বিপিএলে বিদেশিরা ক্রিকেটারই যখন ভরসা
ঘরোয়া টুর্নামেন্ট, ঘরের মাঠ, বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই দেশি। তবু ব্যাটে-বলে রাজত্ব বিদেশি ক্রিকেটারের! বিপিএলের চতুর্থ আসরের ২৪টি ম্যাচ শেষে হিসাবটা তেমনই দাঁড়িয়েছে। বেশিরভাগ ম্যাচেই দেখা যাচ্ছে বিদেশি ক্রিকেটারদের জয়জয়কার। ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলোর কাছেও তাই ভরসার জায়গা হয়ে উঠছেন মোহাম্মদ নবী, শহীদ আফ্রিদি, মোহাম্মদ শাহজাদরা।
দেশি ক্রিকেটাররাও পথ দেখাচ্ছেন। তবে সেটা হাতে গোনা কয়েকজনের মধ্যে সীমাবদ্ধ। ম্যাচ জেতানোর দিক থেকেও বিদেশি ক্রিকেটারদের সাথে কুলিয়ে উঠতে পারছেন না স্থানীয় ক্রিকেটাররা। ২৪ ম্যাচ শেষে পরিসংখ্যান তাই বলে। ২৪ ম্যাচের মধ্যে ১৩ ম্যাচে ব্যাটে বলের লড়াইয়ে রাজত্ব করেছেন বিদেশি ক্রিকেটাররা। ১৩ ম্যাচে তাদের হাতেই উঠেছে ম্যাচসেরার পুরস্কার। সেখানে বাংলাদেশি ক্রিকেটাররা ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন ১১ ম্যাচে।
আরেকটু নির্দিষ্ট করে বলা যায়। কয়েকটি দল আছে যারা কেবল বিদেশি ক্রিকেটারদের দিকেই তাকিয়ে। এর মধ্যে অন্যতম চিটাগং ভাইকিংস। প্রথম সাত ম্যাচে তিনটি জয় পায় তামিম ইকবালের দল। আর এই তিন ম্যাচেই কান্ডারির ভূমিকায় আফগানিস্তান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী। তিন ম্যাচেই ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন তিনি। চিটাগংয়ের শেষ জয়ের নায়কও বিদেশি ক্রিকেটার। ডোয়াইন স্মিথ ৬৯ রানের ইনিংস খেললেও ৬৩ রানের বিধ্বংসী ইনিংসের সুবাদে ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন শোয়েব মালিক।
রংপুর রাইডার্সেও একই দৃশ্য। বিদেশি ক্রিকেটারের হাত ধরেই জিতে চলেছে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ দলটি। ছয় ম্যাচে পাঁচ জয় পেয়েছে রংপুর। এর মধ্যে চার ম্যাচেই বিদেশিদের জয়জয়কার। ব্যাট হাতে দারুণ করে রংপুরকে দুই ম্যাচে জিতিয়েছেন আফগানিস্তান উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শাহজাদ। দুই ম্যাচের ম্যাচসেরা হয়েছেন শহীদ আফ্রিদি। বাকি এক ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জেতেন মোহাম্মদ মিথুন।
বরিশাল বুলস তিন ম্যাচে জিতেছে। এরমধ্যে তারা দুটি জয়ে পেয়েছে শ্রীলঙ্কান অলরাউন্ডার থিসারা পেরেরা ও ইংলিশ ক্রিকেটার দাওইদ মালানের হাত ধরে। রাজশাহীর দুটি জয়ের নায়কও বিদেশি। রাজশাহীর দুই জয়েই ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতেন ইংলিশ অলরাউন্ডার সামিত প্যাটেল। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স যে একটি মাত্র ম্যাচ জিতেছে সেখানেও সেরা খেলোয়াড় হয়েছেন পাকিস্তানি পেসার সোহেল তানভীর।
তবে বিদেশিদের রাজত্বের ভিড়ে ব্যতিক্রম খুলনা টাইটান্স ও ঢাকা ডায়নামাইটস। এই দুই দলের সবকটি জয়ে সর্বোচ্চ অবদান রেখেছেন দেশি ক্রিকেটাররা। এদের সব জয়েই ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন বাংলাদেশি ক্রিকেটার। খুলনার পাঁচ জয়ের তিনটিতেই ম্যাচসেরা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বাকি দুই ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় শফিউল ইসলাম ও মোশাররফ রুবেল। একইভাবে ঢাকার চার জয়ের ম্যাচসেরা মেহেদি মারুফ (২ ম্যাচে), মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও পেসার মোহাম্মদ শহীদ।
বল হাতে এখন পর্যন্ত বিদেশি বোলাররাই বেশি উজ্জ্বল। এখন পর্যন্ত সেরা পাঁচ বোলারের মধ্যে বিদেশিই তিনজন। ১৪ উইকেট নিয়ে সবার ওপরে চিটাগং ভাইকিংসের আফগানিস্তান অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবী। সমান সংখ্যক উইকেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ঢাকা ডায়নামাইটসের পেসার মোহাম্মদ শহীদ।
খুলনা টাইটান্স পেসার শফিউল ইসলাম ১৩ উইকেট নিয়ে আছেন তৃতীয় স্থানে। সেরা পাঁচের তালিকায় বাকি দুজন পাকিস্তানি ক্রিকেটার। ব্যাট হাতে বুমবুম খেতাবজয়ী রংপুর রাইডার্সের পাকিস্তানি অলরাউন্ডার শহীদ আফ্রিদি ১১ উইকেট নিয়ে আছেন চার নম্বরে। সমান সংখ্যক উইকেট নিয়েছেন আফ্রিদির স্বদেশি জুনায়েদ খানও। খুলনা টাইটান্সের হয়ে খেলা বাঁহাতি এই পেসার আছেন পাঁচ নম্বরে।
তবে ব্যাটিংয়ে এখন পর্যন্ত রাজত্ব বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদেরই। সেরা পাঁচে বিদেশি কোনো ব্যাটসম্যানকে ঢুকতেই দেননি মেহেদি মারুফ, মুশফিকুর রহিম, শাহরিয়ার নাফিসরা। সাত ম্যাচে ২৪৪ রান নিয়ে সবার ওপরে ঢাকা ডাইনামাইটস ওপেনার মেহেদি মারুফ। সমান ম্যাচে ২৩৬ রান নিয়ে পরের জায়গাটি দখলে রেখেছেন বরিশাল বুলস অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।
বরিশাল বুলসের আরেক ব্যাটসম্যান শাহরিয়ার নাফিসও ব্যাট হাতে রানের দেখা পাচ্ছেন। ২২৫ রান নিয়ে তিন নম্বরে আছেন তিনি। এক ম্যাচ বেশি খেলা চিটাগং ভাইকিংস অধিনায়ক তামিম ইকবাল ২২৩ রান নিয়ে চার নম্বরে। এছাড়া ছয় ম্যাচে ২১৬ রান করা রাজশাহী কিংস ওপেনার মুমিনুল হক পাঁচ নম্বরে। রাজশাহীর প্রধান ব্যাটিং অস্ত্র সাব্বির রহমান ২১০ রান নিয়ে আছেন ছয় নম্বরে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
আলোক স্বল্পতায় তৃতীয় দিনের খেলা শেষ, বাংলাদেশের প্রয়োজন আরও ৩৫৭
চেন্নাই টেস্টে ভারতের দেওয়া পাহাড়সম ৫১৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতেবিস্তারিত পড়ুন
খেলার মাঝেই সন্তানের সুসংবাদ, উইকেট পেয়ে উদযাপন শাহিন আফ্রিদির
রাওয়ালপিণ্ডিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে ব্যস্ত পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার শাহিনবিস্তারিত পড়ুন
বন্যার্তদের সহায়তায় এবি পার্টির কেন্দ্রীয় সমন্বয় সেল গঠন
সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় দুর্গত মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যেবিস্তারিত পড়ুন