শনিবার, জুলাই ২৭, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

দৃষ্টি

স্বাধীনতা আমাদের গর্ব, আমাদের এক সোনালী অর্জন। বাঙালি জাতির হাজার বছরের সংগ্রামের ফসল আর গৌরবোজ্জ¦ল অধ্যায় এই স্বাধীনতা। কাজেই সেই স্বাধীনতাকে নিয়ে কবি, গল্পকার, উপন্যাসিক, নাট্যকার এবং শিল্পীরা তাদের নিজ নিজ ক্যানভাসে এঁকেছেন; মূর্ত করে তুলেছেন স্বাধীনতার মর্মবাণীকে, স্বাধীনতার অসাধারণ প্রাপ্তিতে। স্বাধীনতাকে নিয়ে প্রচুর লেখা হয়েছে, সামনে আরো অনেক লেখা হবে নিশ্চয়। শিল্প-সাহিত্যের ছোটকাগজ ‘দৃষ্টি’ বই মেলা ২০১৫তে তাদের ২১ বছরে পদার্পনের ১৪ তম সংখ্যাটি বের করেছেন স্বাধীনতা-উত্তর বাংলা ছোটগল্প পর্যালোচনা সংখ্যা হিসেবে। অসাধারণ একটি সংখ্যা করেছেন।

এমনিভাবে স্বাধীনতার পরে গল্পকাররা তাদের নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গিতে স্বাধীনতাকে গল্পের মাধ্যমে পাঠকের কাছে ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে তুলে ধরেছেন। আমরা দেখেছি স্বাধীনতার পরাজিত শত্রুরা কীভাবে তাদের স্বাধীনতা পরবর্তীতে মাথা তুলে প্রকৃত স্বাধীনতার মুক্তিকামী মানুষকে নাজেহাল করেছেন, বা তাদের প্রভাব বিস্তার সমাজে কি পরিমান স্বাধীনতা বিমূখতার দিকে ঠেলে দিয়েছে তারই কিছু আমরা গল্পকারদের গল্পে দেখতে পাই।

‘ছোট গল্পের ভেতর লুকিয়ে থাকে দীর্ঘমেয়াদী কম্পোজিশন’ এ শিরোনামে দীর্ঘ একটি মুক্তগদ্য লিখেছেন, শিমুল মাহমুদ। শিমুল মাহমুদের গদ্য লেখার ধরণটাই যেন আলাদা। তার গদ্য পাঠ করতে করতে আমি হারিয়ে যাই অন্য কোন খানে। তন্ময়তার সাথে নিবিষ্ট হয়ে আমি তার গদ্যলেখা পড়ি। আমার বিশ্বাস পাঠকরা নিশ্চয় আমার সাথে একমত হবেন। রবীন্দ্রনাথ বলয়ের গল্পকাররা যেমনটি বলেন, ‘‘ছোট গল্পের মধ্যে দু’টো কাহিনী থাকবে, তিন চারটি বানানো ঘটনা থাকবে আর ছোটখাট একটা নাটকীয় ইমেজ, বাঙালি সেন্টিমেন্ট, লোকবিশ্বাস আর বিরহবোধ অথবা সংসার বৈরাগ্য অথবা ‘বড় প্রেম শুধু কাছেই টানে না ইহা দূরেও ঠেলিয়া দেয়’’ এমনতরো বিবিধ অনুষঙ্গ; এ ধরনের কোটেশন টানা হয়েছে। অনেক ভালোলাগা একটি মুক্ত গদ্য পাঠ করলাম। অভিনন্দন শিমুল মাহমুদকে আর ধন্যবাদ সম্পাদক ‘দৃষ্টি’কে। কারণ, এ সংখ্যাটির সাথে সাযুজ্য রেখে শিমুল মাহমুদের প্রাসঙ্গিক এ গদ্য লেখাটি চলতি সংখ্যার বিষয়ের সাথে পূর্ণতা এনে দিয়েছে। অনেক ধন্যবাদ এ ধরনের একটি লেখাকে উপজীব্য করে তুলে ধরার জন্য।

কবি ও কবিতা এ শিরোনামে কবিতা ভাবনা নিয়ে নিজ নিজ দৃষ্টিভঙ্গিতে লিখেছেন, আমিনুল হক ও তপন বাগচী। দু’জনের দু’ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গিতে কবিতা ভাবনা পাঠককে আনন্দ দেবে। পাঠক তন্ময় হয়ে তাদের অনুভ‚তির বোধে নিবিষ্ট হয়ে এক নিঃশ্বাসে পাঠ করে ফেলবেন। দুজনেই কবি, আবার দু’জনের কবিতাময় সুবাস মেশানো গদ্যলেখা কবিতার আমেজ থাকে। যা এখানেও দৃশ্যমান পাঠকমাত্রই তা অনুভব করবেন। কবি আমিনুল হক ও তপন বাগচীকে অনেক ধন্যবাদ আমরা তাদের একটি ভাবনার সাথে যুক্ত হতে পারলাম।

এ সংখ্যায় গল্প লিখেছেন, জুলিয়ান সিদ্দিকী, সালাম সালেহ উদদীন, কুলদা রায়, কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, স.ম. শামসুল আলম, সমীর আহমেদ, মনি হায়দার, মণিকা চক্রবর্তী, শাহনেওয়াজ বিপ্লব, শাশ্বত নিপ্পন, মোজাফ্ফর হোসেন, জয়দীপ দে ও রিপনচন্দ্র মল্লিক।

প্রয়াত কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর’র ‘আমাদের জয়বাংলা’ গল্পটি রয়েছে এ সংখ্যায়। গল্পটির নামকরণই বলে বলে দিচ্ছে গল্পের প্লট কি নিয়ে প্রস্তুত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শাণিত আমাদের প্রিয় সেøাগান ‘জয়বাংলা’, আর এ গল্পের নামকরণও ‘ আমাদের জয়বাংলা’। গল্পকার স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদ সন্তানের একটি পুরোনো খাতাকে এক মায়ের বুকে আকড়ে রাখার মধ্যে অনেক কিছুরই ইঙ্গিত দিতে চেয়েছেন। যা অত্যন্ত সময়োপযোগী একটি গল্প। স্বাধীনতা পরবর্তীতে এ ধরনের গল্পের সাথে পাঠকের যোগসূত্র ঘটিয়ে আমাদের প্রিয় একজন গল্পকার আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। আমি তাঁর এ লেখার আলোচনার সময় তাঁকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।

জুলিয়ান সিদ্দিকী লিখেন, ‘মুসুল্লি’ নামের গল্পটি। চমৎকারভাবে গল্পকার প্রাঞ্জল ভাষাশৈলীতে সমাজের মুখোশধারীদের মুখোশ উন্মোচন করেছেন। ধর্মের নামে বক ধার্মিকেরা যে কোরআন, হাদিসের অপব্যাখ্যা করে সাধারণ মানুুষের মননে ঢুকে পড়ে তারই একটি সময়পোযোগী গল্প তিনি উপহার দিয়েছেন। আমার অনেক ভালো লেগেছে গল্পটি, নিশ্চয় পাঠক এ গল্প পাঠে কিছু ইঙ্গিত খুঁজে পাবেন।

রিপনচন্দ্র মল্লিকের ‘আত্মপরিচয়’ গল্পটি স্বাধীনতা যুদ্ধে ‘যুদ্ধশিশু’ অর্থাৎ যুদ্ধের ভয়াবহতার মধ্যে নির্যাতিত আমাদের যে সব মায়েরা সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন তাদেরই একটি গল্প। এটি কোন গল্প নয়। এটি জীবন্ত কিংবদন্তিত‚ল্য এক ‘যুদ্ধশিশু’ যে তার জন্ম পরিচয়ের জন্য তেতাল্লিশ বছর পর প্রিয় মাতৃভ‚তি পা রেখেছেন। খুঁজে বেড়িয়েছেন অসংখ্য নির্যাতিত মায়েদের মুখচ্ছবিতে তার মায়ের মুখচ্ছবি। কারণ, তার জন্মের আগেই মাতৃগর্ভে সে বেয়োনেটের খোচা খেয়ে যুদ্ধের ভয়াবহতার চিহ্ন নিজ শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছেন। মেয়েটি সুদূর কানাডা থেকে এসেছেন তার আত্মপরিচয়ের জন্য, জন্ম সনদের জন্য। আহা! কী মর্মান্তিক! সত্যের এক বাস্তব রূপায়ণ তুলে ধরেছেন রিপন। পড়তে যেয়ে আমার চোখ ভিজে গেছে। রিপনকে অনেক ধন্যবাদ। রিপনের গল্পের সাথে আমি অনেক বেশি পরিচিত। রিপনের এ গল্প আমাকে আলোড়িত করেছে। রিপনের কাছ থেকে পাঠক হিসেবে আমার আরো নতুন নতুন গল্প পড়ার আকাঙ্খা জন্ম নিচ্ছে। রিপনের জন্য নিরন্তর শুভেচ্ছা।

এছাড়াও সালাম সালেহ উদদীন, কুলদা রায়, স.ম. শামসুল আলম, সমীর আহমেদ, মনি হায়দার, মণিকা চক্রবর্তী, শাহনেওয়াজ বিপ্লব, শাশ্বত নিপ্পন, মোজাফ্ফর হোসেন, জয়দীপ দে’র গল্পে পাঠক আনন্দ পাবেন। পাবেন কিছু ইঙ্গিতময় বার্তা। সকলের গল্পই আমাকে কাছে টেনেছে। গল্পপাঠে বিরক্তির উদ্রেক ঘটেনি। কোন গল্পেই তেমন মেদযুক্ত মনে হয়নি। প্রাঞ্জল ভাষায় সবগুলো গল্পই পাঠককে ভাবনার খোরাক যোগাবে। সকলের জন্য ধন্যবাদ রইলো। আমরা পাঠক হিসেবে পেলাম স্বাধীনতা-উত্তর গল্পের ভিন্ন ভিন্ন জমিনে নানা মাত্রিকতার মিশেলে উপস্থাপিত গল্পগুলো।

