ট্রানজিট ফি নির্ধারণে নভেম্বরে দিল্লিতে বৈঠক
বাংলাদেশ-ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট ও ট্রানজিট ফি চূড়ান্ত করতে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে নৌ-সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
আগামী ৩-৫ নভেম্বর অনুষ্ঠেয় তিন দিনব্যাপী এই বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ট্রান্সশিপমেন্ট ও ট্রানজিট ফি’র একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে। ভারতের পক্ষ থেকে এই ফি’র বিষয়ে কোনো আপত্তি না থাকলে তা চূড়ান্ত করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
সূত্র জানায়, এর আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতি মেট্রিক টন পণ্যের ট্রানজিট ফি ৫৮০ টাকা নির্ধারণ করেছিল। কিন্তু ভারতের আপত্তির মুখে তা কমিয়ে ১৩০ টাকা করার প্রস্তাব করেছে। একই সঙ্গে আগের প্রস্তাব অনুযায়ী পণ্যের ব্যাংক গ্যারান্টিও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সম্প্রতি নৌ-সচিব পর্যায়ে বৈঠকে আলোচ্যসূচী নিয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে মূলত কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এগুলোর মধ্যে ছিল- ফাইনালাইজেশন অব দি স্ট্যার্ন্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) ফর কোস্টাল শিপিং এগ্রিমেন্ট, ডিসকাশন অ্যান্ড ফাইনালাইজেশন অব দি রেটস ফর ট্রান্সশিপমেন্ট অ্যান্ড ট্রানজিট থ্রু দি পিআইডব্লিউটিটি রুটস, ডিসকাশন অন জয়েন্ট অ্যাপ্রোচ টু ওয়ার্ল্ড ব্যাংক অন ড্রেজিং অব প্রটোকল রুটস থ্রু আইডিএ ফান্ডিং।
এ ছাড়াও বৈঠকে চট্রগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারতের আগ্রহ সংক্রান্ত প্রোটোকল এবং যাত্রী ও ক্রস ভ্যাসেল চলাচল নিয়ে আলোচনা করা হয়।
সূত্র জানায়, বৈঠকে মতামত দেওয়া হয়, ট্রানজিট ফি হিসেবে এনবিআরের দেওয়া প্রস্তাব নৌ-সচিব পর্যায়ের বৈঠকে উত্থাপন করা হবে।
এর আগে এনবিআর পক্ষ থেকে প্রতি মেট্রিক টন পণ্য’র জন্য ট্রানজিট ফি ৫৮০ টাকা (৭ ডলার) নির্ধারণের প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। এই ফি’র মধ্যে প্রক্রিয়াকরণ বাবদ খরচ ১০ টাকা, ট্রানশিপমেন্ট বাবদ ২০ টাকা, স্ক্যানিং ব্যয় ৩০০ টাকা, মার্চেন্ট ওভারটাইম ৪০ টাকা, নিরাপত্তা ১০০ টাকা, পণ্য এসকর্ট ফি ৫০ টাকা, অটোমেশন ফি ১০ টাকা এবং অন্যান্য ফি ধরা হয় ৫০ টাকা।
কিন্তু ভারতের পক্ষ থেকে এই ফি বেশি বলে উল্লেখ করা হয়। এবং তা কমিয়ে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নীতিমালা অনুসরণের পরামর্শ দেওয়া হয়। এই নীতিমালা অনুসরণ করা হলে প্রতিটন পণ্যের ক্ষেত্রে ট্রানজিট ফি ২ থেকে ৩ ডলারের বেশি হবে না। প্রভাবশালী একটি মহলও ডব্লিউটিও’র নীতিমালা অনুযায়ী ট্রানজিট ফি নির্ধারণের সুপারিশ করে। এ বিষয়ে এনবিআরকে নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
তবে ট্রানজিট ফি কমানোর বিষয়ে এনবিআরের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে, অর্থমন্ত্রী এনবিআরের ট্রানজিট সংশ্লিষ্ট সার্ভিস চার্জ পুন:নির্ধারণ বিষয়ক প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছেন। এ বিষয়ে এনবিআরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ভারত থেকে বাংলাদেশ প্রবেশের শুল্ক পয়েন্ট আংটিহারায় স্ক্যানিং, অটোমেশন, এসকর্ট ও এমওটি সুবিধাদি বিদ্যমান নাই।
এ সুবিধা চালু না করা পর্যন্ত এনবিআর প্রস্তাবিত কাস্টমস সংক্রান্ত সার্ভিস চার্জ প্রতি মেট্রিক টন ৫৮০ টাকা থেকে ওইসব আইটেম বাদ দেওয়া যেতে পারে। এতে পূর্ববর্তী হিসাব (৫৮০ টাকা) থেকে প্রতি মেট্রিক টনে ৪৫০ টাকা কমে প্রতি মেট্রিক টনে ১৩০ টাকা ফি নির্ধারিত হবে।
তবে এ ক্ষেত্রে এনবিআরের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়, বাদ দেওয়া সেবা আইটেমগুলোর সেবা নিশ্চিত করা গেলে পরবর্তীতে তা প্রয়োজ্য হবে। অর্থাৎ প্রতি মেট্রিক টন পণ্যের জন্য ট্রানজিট ফি ৫৮০ টাকায় নির্ধারিত থাকতে পারে। কিন্তু পরবর্তীতে এই ফি আদৌ কার্যকর করা যাবে কী না তা নিয়ে ইতিমধ্যে সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ ভারতের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতি মেট্রিক টন পণ্যর জন্য ৫৮০ টাকা ট্রানজিট ফি তারা দেবে না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ২০১০ সালে ট্রানজিটের জন্য ২০ ফুট কন্টেইনারের জন্য ১০ হাজার টাকা এবং ট্রাকে প্রতিটন পণ্যর জন্য ১ হাজার টাকা ফি নির্ধারণের প্রস্তাব দেয়। এ বিষয়ে একটি এসআরও জারি কর হলেও পরবর্তীতে একটি প্রভাবশালী মহলের বিরোধীতার মুখে এনবিআর সেই এসআরও প্রত্যাহার করে নেয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
যে কারণে নতুন বছরের প্রথম দিনেও বিশ্ববাজারে বাড়লো স্বর্ণের দাম
নতুন বছরের প্রথম দিনেও স্বর্ণের দাম বেড়েছে আউন্সপ্রতি ১৮.২৫ ডলার।বিস্তারিত পড়ুন
অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে ২ ভারতীয় নাগরিক আটক
অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে ২ জন ভারতীয়বিস্তারিত পড়ুন
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এলো ডিসেম্বরে
একক মাস হিসেবে সদ্যবিদায়ী বছরের ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৬৩বিস্তারিত পড়ুন