নামের মিলে আটক, ৫ ঘণ্টা পর মুক্ত ঢাকা ট্রিবিউনের সাংবাদিক
নামের মিল থাকায় আটকের প্রায় ৫ ঘণ্টা পর মুক্তি পেয়েছেনে ঢাকা ট্রিবিউনের আলোকচিত্রী মেহেদি হাসান।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাত সাড়ে দশটার দিকে ডিবি কার্যালয় থেকে ছাড়া পান তিনি। পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশ তাকে মুক্তি দিয়েছে।
এর আগে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাস্পাস এলাকায় ভাঙচুরের অভিযোগে একটি মামলায় ঢাকা ট্রিবিউনের আলোকচিত্রী মেহেদি হাসান সাগরকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার দিকে রাজধানীর কাকরাইল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
মেহেদি সেসময় সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের ছাদখোলা বাসযাত্রার ছবি তোলার জন্য অফিসিয়াল অ্যাসাইনমেন্টে ছিলেন।
মামলার এজাহারে দেখা যায়, ১৩৪ নম্বর আসামি হিসেবে ঢাবির পালি ও বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের মেহেদি হাসান সাগরের নাম রয়েছে। সেখানে শেখ মুজিব হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবে তার পরিচয় দেয়া রয়েছে।
সাংবাদিক মেহেদি হাসান ছাত্রজীবনের শুরুর দিকে হলে ওঠার প্রয়োজনে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হলেও সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না। এজাহারে উল্লেখিত আসামি তারই সহপাঠী।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি ও বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগের এডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার বিশ্বজিত বড়ুয়া ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “মেহেদি হাসান সাগর নামের দুইজনই আমাদের বিভাগের শিক্ষার্থী। তাদের দুইজনকেই চিনি। এদের মধ্যে একজন সাংবাদিক অপরজন রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।”
জুলাই মাসের ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকা ট্রিবিউন ছাড়াও এপি’সহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার হয়েও তিনি কাজ করেন বলে তার সহকর্মীরা জানান ।
নিউইয়র্কভিত্তিক বার্তা সংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেসের ঢাকা অফিসের একজন দায়িত্বশীল জানান, মেহেদি তাদের সঙ্গে খণ্ডকালীন (স্ট্রিংগার) হিসেবে কাজ করেন। জুলাই-আগস্টে এপি টেলিভিশনের জন্য তার কাছ থেকে ভিডিও ফুটেজ নিয়েছিলেন তারা।
মেহেদি হাসানের গ্রেপ্তারের বিষয়ে ছাত্র আন্দোলনের ছবি তুলে আলোচিত ফটোসাংবাদিক জীবন আহমেদ তার ফেইসবুকে লিখেছেন, “যে ছেলেটি জুলাইয়ে ক্যামেরা হাতে ছোটাছুটি করত, আজ সেই ছেলেটা হত্যা মামলার আসামি!”
এ বিষয়ে ডিএমপির জনসংযোগ বিভাগের উপ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান সন্ধ্যায় বলেন, “মেহেদির নামে শাহবাগ থানায় মামলা আছে। এখন ওরা (ঢাকা ট্রিবিউন) যেটা ক্লেইম করেছে সেটা যাচাই-বাছাই চলছে।”
এরপর যাচাই-বাছাই শেষে রাতে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এর আগে মেহেদির হলের একজন বন্ধু নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলছেন, ওই মামলাটির ১৩৪ নম্বর আসামি হচ্ছেন হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদি হাসান সাগর। আর ফটোসাংবাদিক সাগর হল ছাত্রলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ছিলেন। আন্দোলনের পুরোটা সময় ঝুঁকি নিয়ে ছবি তুলেছেন সাগর। আর হল ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাগরকে ক্যাম্পাসে রাম দা হাতে দেখা গেছে, যার ছবি ও ফুটেজও রয়েছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে সাংগঠনিক সম্পাদক সাগরকে ধরিয়ে দিতে পোস্টারও করা হয়।
ভোরের কাগজের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি রেজাউল আলম রেজা জানান: “মেহেদি আমাদের বন্ধু, ও পুরো আন্দোলন সামনে থেকে কাভার করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের করা প্রথম মামলার ১৩৪ নম্বর আসামি হিসেবে ওকে ধরা হয়েছে। দুইজনের নামই মেহেদি হাসান সাগর, ডিপার্টমেন্ট ও সেশন একই৷ কিন্তু এজহারে যার নাম আছে তার পদবি ছিল সাংগঠনিক সম্পাদক। আর যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ছিল, অনেক আগে রাজনীতি ছেড়ে ফটো সাংবাদিকতা করছে।”
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
পোষ্য কোটাকে ‘লাল কার্ড’ দেখালেন রাবি শিক্ষার্থীরা
পোষ্য কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব করায় রাজশাজী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি)বিস্তারিত পড়ুন
ভারতীয় হাইকমিশনারকে দেওয়া বিএনপির ৩ সংগঠনের স্মারকলিপিতে যা রয়েছে
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা, জাতীয় পতাকারবিস্তারিত পড়ুন
বাশার আল-আসাদের পতনের নায়ক কে এই জোলানি?
সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন ইসলামপন্থী সশস্ত্রবিস্তারিত পড়ুন