এ সংখ্যায় গুচ্ছ কবিতা লিখেছেন, মৃণাল বসুচৌধুরী, ইন্দ্রনীল সেনগুপ্ত, শেলী নাজ, কুমার দীপ, পিয়াস মজিদ, মানজুর মুহাম্মদ, সানাউল্লাহ সাগর, ফিরোজ আহমেদ, কাব্য মোস্তফা, ঝিল মুখার্জ্জী, আরিফ শামসুল, আরিফা জিউলি ও বঙ্গ রাখাল।

একক কবিতা লিখেছেন, দীলতাজ রহমান, শিকদার ওয়ালিউজ্জামান, মিজানুর রহমান বেলাল, আনোয়ার কামাল, অহনা নাসরিন, আশরাফ জুয়েল, সোনিয়া রূপকথা, কিংশুক ভট্টাচার্য, জোয়ানা জেসমিন, কামরুন্নাহার মুন্নী।

হিন্দিভাষার উদীয়মান লেখিকা গীতাঞ্জলী শ্রী’র গল্প ‘এই দিনগুলি’ মূল হিন্দি থেকে অনুবাদ করেছেন, মনোজিৎকুমার দাস।

কবি শিহাব শাহরিয়ার’র কবিতাগ্রন্থ ‘মাতার মেঘের ওড়াওড়ি’ নিয়ে চমৎকার একটি আলোচনা করেছেন, সম্পাদক বীরেন মুখার্জী নিজেই।

‘দৃষ্টি’ বার বার ভিন্নদৃষ্টি নিয়ে পাঠকের সামনে তার নিজস্ব স্বকীয়তা তুলে ধরছে, যা এ সংখ্যাটি হাতে নিলে পাঠক তা উপলব্ধি করতে পারবেন। সব সময়ই একটি পরিচ্ছন্ন কাজ থাকে ‘দৃষ্টি’র প্রতিটি সংখ্যার পরতে পরতে। এ সংখ্যা ‘দৃষ্টি’তেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। পত্রিকাটি একুশ বছর ধরে বের হচ্ছে, আরো দীর্ঘ হোক এর পথচলা। প্রচ্ছদটি আকর্ষণীয় হয়েছে। ছাপা ঝকঝকে। বানান বিভ্রাট নেই বললেই চলে। আসলেই পরিচ্ছন্ন একটি পত্রিকা। আমি দীর্ঘদিন থেকে দেখে আসছি বীরেন মুখার্জী অনেক যত্ন নিয়ে প্রতিটি সংখ্যা বের করেন। একটি সুন্দর সময়োপযোগী সংখ্যা পাঠকের হাতে তুলে দেয়ার জন্য সম্পাদককে ধন্যবাদ না দিলে কার্পণ্য করা হবে। ‘দৃষ্টি’র প্রতিটি সংখ্যা নতুন আঙ্গিকে পাঠকপ্রিয়তা পাক এ প্রত্যাশা করি। জয়তু ‘দৃষ্টি’।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

আহা চিকুনগুনিয়া !

ঈদের দিন ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে মেঝেতে পা দিয়ে আমিবিস্তারিত পড়ুন

‘দৃষ্টিশক্তি থাকা, কিন্তু জীবনে লক্ষ্য না থাকা অন্ধত্বের চেয়েও খারাপ’

চক্ষু, কর্ন, জিহবা, নাসিকা, ত্বক – মানুষের এই পাঁচটি ইন্দ্রিয়েরবিস্তারিত পড়ুন

ধর্ষিতা মেয়েটির গল্প

পারিনি সেদিন নিজেকে শোষকদের হাত থেকে রক্ষা করতে, পারিনি সেদিনবিস্তারিত পড়ুন

  • যা হবে কবিতা লিখে…!
  • কাটাপ্পা বাহুবলির পর এইবার হিরো আলম ড্রেস?
  • দর্শক যেভাবে বুঝলেন যে মাশরাফির স্ত্রী ক্রিকেট খেলেন না!
  • ‘‘আজকাল আইসিসির সহযোগিতা ছাড়া মাশরাফি-তামিমদের বিপক্ষে জেতা যায় নাকি’’
  • গরু খোঁজা (একটি গল্প)
  • যেসব খাতে ভ্যাট বসানো অতি জরুরি
  • ভাড়া ১০০ টাকা, ভ্যাট-ট্যাক্স মিলে ২৪০!
  • দুদকের হয়ে কেস লড়তে চান কেডি পাঠক
  • শততম টেস্টে আম্পায়ার কেন ওই রকম করলেন?
  • রিক্সা চালাই বিয়ে করেছিলাম, আমার মতই এক গরীবের মেয়েকে বউ করে এনেছিলাম —
  • নারীর দাস জীবন এবং একজন সাদিয়া নাসরিন
  • আজকের এ দিনে রক্তে রঞ্জিত হয়েছিলো ঢাকার রাজপথ