যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে নজিরবিহীন সহিংসতা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প জয় লাভ করার পর থেকেই দেশটি জুড়ে সংহিংসতা শুরু হয়েছে। তৃতীয় রাতের মতো যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে ট্রাম্প বিরোধী বিক্ষোভ করেছে। মঙ্গলবার রাতে নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ের খবর প্রকাশের পরপরই বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে।
বিভিন্ন স্থানে ‘নট মাই প্রেসিডেন্ট’, ‘টাইম টু রিভল্ট’, ‘ফ্যাসিস্ট ট্রাম্প’, ‘রেজিস্ট রেসিজম’, ‘নো ট্রাম্প’ ইত্যাদি লেখা প্লাকার্ড হাতে বিক্ষোভকারীরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে মানুষজন বিক্ষোভে নেমেছেন, যা সাম্প্রতিক মার্কিন ইতিহাসে নজিরবিহীন। মঙ্গলবার শুরু হওয়া বিক্ষোভ বুধবার সকালে আরও জোরালো হয়ে উঠে। এমনকি হোয়াইট হাউসের সামনেও বিক্ষোভ করেন ট্রাম্প-বিরোধীরা। ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যে বুধবার সকাল থেকেই বিক্ষোভ শুরু হয়।
ওয়াশিংটন ডিসিসহ অন্য অঙ্গরাজ্যতেও এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে ওয়েস্ট কোস্ট। নিউ ইয়র্ক, বোস্টন, অস্টিন, সিয়াটল, ওকল্যান্ড,কালিফ, ফিলাডেলফিয়াসহ বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার সে বিক্ষোভ জোরালো হয়ে ২৫টি শহরে ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার দিনের বেলা সান ফ্রান্সিস্কো, লস এঞ্জেলেস ও অন্যান্য নগরীতেও বিক্ষোভ হয়। বিক্ষোভকারীদের বেশিরভাগ ছিলেন শিক্ষার্থী। তার স্কুল-কলেজ বাদ দিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন।
বার্তা সংস্থা সিএনএন এর খবরে বলা হয়েছে, তৃতীয় রাতের বিক্ষোভে সহিংসতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে। পর্টল্যান্ড, ওরেগনে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর করেছে বিক্ষোভকারীরা। বিক্ষোভের সময় গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। ট্রাম্প বিরোধী সহিংসতাকে ‘দাঙ্গা’ ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্রের পুলিশ বিক্ষোভকারীদের আচরণকে ‘অতি আগ্রাসী বিপজ্জনক বলছে।
পুলিশ বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিতে এবং আটক করতে কম ক্ষতিকর অস্ত্র ব্যবহার করেছে।’ লস অ্যাঞ্জেলস, ফিলাডেলফিয়া, ডেনভার, মিনেপোলিস, বাল্টিমোর, ডালাস, ওকল্যান্ড, ক্যালিফোর্নিয়ায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার রাতে পর্টল্যান্ডের একটি ব্যাংকে ভাঙচুর করেছে বিক্ষোভকারীরা। অকল্যান্ডে প্রায় এক হাজার বিক্ষোভকারী একটি দোকানে ভাঙচুর চালায়। এসময় তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করে।
পুলিশ বলছে, বিক্ষোভের সময় ককটেল বিস্ফোরণ ও পুলিশকে মারধরের অভিযোগে অকল্যান্ড থেকে ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া জরুরি অবস্থা লঙ্ঘনের অভিযোগে এবং রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা তৈরির কারণে বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকালপর্যন্ত লস অ্যাঞ্জেলস থেকে ১৮৫ বিক্ষোভকারীকে আটক করা হয়েছে।
বাল্টিমোরে প্রায় চারশ মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। তারা ‘আপনি আমাদের প্রেসিডেন্ট না!’ বলে শ্লোগান দেয়। তাদের হাতে ছিল বিভিন্ন প্লাকার্ড। একটিতে লেখা ছিল, ‘আমরা ঘৃণ্য ব্যক্তিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করিনি।’ শিকাগো, ডেনভার, ডালাসসহ বিভিন্ন স্থানেও বিক্ষোভ হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে বিভিন্ন নগরীতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। কয়েক জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তবে সামগ্রিকভাবে বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণ ছিল।
লস এঞ্জেলেসের মেয়র এরিক গারসেটি বিক্ষোভকারীদের প্রশংসা করেন। তবে তিনি রাস্তায় যান চলাচলে বিঘ্ন না সৃষ্টি এবং সম্পদের ক্ষতি না করতে বিক্ষোভকারীদের আহ্বান জানান।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন
বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নত রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, বিক্ষোভকারীদের অধিকার সমুন্নতবিস্তারিত পড়ুন