তনু হত্যাঃ উত্তাল কুমিল্লা, পুলিশ বলল ‘একটু সময় লাগবে’

ঘটনার চারদিন পরও আটক হয়নি কেউ। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত কাজ চলছে। এদিকে প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে আছে সোহাগী জাহান তনুর শহর কুমিল্লা। অবিলম্বে দায়ী ব্যক্তিদের আটক ও শাস্তি দাবি করেছে কুমিল্লার সর্বস্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা।
আজ বৃহস্পতিবার দিনভর কুমিল্লার পূবালী চত্বরে অবস্থান, প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যায় ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাসের শিক্ষার্থী তনুর জন্য ন্যায়বিচারের দাবিতে মোমবাতি প্রজ্বালন করেন প্রতিবাদকারীরা।
এদিকে তনু হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদে অংশ নিয়ে হত্যার বিচার দাবি করেছেন।
‘একটু সময় লাগবে’
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন জানিয়েছেন, পুলিশ হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ মতামত চেয়েছে। এ কারণে একটু সময় লাগবে।
মো. শাহ আবিদ হোসেন এনটিভিকে বলেন, নাজিরাবাজার পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ রাত ১টার দিকে সিএমএইচে গিয়ে তনুর লাশ দেখে। এর আগে ঘটনাস্থলে যখন দেখে তখন লাশটা সেখানে ছিল না। আমাদের কাছে দেখে মনে হয়েছে এটি হত্যামূলক হতে পারে। এ কারণে আমরা একটা মামলা নিয়েছি। তাঁর বাবা মামলার বাদী। লাশের সুরতহাল ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিক অবস্থায় আমাদের মনে হয়েছে তাকে ধর্ষণ করার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল। এ কারণে আমরা বিশেষজ্ঞ মতামত চেয়েছি। এতে একটু সময় লাগবে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনসহ এসব প্রতিবেদন পেলে তখন আমরা সুনির্দিষ্টভাবে হত্যা সম্পর্কে বলতে পারব।’
মো. শাহ আবিদ আরো বলেন, ‘এটি একটি ফৌজদারি মামলা। পুলিশের কাজ করার নিজস্ব একটা পদ্ধতি আছে। আমরা তথ্য সংগ্রহ করছি। আমরা সর্বোচ্চ শক্তি নিয়ে মামলাটি দেখছি। অভিজ্ঞদের নিয়ে একটা দল গঠন করা হয়েছে এবং তারা কাজ করছে। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।’
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ‘ঘটনা জানার পরই ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সিএমএইচ থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।’
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল বলেন, ‘তনু একজন সংস্কৃতকর্মী ছিলেন। আমি খুব মর্মাহত। বিষয়টি নিয়ে মামলা হয়েছে। পুলিশ তৎপর হয়েছে আসামি খুঁজে বের করার জন্য। বিষয়টির ওপর আমরাও নজর রাখছি। আশা করি দায়ী ব্যক্তিরা শনাক্ত হবে।’
শহরজুড়ে বিক্ষোভ
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী তনু হত্যার বিচারের দাবিতে উত্তাল হয়ে আছে পুরো শহর। বিশেষ করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ করছে। বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনও ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিবাদে অংশ নিয়েছে। দোষী ব্যক্তিরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত এসব সংগঠন রাজপথে থাকবে বলে জানিয়েছে।
প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়ে কুমিল্লা উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি উৎবাতুল –বারি আবু বলেন, ‘ তনু হত্যায় দায়ী ব্যক্তির গ্রেপ্তার ও ফাঁসি দাবি করছি।’ এ সময় কুমিল্লা উত্তর জেলা যুবদলের সভাপতি আমিরুজ্জামান আমির বলেন, ‘আজ কুমিল্লার মানুষ তনু হত্যার বিচার চায়। আজ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন এক হয়ে এ সবের বিচার চায়।’
প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘চারদিন পরও কেউ ধরা পড়েনি। প্রশাসনের কাছে জবাব চাই কেন আসামি ধরা পড়ছে না। পুলিশ এখনো চুপ আছে। প্রশাসন থেকেও কোনো সাড়া পাচ্ছি না।’
গত ২০ মার্চ তনু টিউশনির উদ্দেশে বাসা থেকে বের হন। রাত ১০টায় কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে অলিপুর এলাকায় একটি কালভার্টের নিচ থেকে তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। তনুর বাবা ইয়ার হোসেন ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের একজন কর্মচারী। তনুদের পরিবার সেনানিবাসের ভেতরেই থাকে। ওই এলাকাতেই বড় হয়েছেন তনু।
ঘটনার পর ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

ফারুকী: আমরা মব জাস্টিসে বিশ্বাস করি না
সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরওয়ার ফারুকী বলেছেন, “আমরা কোনো ধরনেরবিস্তারিত পড়ুন

কুষ্টিয়ায় মাংসের বদলে ঝোল দেওয়ায় সংঘর্ষ, আহত ৪
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে খতনার দাওয়াতে মাংসের বদলে বারবার ঝোল দেওয়া নিয়েবিস্তারিত পড়ুন

উপদেষ্টা: অন্তর্বর্তী সরকার বিশ্বব্যাপী বিপুল সমর্থন পেয়েছে
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, “গত ছয় মাসে বাংলাদেশবিস্তারিত পড়ুন