শনিবার, জুলাই ২৭, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

রক্তের গ্রুপ অনুযায়ী সঠিক খাবার তালিকা

রক্তের ধরণ অনুযায়ী খাবার তালিকার উদ্ভাবক হচ্ছে ন্যাচারোপ্যাথ Peter J D’Adamo। তিনি বলেছেন যে রক্তের ধরনের (A, AB, B এবং O) উপর নির্ভর করে যে খাদ্যতালিকা উদ্ভব তিনি করেছেন তা অনুসরণ করলে ওজন কমবে এবং সুস্থ থাকা যাবে। ন্যাচারোপ্যাথির সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত নই। এটি হচ্ছে এমন একটি প্রাকৃতিক চিকিৎসা বিদ্যা যা হোমিওপ্যাথি, ভেষজবিদ্যা, আকুপাংচার এবং সেই সাথে পুষ্টি ও জীবনযাত্রার মান সব কিছু মিলিয়ে কোন কিছুর সমাধান দেয়া হয়। রক্তের ধরণ নির্ভর করে খাবারের উপর সেই উদ্ভাবক অনেক গবেষণা ও লিখিত কাজ করেছেন।

১৯৯৬ সালে উনার সেই কাজ ‘Eat Right4 Your Type’ প্রকাশিত হয় এবং বেশ সাড়া জাগায়। D’Adamo দাবি করেন যে আমরা যে ধরনের খাবার খাই তা আমাদের রক্তের ধরনের সাথে রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া ঘটায়। তাই যদি আমরা আমাদের রক্তের ধরন অনুসরণ করে যদি খাবার খাই তাহলে তা আমাদের শরীর আরো বেশি দক্ষতার সাথে হজম করবে। ফলাফল স্বরূপ ওজন কমবে, দেহের শক্তি বাড়াতে সাহায্য করবে এবং রোগ প্রতিরোধ করবে।

প্রতিটি রক্তের ধরন অনুযায়ী যা খাওয়া যাবে-
রক্তের ধরনের উপর নির্ভর করবে কি কি ধরনের খাবার খাওয়া যাবে তাই ন্যাচারোপ্যাথ D’Adamo এখানে প্রতিটি ধরনের জন্য কিছু খাবার সুপারিশ করেছেন।

টাইপ A গ্রুপের রক্তের মানুষের খাবার তালিকা-
টাইপ A গ্রুপের রক্তের মানুষেরা সাধারণত নিরামিষ জাতীয় খাবারে সতেজ বেশি থাকবে। যদি তারা মাংস খায় তবে তারা ওজন হারাবে। আরো বেশি শক্তি পেতে হলে খাবার তালিকা থেকে টক্সিক জাতীয় খাবার বাদ দিতে হবে। অনেকেই ভাবেন যে খাবার তালিকা থেকে মাংস বাদ দিলে হয়তো শক্তি পাবে না। কিন্তু মাংস বাদ দিয়ে যদি সয়া প্রোটিন, শস্য জাতীয় খাবার এবং সবজি খান তাহলে তারা আরো সতেজ থাকবেন। তবে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে টাইপ A গ্রুপের রক্তের মানুষেরা খুব সংবেদনশীল তাই তাদের খাবার তালিকা যতদূর সম্ভব খাঁটি, তাজা, এবং প্রাকৃতিক ও অর্গানিক খাবারে ভরপুর থাকতে হবে।ন্যাচারোপ্যাথ D’Adamo, টাইপ A গ্রুপের রক্তের মানুষদের সংবেদনশীল প্রতিরোধক ক্ষমতা যে খাদ্য তালিকাগত সমন্বয়ের উপর নির্ভর করে তার উপর বেশ গুরুত্ব আরোপ করেছেন। কারন এই ধরনের খাবারের মাধ্যমে প্রতিরোধক ক্ষমতা সুপার চার্জ হয় এবং বিভিন্ন প্রাণঘাতী রোগের হাত থেকে রক্ষা পায়। টাইপ A গ্রুপের রক্তের মানুষদের জন্য খাদ্যশস্য, ফল ও সবজির মাঝে বিভিন্ন ধরনের শিম ও ডালবীজ জাতীয় খাবার হচ্ছে সবচেয়ে উত্তম খাবার। মাংস ছাড়া সামান্য দুগ্ধ জাতীয় খাবার রাখা যায়।

