‘বাজপেয়ীর অনুরোধে ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানকে ছাড় দিয়েছিল’
সাবেক ভারতীয় সেনাপ্রধান জেনারেল (অব.) ভি. পি. মালিক জানিয়েছেন, কারগিল যুদ্ধের সময় ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানে ঢুকে হামলা চালাতে চেয়েছিল। আন্তর্জাতিক চাপ ও ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর অনুরোধে সেনাবাহিনী সে যাত্রায় ‘পাকিস্তানকে ছাড় দিয়েছিল’।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে বিরোধী দল এর প্রমাণ চাওয়ায় তারও তীব্র সমালোচনা করেন তিই। সোমবার ভাদোদারায় সুইচ গ্লোবাল এক্সপো-তে নেতৃত্ব ও প্রেরণা বিষয়ক এক ভাষণে ভি. পি. মালিক এসব কথা বলেন।
মালিক দাবি করেন, ১৯৯৯ সালে কারগিল যুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণরেখা পার হয়ে হয়ে পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে ঢুকে পাকিস্তানি বাহিনীকে সেখান থেকে সরিয়ে দিয়ে চেয়েছিল। কিন্তু বাজপেয়ি তাদের থামিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “১৯৯৯ সালের ২ জুন প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ি সেনাবাহিনীকে সীমান্ত পার না হওয়ার জন্য বলেন। তৎকালীন নিরাপত্তা উপদেষ্টা ব্রজেশ মিশ্র এক সাক্ষাৎকারে বলেন, সেনাবাহিনীকে ‘আজ সীমান্ত পার না হওয়ার জন্য বলা হয়েছে, তবে আগামীকাল কী হবে তা আমরা জানি না’।”
মালিক আরও জানান, বাজপেয়ির ওই সিদ্ধান্তে তিনি এবং তার সেনাবাহিনী খুশী ছিলেন না। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য আমাদের রাজি করাতে বাজপেয়িকে একদিনে তিন তিনটি দীর্ঘ বৈঠক করতে হয়েছিল। আমি এবং সেনা সদস্যরা এতে অখুশী ছিল। ওই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে একটা বড় কারণ ছিল, আন্তর্জাতিক চাপ। আরেকটা কারণ ছিল আসন্ন নির্বাচন। শেষ পর্যন্ত দেখা গেল, এটাই ছিল সঠিক সিদ্ধান্ত।’
মালিক যুদ্ধের হুমকি দিয়ে বলেন, ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি পাকিস্তানের ওপর চাপ প্রয়োগের জন্য আমাদের অনুরোধ করার কিছু নেই। আমাদের অবশ্যই তাদেরকে (পাকিস্তান) সতর্ক করতে হবে, যদি তারা এমনটাই করতে থাকে, তাহলে আমাদের যুদ্ধে যেতে হবে।’
পরে এক দর্শকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানকে নিয়ে আমি আশাবাদী নই যে, সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের পর তারা বদলে যাবে। আমাদেরকে অবশ্যই সামরিক অভিযানের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’ ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের কাছে ওই ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর প্রমাণ চাওয়ায় জেনারেল (অব.) মালিক কংগ্রেস এবং আম আদমি পার্টির নেতার তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের বলতে চাই, যখন জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নটি সামনে আসে, তখন সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে। তবে যেসব রাজনীতিকদের জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই, তাদের এ নিয়ে কথা বলা উচিত না।’
সম্প্রতি আম আদমি পার্টির (এএপি) নেতা ও দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর প্রমাণ চেয়ে বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে একশোটি বিষয়ে মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু পাকিস্তানের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গিকে শ্রদ্ধা করি আমি। পাকিস্তানের দাবি মিথ্যে প্রমাণের জন্য ওই অভিযানের ভিডিও প্রকাশ করার আহ্বান জানাচ্ছি।’
প্রসঙ্গত, পাঠানকোটের সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলা এবং পরবর্তীতে হিজবুল নেতা বুরহান ওয়ানিকে কথিত এনকাউন্টারে হত্যার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বাড়তে থাকে। সাম্প্রতিক উরি সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার পর আবারও জয়েশ ই মোহাম্মদের সংশ্লিষ্টতার প্রসঙ্গ তুলে পাকিস্তানকে দায়ী করতে শুরু করে ভারত। পারস্পরিক দোষারোপ এবং এ নিয়ে আন্তর্জাতিক তৎপরতার এক পর্যায়ে ২৮ সেপ্টেম্বর (বুধবার) রাতে নিয়ন্ত্রণ রেখা পেরিয়ে ভারতের সেনারা সন্ত্রাসী ঘাঁটিগুলোতে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক চালানোর দাবি করে। ওই অভিযানে ৯ পাকিস্তানি সেনা ও ৩৫ থেকে ৪০ জঙ্গি নিহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়। – ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন