সোমবার, নভেম্বর ১১, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

বিপুল সম্পদ গড়েছেন পদত্যাগী অধ্যক্ষ, দুদকে অভিযোগ

ভুয়া সার্টিফিকেট, তথ্য গোপন করে এমপিওভুক্ত হওয়া, নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন গাজীপুরের টঙ্গী সিরাজ উদ্দিন সরকার বিদ্যানিকেতন অ্যান্ড কলেজের সদ্য পদত্যাগকারী অধ্যক্ষ ওয়াদুদুর রহমান।

গত ১৯ আগস্ট প্রতিষ্ঠানটি থেকে অধ্যক্ষের পদ থেকে তিনি সেচ্ছায় পদত্যাগ করেন। প্রতিষ্ঠানে তিনি ২০০৪ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত ২০ বছর চাকরিকালীন সময়ে লুটপাটের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের বিপুল অর্থ তছরুপ করেছেন। এর মধ্যে গত আড়াই বছরে শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ছাত্রদের বেতন, পরীক্ষার ফিসহ বিভিন্নভাবে উপার্জিত অর্থ থেকে তিনি প্রায় তিন কোটি টাকা তছরুপ করেছেন। এসব অর্থে কলেজের পাশেই ছয়তলা ভবন করেছেন।

জানা গেছে, দুই ছেলেকে উচ্চ শিক্ষার জন্য অস্ট্রেলিয়ায় পাঠিয়েছেন। উত্তরায় কিনেছেন ফ্ল্যাট। গ্রামের বাড়ি গাজীপুরের পূবাইলের বিনদান গ্রামে করেছেন বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ি। আছে ব্যক্তিগত দামি প্রাইভেট কার।

ওয়াদুদুর রহমানের বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ি

ওয়াদুদুর রহমানের বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স বাড়ি

সম্প্রতি সিরাজ উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক এই অধ্যক্ষের নানা অনিয়ম ও অবৈধভাবে বিপুল অর্থ হাতানোর ফিরিস্তি তুলে ধরে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ৭৪ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মকর্তা। একই অভিযোগ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড ও জেলা প্রশাসককে অবহিত করেছেন শিক্ষকরা। এরই মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে।

দুদকে দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ওয়াদুদুর রহমান ২০০৭ সাল হতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত একটানা ১৭ বছর নিয়মিত কমিটির পরিবর্তে পছন্দের ব্যক্তি দ্বারা গঠিত এডহক কমিটি দিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করেন; যার মূল উদ্দেশ্য ছিল দুর্নীতিকে আড়াল করা। এমনকি শিক্ষক প্রতিনিধিও তার পছন্দ মতো মনোনয়ন করা হতো। গণতান্ত্রিক কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হতো না।

২০০৪ সালে তিনি প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর এমপিওভুক্ত হওয়ার জন্য ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদ দাখিল করেন। তিনি ১৯৯৫ হতে ২০০৪ পর্যন্ত একটি এনজিওতে কর্মরত ছিলেন। কিন্তু নিয়োগের সময় তিনি ১৯৯৭ সাল থেকে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে ভুয়া অভিজ্ঞতার সনদ দাখিল করেন।

উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত সফিউদ্দিন সরকার একাডেমি অ্যান্ড কলেজে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন অথচ মাউশির প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে কমপক্ষে তিন বছরের অভিজ্ঞতাসহ শিক্ষকতায় নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যালয়ে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন। যা তার ছিল না।

তিনি তথাকথিত কিছু স্থানীয় পত্রিকার সাংবাদিকদের পিছনে নিজের স্বার্থসিদ্ধির লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠানের অর্থ ইচ্ছামতো ব্যয় করে প্রতিষ্ঠানের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির কারণ ঘটিয়েছেন। প্রাপ্ত ভাউচার অনুসারে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ১৯ আগস্ট পর্যন্ত সাংবাদিকদের প্রদান করেন ৩ লাখ ৫২ হাজার টাকা।

তিনি পঞ্চম, অষ্টম, দশম জেনারেল, দশম ভোকেশনাল এবং দ্বাদশ শ্রেণির বিশেষ ক্লাস থেকে অবৈধভাবে কোনো স্বাক্ষর ব্যতীত লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। ২০২৪ সালের এসএসসি, এসএসসি ভোকেশনাল ও এইচএসসি পরীক্ষায় বিশেষ ক্লাস থেকে (এসএসসি জেনারেল চার লাখ ৯০ হাজার ৬০০ টাকা, এসএসসি ভোকেশনাল ৬০ হাজার ৬৫০ টাকা এবং এইচএসসি ৭ লাখ ৭৯হাজার টাকা) ১৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে দুদকে দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে।

ওয়াদুদুর রহমান প্রতিষ্ঠানের অর্থে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের নানা নেতাকর্মীদের খুশি করতে যেকোনো অনুষ্ঠানই অতিরঞ্জিতভাবে উদ্‌যাপন করতেন। এবং স্বীয় স্বার্থ চরিতার্থ করার নিমিত্তে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দীর্ঘসময় প্রতিষ্ঠানে অবস্থান করতে বাধ্য করা, রাজনৈতিক স্লোগান দেওয়ানোর মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, ওয়াদুদুর রহমান এসএসসি ভোকেশনাল (৯ম ও ১০ম শ্রেণির) শিক্ষার্থীদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাটাচমেন্ট পরীক্ষার টাকা আত্মসাৎ করার জন্য বিধিবহির্ভূতভাবে নিজের প্রতিষ্ঠানে (ব্রিটিশ আমেরিকান টেকনোলজি অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট, আউচপাড়া, টঙ্গী, গাজীপুর) এনরোল করাতেন। তাদের ৬ সপ্তাহ বাস্তব প্রশিক্ষণ বাবদ শিক্ষার্থী প্রতি ১ হাজার টাকা হারে ফি আদায় করতেন এবং যার বেশিরভাগ টাকা নিজে আত্মসাৎ করেছেন।

২০২০ সনের এইচএসসি পরীক্ষা কোভিড-১৯ এর কারণে অনুষ্ঠিত হয়নি। শিক্ষাবোর্ড পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপের টাকা স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে ফেরত দেয়। কিন্তু সাবেক অধ্যক্ষ এ বিষয়টি দীর্ঘ চার বছর প্রতিষ্ঠানের সকলের নিকট গোপন রেখেছেন। এমনকি শিক্ষার্থীদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি। কেন, কি উদ্দেশ্যে এ বিষয়টি গোপন করেছিল, তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা আমাদের জানা নেই। এজন্য শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে বিক্ষোভ করেছে।

দুদকের পাঠানো অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিনামূল্যে পাঠ্য পুস্তক ব্যতীত কোনো বই পাঠ্য করা যাবে না। তার পরেও বিধিবহির্ভূতভাবে শিশু শ্রেণি হতে নবম শ্রেণি পর্যন্ত অতিরিক্ত দু’য়ের অধিক বই পাঠ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। যার ফলে অভিভাবকদের ওপর অতিরিক্ত আর্থিক চাপ পড়েছে। অতিরিক্ত বইয়ের জন্য বিভিন্ন প্রকাশনী থেকে প্রাপ্ত বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন ওয়াদুদুর রহমান।

এছাড়া কোনো প্রকার পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই কলেজ ও স্কুল শাখায় কিছু সংখ্যক তার নিজস্ব প্রার্থীকে প্রভাষক ও শিক্ষক পদে নিয়োগ প্রদান করেছেন, যা সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূত।

মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও ভোকেশনাল শাখার অভ্যন্তরীণ এবং পাবলিক পরীক্ষার ব্যবহারিক ফিস হিসেবে নেওয়া অর্থ থেকে বিষয় শিক্ষককে নামমাত্র সম্মানী দিয়ে বেশির ভাগ টাকা তিনি একাই আত্মসাৎ করেন।

তাছাড়া সরকারি অডিট নিষ্পত্তির জন্য অডিট অফিসার প্রলয় কুমারকে ২০১৮ সালে ১৭ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়ার নাম করে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের চাকরির ভয় দেখিয়ে (প্রতি শিক্ষকের ২ মাসের সরকারি বেতনের টাকা) তাদের কাছ থেকে আদায় করেন। তবে সেই অডিটের রিপোর্ট বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের কেউ কিছুই জানেন না। নিজের বাছাই করা কমিটির মাধ্যমে ওয়াদুদুর রহমান নিজের প্রাতিষ্ঠানিক বেতন ২৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে নিয়েছেন।

অভিভাবক ও স্থানীয়রা বলছেন, আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে এসব করেছেন অধ্যক্ষ ওয়াদুদ। বছরের পর বছর নানা অনিয়ম করেও তিনি পার পেয়ে গেছেন। এখন ক্ষমতার পটপরিবর্তন হওয়ায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। না হলে এটি একটি বাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। যেটি কোনোভাবেই কাম্য নয়।

অভিযোগের বিষয়ে ওয়াদুদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি একটা মিটিংয়ে আছি। পরে কথা বলব।’

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

তারেক রহমান: ভোটের অধিকার নিশ্চিত না হলে বাজার সিন্ডিকেট মুক্ত করা অসম্ভব

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “স্বৈরাচার বা ফ্যাসিবাদমুক্ত পরিবেশেওবিস্তারিত পড়ুন

জামায়াত সেক্রেটারি: দেশে আরেকটি বিপ্লব হবে, সেটি হবে ইসলামি বিপ্লব

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, “৫ আগস্টেরবিস্তারিত পড়ুন

ফখরুল: বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু চলবে না

বাংলাদেশে এখন গণতন্ত্র ছাড়া অন্য কিছু চলবে না বলে মন্তব্যবিস্তারিত পড়ুন

  • জামায়াত আমির: সুষ্ঠু নির্বাচনের আগে রাষ্ট্র সংস্কার জরুরি
  • ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু
  • গয়েশ্বর: নির্বাচিত সংসদ ছাড়া সংবিধানের কোনো পরিবর্তন করা যায় না
  • সেনা প্রধান: সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে সেনাবাহিনী সদা প্রস্তুত
  • সাইবার নিরাপত্তা আইন বাতিলে নীতিগত সিদ্ধান্ত
  • অক্টোবরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২.৬৬%
  • গবেষণা: দেশ ছেড়ে অন্য দেশে চলে যেতে চান ৫৫% তরুণ
  • বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন অবস্থানের পরিবর্তন হবে না, অভিমত পররাষ্ট্র উপদেষ্টার
  • দেশে শরিয়াহভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ইস্যুর দাবিতে লিগ্যাল নোটিশ
  • ভরিতে ৩,৪৫৩ টাকা কমলো স্বর্ণের দাম
  • সরকারি হজ প্যাকেজ ‘প্রত্যাখান’ করে পাল্টা প্যাকেজ এজেন্সিগুলোর
  • সমালোচনার মুখে সাদ্দামের সাক্ষাৎকার স্থগিত করলো ‘ঠিকানা’