা ও বিদ্বেষপরায়ণ ভাবা হতো। ইউরোপিয়ান ভাষাও এ জন্য অনেকটা দায়ী। যেমন রাইট (Right) শব্দের অর্থ ঠিক এবং ডান। শুধু এই যুক্তিতে প্রাচীন ইউরোপে বাঁ-হাতিদের অবহেলার করা হতো। ল্যাটিন রাজদরবারে ব্যবহৃত শব্দ ‘sinister’-এর অর্থ হলো বাম। আর এটিকে বিবেচনা করা হতো দুর্ভাগ্য আনার প্রতীক হিসেবে। প্রাচীন মিসরে বাঁ-হাতিরা কখনোই পুরোহিতের দায়িত্ব পালন করতে পারতেন না। ভারতীয় উপমহাদেশেও বাঁ-হাতিদের নিয়ে নানা ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা ছিল।

আধুনিক সময়ে এসেও বাঁ-হাতিদের নিয়মিতই পড়তে হয় বিভিন্ন সমস্যায়। নিত্যদিনের ব্যবহারের প্রায় সব সরঞ্জামই তৈরি করা হয় ডানহাতিদের ব্যবহার উপযোগী করে। এজন্য গাড়ি চালানো, দরজার লক খোলাসহ বিভিন্ন কাজে ঝামেলা পোহাতে হয় বৈকি। যারা বাঁ-হাতি হয়ে জন্মগ্রহণ করেন তাঁদের কাজ করার সময় ডান হাত ব্যবহারে উৎসাহ দেন মা-বাবারা। স্কুল-কলেজে বাঁ-হাতিদের কটু কথাও শুনতে হয় শিক্ষক ও সহপাঠীদের কাছ থেকে। এই চিত্র শুধু আমাদের দেশেরই নয়, সারা বিশ্বের।

বাঁহাতি হওয়ার কারণ
পৃথিবীতে বেশির ভাগ মানুষ ডানহাতি। কিন্তু অল্প কিছু মানুষ কেন বাঁ-হাতি হন? মনে প্রশ্ন জাগতে পারে বৈকি। গবেষকরা বাঁ-হাতি হওয়ার কারণ হিসেবে ৪০টির মতো জীন শনাক্ত করেছেন। প্রচলিত আরেকটি গবেষণার ফল জানলে আপনি চমকে উঠতে পারেন, জন্মগ্রহণের সময় শতকরা ৭৫ ভাগ শিশুই বামহাতি হওয়ার বৈশিষ্ট্য নিয়ে জন্মায়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে পরিবেশ ও জীবনযাপন পদ্ধতি মিলিয়ে শিশু ডানহাতিতে পরিণত হয়।

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরবৃত্তীয় বিভাগের প্রধান ড. টিম ক্রোর মতে, সম্ভবত মানবদেহের পিসিডিএইচ-১১এক্স জিন হাতের ব্যবহারের এ বিষয়টি নির্ধারণ করে দেয়। অক্সফোর্ডের আরেক বিশেষজ্ঞ ড. ফ্রাঙ্কসের মতে, ক্রোমোজোম-২ এর মধ্যে থাকা এলআরআরটিএম-১ জিনের জন্য মানুষ হাত ব্যবহারে আলাদা বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হয়। এ ছাড়া মাতৃগর্ভে থাকা ডাই ইথাইল স্টিলবোস্টেরলের সংস্পর্শ বাঁ-হাতি হতে সহায়ক।

কেবল মানুষই নয়, অনেক পশু-পাখিও বাঁ-হাতি বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন হয়। এক গবেষণায় বলা হয়, অস্ট্রেলিয়ান ক্যাঙ্গারুরা সব বাঁ-হাতি। সেখানে বলা হয়, দ্বিপদী প্রাণীর ক্ষেত্রে হয়তো এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। কিন্তু চতুষ্পদ প্রাণীরা এ ধরনের বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে না।

প্রাণীর এই বিশেষ বিষয়টি নিয়ে টিয়া পাখি ও মুরগির ওপর গবেষণা করেছেন নরওয়ের ব্রুনে ক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. লেসলি রজারস। তিনি জানান, চোখ ও হাতের সংযোগের কারণে প্রাণীরা শরীরের বিভিন্ন অংশকে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করে। যেমন, যদি কোনো টিয়া পাখি ডান চোখে কোনো খাবার খেয়াল করে, তবে স্বভাবতই সে তা ধরতে ডান পা এগিয়ে দেবে। এই বৈশিষ্ট্যের জন্য রজারস মস্তিষ্কের ‘হেমিস্ফিয়ার’ অংশের কার্যপ্রণালীর কথা তুলে ধরেন। মস্তিস্কের এই অংশ ডান ও বামের বিষয়টি নির্ধারণ করে। কাজেই এই অংশটি স্বাভাবিকভাবেই বাঁ-হাতি বা ডানহাতি হিসেবে মানুষকে তৈরি করে।

আরো কিছু তথ্য, যা হয়তো আপনি জানেন না

১. গবেষণায় দেখা গেছে, বাঁ-হাতিদের ডান পাশের মস্তিস্ক বেশি ব্যবহৃত হয়। এজন্যই সাধারণত বাঁ-হাতিরা বেশি উদ্ভাবনী ক্ষমতাসম্পন্ন হয়ে থাকে। ক্রিস এমসি ম্যামস ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডানহাতি ও বামহাতিদের ওপর লেখা একটি বইতে উল্লেখ করা আছে, বাঁ-হাতিদের জীবনের সাফল্য, প্রাপ্তি বা কৃতিত্বপূর্ণ কাজ, ডানহাতিদের তুলনায় ঈর্ষণীয়। বলা হয়ে থাকে, তাঁদের আইকিউ বেশি এবং সংগীত ও গণিতে তাঁদের পারদর্শিতা ডানহাতিদের চেয়ে ভালো।

২. ক্রীড়াজগতে ক্রিকেট, টেবিল টেনিস, ব্যাডমিন্টন, টেনিস, বেসবল খেলায় বাঁ-হাতিরা বেশ সুবিধা আদায় করে নিতে পারে।

৩. ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশের সফল রাজনীতিবিদদের অনেকেই বাঁ-হাতি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্এদর মধ্যে চারজন বাঁহাতি ছিলেন। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও বাঁ-হাতি।

৪. নির্দিষ্ট সময়ের আগে জন্মগ্রহণকারী বেশির ভাগ শিশুই বাঁ-হাতি হয়। গর্ভাবস্থায় এবং প্রসবের সময় সন্তানের অবস্থান এবং প্রিম্যাচিউর (অর্থাৎ ২৪ সপ্তাহের আগে এবং জন্মগত ওজন ১.৫ কেজির কম হলে) হলে বামহাতি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

৫. ১৯৮৯ এবং ১৯৯১ সালে প্রকাশিত দুটি বৈজ্ঞানিক প্রবন্ধে বলা হয়েছিল, বাঁ-হাতিদের জীবনকাল ডানহাতিদের চেয়ে কম হয়। কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষণায় ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা এই কথাটি নাকচ করে দিয়েছেন।

৬. বিশ্বে বেশির ভাগ যন্ত্র এবং সরঞ্জাম ডান হাতিদের উপযোগী করে বানানো। এ জন্য প্রতিবছর বিশ্বে দুই হাজারের বেশি বাঁ-হাতি বিভিন্ন দুর্ঘটনার শিকার হন।

৭. মা-বাবা দুজন বাঁ-হাতি হলে সন্তানদের শুধু শতকরা ২৬ জন বাঁ-হাতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

৮. ডান হাতিদের তুলনায় বাঁ-হাতিদের এলার্জি এবং মাথাব্যথার (মাইগ্রেন) সমস্যা বেশি হয়। এ ছাড়া বাঁ-হাতিরা অনিদ্রা ও তোতলামির সমস্যায়ও ভোগেন।

৯. ২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের লাফায়েত কলেজ এবং জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা দেখিয়েছেন, বাঁ-হাতি মানুষরা ডানহাতিদের চেয়ে ১০-১৫% বেশি উপার্জন করেন।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

মানবদেহে আদার অনেক উপকার

আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন

হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?

বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন

ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ

চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন

  • ওজন কমাতে যা খাওয়া যেতে পারে
  • প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রসুন
  • আমলকি কখনো স্বাস্থ্যের জন্য ‘বিপজ্জনক’ হয়ে ওঠে
  • বাসি দই ও পান্তা ভাতের আশ্চর্যজনক উপকারিতা
  • স্বাদে ও পুষ্টিগুণে ভরপুর সবজি হলো লাউ
  • মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রার পারদ উঠল ৪৩ ডিগ্রিতে
  • যেসব অঞ্চলে টানা ৩ দিন ঝড়বৃষ্টি
  • ২৪ ঘণ্টা না যেতেই ফের কমলো স্বর্ণের দাম
  • গরমে চুলের যত্ন নেবেন কীভাবে?
  • একলাফে সোনার দাম ভ‌রিতে কমলো ৩১৩৮ টাকা
  • কত দিন পর পর টুথব্রাশ বদলাবেন?
  • ত্বকের দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়