কোলেস্টেরল নিয়ে চিন্তা ? আর দরকার নেই….নিয়ন্ত্রণে যা যা করবেন
বংশগতির বৈশিষ্ট ছাড়া জীবন-যাপনের ধরনও কোলেস্টেরলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখানে জীবন-যাপন সংক্রান্ত তেমনই শীর্ষ ২০টি টিপস দেওয়া হল। ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বাইয়ের হেলদি লিভিং ডায়েট ক্লিনিক এর জেষ্ঠ রেজিস্টার্ড খাদ্যাভ্যাস পরামর্শক ও ডায়াবেটিস প্রশিক্ষক সুনিতা পাঠানিয়ার এই পরামর্শগুলো মেনে চললে আপনি সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলমুক্ত একটি জীবন-যাপনে সক্ষম হবেন।
১. আঁশজাতীয় খাবার খান:
প্রতিদিন অন্তত ৫-১০ গ্রাম আঁশাজতীয় খাবার খান। যা আপনার রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ার হার অন্তত পাঁচ শতাংশ কমিয়ে রাখবে। এ লক্ষ্যে প্রতিদিন সকালের নাশতায় জইচূর্ণ খান এবং সারাদিনের খাদ্য তালিকায় প্রচুর শাক-সবজি রাখুন।
২. মাংস কম করে খান:
লাল মাংস খাওয়া পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব না হলেও চর্বিহীন মাংস খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। গরু, শুকর, ভেড়ার মাংস না খেয়ে বরং মাছ খান।
৩. নিয়মিত বিরতিতে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা পরীক্ষা করান:
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত বিরতিতে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কোন পর্যায়ে রয়েছে তা পরীক্ষা করান। এতে রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে গেলে সঙ্গেসঙ্গেই প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন।
৪. নিম্নচর্বিযুক্ত খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন:
নিম্নচর্বিযুক্ত খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে আপনার দেহে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি এমনিতেই কমে আসবে। এ লক্ষ্যে আপনার দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় প্রচুর পরিমাণ ফলমূল, শস্যদানা ও শাক-সবজি রাখুন।
৫. অপাস্তুরিত ভেষজ তেল ব্যবহার করুন:
তেল খাওয়া কমিয়ে দিন। যদি একান্তই তেল খাওয়া বন্ধ না করতে পারেন তাহলে ক্যানোলা, অলিভ বা সয়াবিন তেলের মতো ভেষজ তেল খান।
৬. নিয়মিত ব্যায়াম করুন:
প্রতিদিনি অন্তত আধা ঘন্টা করে ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন। কোলেস্টেরলের বিপদ থেকে বাঁচতে এর চেয়ে বড় আর কোনো ওষুধ নেই। এতে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে।
৭. মাছ খান:
প্রায় সব মাছেই প্রচুর পরিমাণ ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে; যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে খুবই কার্যকর। সপ্তাহে অন্তত ২ থেকে ৩ বার মাছ ও মাছের তেল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
৮. হালকা খাবার হিসেবে বাদাম খান:
সন্ধ্যাবেলা যদি আপনার খিদে পায় তাহলে ভারী ও অস্বাস্থ্যকর খাবারের বদলে বরং বাদাম খান। বাদাম খেলে হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে। এছাড়া বাদাম শুধু স্বাস্থ্যকরই নয় বরং এতে খিদেও মিটে।
৯. ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন:
ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের হাত থেকে রক্ষা পেতে খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
১০. খাবার টেবিলে সংযমী হোন:
খাবার টেবিলে লোভ সংবরন করতে পারলে আপনি একই সঙ্গে ওজন নিয়ন্ত্রণ ও রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
১১. হাঁটুন:
সবসময়ই লিফট বা গাড়ি ব্যবহার না করে পায়ে হেঁটে সিঁড়ি বা অল্প দূরত্বের রাস্তা অতিক্রম করুন।
১২. ডিম খাওয়া কমিয়ে দিন:
রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি বা হৃদরোগের ক্ষেত্রে ডিমকে সবসময়ই শত্রু বলেই গণ্য করা হয়। সূতরাং ডিম খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিন। আর ডিম রান্নায় তেলের ব্যবহারও কমিয়ে দিন।
১৩. সবুজ চা পান করুন:
আপনি যদি চা প্রেমী হয়ে থাকেন তাহলে প্রতিদিনকার সাধারণ চায়ের জায়গায় সবুজ চা খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সবুজ চায়ে আছে ক্যাটেচিন নামের উপাদান যা কোলেস্টেরলের ঝুঁকি কমাতে খুবই কার্যকর।
১৪. খাদ্য তালিকায় সবুজ শাক-সবজির পরিমাণ ও সংখ্যা বাড়ান:
শাক-সবজি খাওয়া কোলেস্টেরলের ঝুঁকি কমানোর সর্বোত্তম পন্থা। শাক-সবজিতে থাকে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বা বিষক্ষয়ী উপাদান।
১৫. ফ্ল্যাক্সবীজ খান:
এই বীজে আছে ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড; যা আপনার রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক হবে।
১৬. পর্যাপ্ত ঘুমান:
প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর বিষয়টি নিশ্চিত করুন। রাতে ভালো ঘুম হলে শরীর এমনিতেই ভালো থাকে। এতে রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকার পাশাপাশি সার্বিক শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে।
১৭. ধুমপান পরিহার করুন:
মানবদেহের সব প্রাণঘাতি রোগের মূল উৎস হল ধুমপান। এমনকি কোলেস্টেরল সংশ্লিষ্ট সমস্যার উৎপত্তিও হয় ধুমপানের কারণে। ধুমপানের ফলে রক্তে উপকারি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমে যায়; যা হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়ায়। সূতরা সুস্থ থাকতে চাইলে আজই ধুমপান ছাড়ুন।
১৮. রসুন খান:
খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে রসুন যুক্ত করুন। রান্না করা খাবারের সঙ্গে ছাড়াও কাঁচা রসুনও খেতে পারেন। প্রতিদিন অন্তত ২-৩ কোষ রসুন খান। রসুন রক্তের ক্ষতিকর চর্বি দূর করা, চর্বি হজম এবং রক্তকোষগুলোকে ঝরঝরা রাখতে সহায়ক।
১৯. হৃদপিণ্ডসংক্রান্ত ব্যায়াম করুন:
প্রতিদিন বাসায় বা জিমে গিয়ে হৃদপিণ্ডসংক্রান্ত ব্যায়াম রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে খুবই সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
২০. সীমিত পরিমাণে অ্যালকোহল পান করুন:
অ্যালকোহল পান করায় সাবধান হোন। কারণ অ্যালকোহল রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে বিপজ্জনক ভূমিকা পালন করে। সূতরাং অনেক দিন পরপর মাঝে-মধ্যে বিশেষ কোনো উপলক্ষ ছাড়া অ্যালকোহল পান না করাটাই নিরাপদ।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন