ব্রাজিল–আর্জেন্টিনাই নেই কোপা আমেরিকায়!
১১ জুন থেকে শুরু হচ্ছে কোপা আমেরিকা, দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নামবে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মতো দেশগুলো। এ নিয়ে শুরু হলো আমাদের নতুন ধারাবাহিক। চতুর্থ পর্বে আজ পড়ুন ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দুই জনপ্রিয় দল ছাড়াই কেন আয়োজন করা হয়েছিল কোপার আসর ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা আছে বলেই গভীর রাতে ঢুলুঢুলু চোখে টিভির সামনে বসবেন আপনি। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার মতো দল খেলে বলেই বাংলাদেশসহ আরও অনেক দেশে বিশ্বকাপের পর সবচেয়ে আকর্ষণীয় টুর্নামেন্টের নাম কোপা আমেরিকা। অথচ ভাবুন তো, কোপা আমেরিকা হচ্ছে কিন্তু ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাই নেই! শতবর্ষী পুরোনো দক্ষিণ আমেরিকার শ্রেষ্ঠত্বের এই টুর্নামেন্টে একাধিকবার ঘটেছিল এমন ঘটনা।
১৯১৬ সাল থেকে শুরু হওয়া কোপায় দশবার টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেয় ব্রাজিল। নিরাপত্তাজনিত কারণে সরে যাওয়া তো ছিলই, আবার চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে এই নিশ্চয়তা না-থাকার কারণেও অনেক সময় অংশ নেয়নি সেলেসাওরা। এ যে সম্মানের প্রশ্ন! …অংশগ্রহণই বড় কথা—এগুলো স্রেফ কথার কথা।
১৯২৪ সালে উরুগুয়েতে হওয়া কোপা আমেরিকা টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেয় ব্রাজিল। অথচ এর আগে দুইবার কোপা চ্যাম্পিয়ন হয় ব্রাজিল। ফলে চার দল নিয়ে হওয়া সে টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় উরুগুয়ে। ১৯২৫ সালের টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে রানার আপ হলেও এর পরের টানা চার কোপায় অংশ নেয়নি ব্রাজিল। ১৯২৬, ১৯২৭, ১৯২৯ এবং ১৯৩৫ সালের কোপাতেও খেলেনি।
এর পরের ১৯৩৭ সালের কোপা খেলে আবারও রানার্স আপ হয় ব্রাজিল। কিন্তু সুখে থাকতে ভূতে কিলায়। পরের দুই কোপা টুর্নামেন্ট (১৯৩৯ এবং ১৯৪১) আবারও ব্রাজিলের অনীহা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪৫ এবং পরবর্তী ১৯৪৬ সালের কোপা টুর্নামেন্টে টানা দুবার রানার্স আপ হয় ব্রাজিল। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে ১৯৪৭ সালের কোপা থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেয়। ১৯৪৯ সালের কোপাতে চ্যাম্পিয়ন এবং ১৯৫৩ সালের টুর্নামেন্টে রানার্স আপ হওয়ার পরের টুর্নামেন্টে ১৯৫৫ সালেই আবারও অংশ নেয়নি তারা।
সর্বশেষ ১৯৬৭ সালের কোপা আমেরিকা টুর্নামেন্টে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিল ব্রাজিল। ১৯৬৭ সালের টুর্নামেন্টেই প্রথমবারের মতো অংশ নেয় লাতিন আমেরিকার দেশ ভেনেজুয়েলা। ১৯৬৭ সালের পর ১৪টি কোপা আমেরিকার সবগুলোতেই খেলেছে ব্রাজিল এবং চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মোট পাঁচবার।
ব্রাজিলের তুলনায় আর্জেন্টিনা অনেক কমই নাম প্রত্যাহার করেছে কোপা থেকে। মাত্র চারবার এই টুর্নামেন্ট খেলেনি ম্যারাডোনার দেশ। সূচনালগ্ন থেকে টানা ১৪টি টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আর্জেন্টিনা। ১৯৩৭ সালের কোপায় চ্যাম্পিয়ন হয়। পরের ১৯৩৯ সালের টুর্নামেন্টে খেলেনি আর্জেন্টিনা।
নাম প্রত্যাহারের মূল কারণ ছিল নিরাপত্তা। ১৯৪১ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত পাঁচ টুর্নামেন্টে চারবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে ১৯৪৯ এবং ১৯৫৩ সালের টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিতেও দ্বিধা করেনি আর্জেন্টিনা। এর অনেক দিন পর, ২০০১ সালে কলম্বিয়ায় হওয়া কোপা আমেরিকা থেকে সরে দাঁড়ায় আর্জেন্টিনা। মূলত কলম্বিয়ায় জাতিগত দাঙ্গা এবং সহিংসতা চরম আকার ধারণ করেছিল ২০০১ সালে। এ কারণেই ফুটবলারদের নিরাপত্তা নিয়ে দ্বিধায় থাকায় কলম্বিয়ায় গিয়ে খেলতে ইচ্ছুক ছিল না আর্জেন্টিনা।
মোট ১৪ বার এই দুই দল কোপায় খেলেনি। তবে একই আসরে ব্রাজিলও নেই আর্জেন্টিনাও নেই—এমন ঘটনা মাত্র একবারই ঘটেছে। ১৯৩৯ সালের পেরুতে হওয়া কোপা আমেরিকাতে লাতিন দুই পরাশক্তি অংশ নেয়নি। ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা ছাড়াও কলম্বিয়া আর বলিভিয়া ওই টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছিল। সেবারই প্রথম কোপা খেলতে আসে ইকুয়েডর। কোপার সৌন্দর্যই হলো ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দ্বৈরথ। আশার কথা, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই টুর্নামেন্টের গুরুত্ব ও মর্যাদা বেড়েছে। কোপার জন্য জানপ্রাণ দিয়ে লড়ে ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা। ছাড় দেয় না উরুগুয়ে-কলম্বিয়া-প্যারাগুয়েও। এবার স্বাগতিক চিলিও চমকে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। এ কারণেই কোপার এত রোমাঞ্চ। এ কারণেই এবার কোপার পর্দা ওঠার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে সবাই।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন