ছাত্রলীগকে নিয়েই যত ভয়

দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-রাজনীতি উন্মুক্ত হলে ছাত্রলীগের দখলদারি স্বভাব অন্যান্য সংগঠনের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে ছাত্রদলের আশঙ্কা, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের প্রবেশ করতে বাধা দেবে ছাত্রলীগ।
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ছাত্রদলের কার্যক্রম শুরু হয় ২০১০ সালের ২৮ এপ্রিল। ওই দিন ‘আহসানুল্লাহ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়’ ও ‘বাংলাদেশ ইসলামী ইউনিভার্সিটি’-তে কমিটি ঘোষণা হয়।
ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের দফতর সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে মো. মোক্তাদির হোসেন তরু ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মাহাতাব উদ্দিন জিমি দায়িত্ব পালন করছেন।
ছাত্রদল দফতর সূত্র আরও জানায়, কেন্দ্রীয় সংসদেও স্থান পেয়েছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির নেতা-কর্মীরা। বর্তমানে এই সংখ্যা আনুমানিক ১৫ জন। যদিও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার এক নেতা জানান, এখনও কেন্দ্র ও শাখার সঙ্গে সমন্বয়হীনতার কারণে পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি।
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের দফতর সম্পাদক আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী বলেন, ‘সাধারণত ছাত্রলীগ আমাদের কোনও কর্মসূচি করতে দেয় না। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা প্রকাশ্যে আসা মানে, সেখানেও পাহারাদারি শুরু করবে তারা। বিরোধী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ক্লাস-পরীক্ষায় বাধা দেবে। ছাত্রলীগকে বিশ্বাস করা যায় না। তারা সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে রাজনীতি করবে বলে মনে হয় না। ফলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থিরতা শুরু হতে পারে।’
ছাত্র ইউনিয়ন সূত্র জানায়, ঢাকার প্রথম সারির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সংগঠনটির কার্যক্রম চালু আছে। অন্তত ১০টি প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছে তারা। ২০১৩ সাল থেকে সংগঠনটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ শুরু করে। ওই বছরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিট গঠন করে জেলা মর্যাদা দেয় ছাত্র ইউনিয়ন। বর্তমানে শাখার সভাপতি হিসেবে আরেফিন মাহমুদুল হাসান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মশিউর সজীব দায়িত্ব পালন করছেন।
আরেফিন মাহমুদুল হাসান বলেন,‘সারাদেশে ছাত্রলীগের যেসব কার্যক্রমের সঙ্গে আমরা পরিচিত, সেগুলোকে যদি বাদ দেয়, প্রগতির কথা বলে; তাহলে তাদের সঙ্গে রাজনীতিতে আপত্তি নেই। অন্যথায় পরিবেশ গুমোট হবে নিশ্চিত।’
২০১২ সালে নগর কমিটিতে যুক্ত করা হয় ছাত্র ফেডারেশনের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কার্যক্রম। সংগঠনটির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রথম আহ্বায়ক ছিলেন মহিদুল ইসলাম পাভেল; সদস্য-সচিব সুলতান মামুন।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা ও ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী কাঁকন বিশ্বাস বলেন, ‘আমাদের কার্যক্রম বর্তমানে আছে চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। শুধু কমিটি দিলেই তো রাজনীতি হয় না। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা একটা চর্চার ভেতর দিয়ে আসুক।’
কাঁকন বিশ্বাস আরও বলেন, ‘আমরা ছাত্রলীগ পদ্ধতিতে যাচ্ছি না, অচিরেই ছাত্র সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে কাজ করবো। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় কমিটিতে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।’
জানতে চাইলে ছাত্রলীগ সভাপতি সাইফুর রহমান বলেন, যেখানে ছাত্রলীগ থাকবে সেখানে জঙ্গিবাদের স্থান নেই। ছাত্রলীগ নেই বলেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে। গত কয়েকদিন ধরেই এই কমিটি গঠনের কাজ চলছে। কিছু কমিটি দেওয়া হয়েছে। একে একে সবকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ১ জুলাই গুলশান ও ঈদের দিন সোলাকিয়া ঈদগাহে জঙ্গি হামলার সঙ্গে সম্পৃক্তদের মধ্যে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীর নাম উঠে আসে। ওই পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় মালিকদের এক আলোচনা সভায় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সরব রাজনীতি চালুর দাবি জানান। এরই মধ্যে গত ২৭ জুলাই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে কমিটি করেছে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃসংগঠনটি।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন

আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন

জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন