ডাক্তার সেজে প্রেম, অতঃপর যা ঘটল !
ফেসবুকেই আলাপ হয়েছিল ছেলেটির সঙ্গে। দু’চার লাইন চ্যাটের পরেই নিজেকে ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দিয়েছিল যুবক। পুলিশকর্মী তরুণীর মনে সন্দেহ জাগেনি। কারণ, বর্ধমানের অনাময় হাসপাতালের বাগানে ডেকেই তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিল ওই যুবক। প্রেমপর্ব এগোচ্ছিল ভালই। কিন্তু ফাঁস হয়ে গেল হবু শ্বশুরের মন কু-ডাকায়। হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য এসে ডাক্তার পাত্রের খোঁজ করে তিনি ধরে ফেললেন, প্রেমের ফাঁদের আড়ালে প্রতারণা।
কৃষ্ণনগরের ওই তরুণী সেখানকার থানাতেই কনস্টেবল পদে কর্মরত। কয়েক মাস আগে ফেসবুকে আলাপ হয় বর্ধমানের শাঁখারিপুকুরের ওই যুবকের সঙ্গে। দু’এক বার বর্ধমানে এসে দেখাসাক্ষাতের পরে বাড়িতে কথা তোলেন ওই তরুণী। কিন্তু তাঁর বাবা সাফ জানান, নিজের চোখে পাত্রকে না দেখে বিয়েতে সায় দেবেন না। বলে দেন, ‘‘আগে দেখব, বুঝব। তার পরে বিয়ে।’’ কিন্তু সেই দেখা-বোঝার আগেই তাঁর হৃদযন্ত্রের সমস্যা দেখা দেয়। ডাক্তার প্রেমিকের ভরসায় মেয়ে তাঁকে নিয়ে আসেন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল অনাময়ে। ঘটনাচক্রে, প্রেমিক যে চিকিৎসকের কাছে স্নাতকোত্তর করছে বলে দাবি করেছিল, সেই ডাক্তারের কাছেই চিকিৎসা শুরু হয়। যখনই তাঁরা হাসপাতালে এসেছেন, গলায় স্টেথো ঝুলিয়ে, সাদা অ্যাপ্রন পরে হাসপাতালের বাগানে তরুণীর সঙ্গে দেখা করে গিয়েছেন যুবক। কিন্তু হবু শ্বশুরের মুখোমুখি হয়নি।
শেষমেশ, রীতিমতো জেদ ধরেন মেয়ের বাবা। পাত্র বাধ্য হয় দেখা করতে। তবে প্রথম আলাপেই ছেলেটিকে সুবিধের মনে হয় না বৃদ্ধের। বুধবার বর্ধমান থানায় বসে তিনি বলেন, ‘‘ছেলেটিকে দেখেই কেমন সন্দেহ হয়েছিল।’’ সন্দেহ মেটাতে সে দিনই মেয়েকে বাইরে বসিয়ে রেখে হাসপাতালে ঢুকে যান তিনি। খোঁজখবর করে জানতে পারেন, ওই নামের কোনও ছাত্রই নেই সেখানে। যে চিকিৎসকের কাছে দেখাচ্ছিলেন, তাঁকে দূর থেকে ছেলেটিকে দেখিয়ে দেন। ওই চিকিৎসক বলেন, ‘‘না না, ও আমার ছাত্র নয়। মিথ্যে পরিচয় দিয়েছে আপনাদের।’’ এর পরেই হাসপাতালের কর্মী, চিকিৎসকেরা মিলে ঘিরে ধরেন ওই যুবককে। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। পুলিশ এসে দু’একটি প্রশ্ন করতেই গড়গড় করে নিজের কীর্তি বলে দেয় ওই যুবক।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভুয়ো ডাক্তারের সঙ্গে থানায় আসেন ওই তরুণী ও তাঁর বাবা। সেখানেও বাপ-মেয়ের মধ্যে দড়ি টানাটানি চলে। বাবা চাইছিলেন প্রতারণার মামলা করতে। কিন্তু মেয়ে রাজি হননি। শেষ পর্যন্ত মেয়ের জেদই বজায় থাকে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার উৎপল দাঁ বলেন, “মেয়েটির পরিবার কোনও অভিযোগ না করলেও গোটা ঘটনা নিয়ে আমরা জেনারেল ডায়েরি করেছি।” পুলিশ জানায়, তরুণীর আস্থা জিততে নিজের নামে প্যাড ছাপিয়ে তাতে এমবিবিএস, এম ডি, ডিএম (কার্ডিওলজি) ডিগ্রিও লিখিয়েছিল যুবকটি। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের ডেপুটি সুপার অমিতাভ সাহা বলেন, “কত বড় ডাক্তার ভাবুন! এমডি করার পর সুপার স্পেশালিস্ট বিষয় নিয়ে ফের ‘পোস্ট গ্র্যাজুয়েট’ করেছেন!”
থানা ছাড়ার সময়ে ওড়না দিয়ে চোখ মুছে তরুণী শুধু বলেন, “এফআইআর করে তো আর ভালবাসা ফিরে পাব না।’’ #আনন্দবাজার
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
হত্যাকাণ্ডসহ সব অনভিপ্রেত ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল।বিস্তারিত পড়ুন
রাজধানীর শনির আখড়া ও ধনিয়ায় গুলিবিদ্ধ ৬
রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনিআখড়া ও ধনিয়া এলাকায় ৬ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে।বিস্তারিত পড়ুন
বিমানের লাগেজ থেকে সাড়ে ৪ কোটি টাকার স্বর্ণ উদ্ধার
৪ কেজি ৪২০ গ্রাম স্বর্ণের বার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরবিস্তারিত পড়ুন