টাইপ A গ্রুপের রক্তের মানুষদের জন্য নিম্নে উল্লেখিত খাবার গুলো খুবই উপকারী-
কাঠ বাদামের দুধ, আপেল, মুলা শাক, অ্যাস্পারাগাস, বিট, কালো শিম বীজ, ব্লুবেরি, ব্রকলি, সেলারি, চেরি, খেজুর, চাইনিজ বাধাকপি, ব্রাউন ব্রেড, মৌরি, রসুন, দই, গ্রিক দই, পেয়ারা, পাতাকপি, লেটুস, মাশরুম, তফু, সয়া মিল্ক, অটস, রাসবেরি, থানকুনি শাক, রাই, তরমুজ ইত্যাদি।

টাইপ B গ্রুপের রক্তের মানুষের খাবার তালিকা-
এই ধরনের রক্তের মানুষের খাবার তালিকায় রক্তের শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি করে এমন খাবার যেমন ভুট্টা, গম, ডাল, টমেটো, চিনা বাদাম, তিলবীজ, মুরগি ইত্যাদি খাবার গুলো বর্জনের কথা বলা হয়েছে। কারন এসব খাবার খাওয়ার পর রক্তের শর্করা খুব কমে যায় যার ফলে তা বিপাক ক্রিয়াতে বাধা প্রদান করে, অলসতা বাড়ায়, শরীরে পানি ধরে রাখে এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়ার সৃষ্টি করে। তাই যখন এই ধরনের খাবার বাদ দিয়ে সঠিক খাবার গ্রহন করা শুরু করবে তখন রক্তের শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক হয়ে আসবে। ন্যাচারোপ্যাথ D’Adamo সবুজ শাক সবজি, ডিম, কিছু মাংস এবং লো-ফ্যাট দুধ খেতে পরামর্শ দিয়েছেন। যদিও মুরগি একটি চর্বি বিহীন নিরাপদ মাংস তবুও B গ্রুপের রক্তের মানুষদের এটি বর্জন করা উচিত কারন এই ধরনের মানুষের পেশী কোষে থাকে agglutinating lectin নামক একটি উপাদান। যা রক্তস্রোতে আক্রমন করে স্ট্রোকের সম্ভাবনা থাকে এবং প্রতিরোধক ক্ষমতাকে ব্যাহত করতে পারে। তাই ন্যাচারোপ্যাথ D’Adamo মুরগির পরিবর্তে অন্য মাংস যেমন গরু, ছাগল, ভেড়া ইত্যাদির মাংস খেতে বলেছেন। সে কারনে সবুজ শাকসবজি, ডিম, উপকারী মাংস, এবং কম চর্বিযুক্ত দুধ খেতে হবে। বিষাক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

টাইপ B গ্রুপের রক্তের মানুষদের জন্য গ্রহণযোগ্য ও উপকারী কিছু খাবার-
অ্যাপ্রিকট, গরুর মাংস, খাসির মাংস, ভেড়ার মাংস, মাছ,টার্কি, ডিম, গ্রিক দই, বকচয় শাক, লাল চাল, অটস, বাটার, বাধাকপি, সেলারি, লেটুস, পনির, নারিকেলের দুধ, ক্র্যানবেরি, বেগুন, লাল আলু, মাশরুম, মরিচ, মৌরি, আঙ্গুর, আম, তরমুজ, আনারস, স্ট্রবেরি ইত্যাদি।

টাইপ AB গ্রুপের রক্তের মানুষের খাবার তালিকা-
সাধারণত AB গ্রুপের মানুষ A ও B গ্রুপের মানুষের মিশ্র জিনের উত্তরাধিকারী বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত করে। দুই ধরনের রক্তের গ্রুপের বৈশিষ্ট্যই বিদ্যমান থাকে বিশেষ করে A গ্রুপের মাংস না খেতে পারা এবং B গ্রুপের রক্তের শর্করা কমে যাবার প্রবণতা।তবে AB গ্রুপের মানুষদের খাবারের ব্যাপারে নিজস্ব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার ক্ষমতা রয়েছে। তাদের খাবারে তালিকায় টফু, সামুদ্রিক মাছ এবং খাবার, দুগ্ধ জাতীয় খাবার এবং সবুজ শাকসবজি থাকতে পারে। তবে তাদের পাকস্থলীতে কিছু প্রয়োজনীয় এসিড কম থাকতে পারে আবার তাদের B গ্রুপের মানুষদের মত খাপ খাওয়ানোর মতো ক্ষমতাও থাকে। এই গ্রুপের মানুষদের পাকস্থলীতে কিছু প্রয়োজনীয় এসিড কম থাকাতে মাংস বিপাকের ক্ষেত্রে এদের সংরক্ষণ করে রাখার প্রবণতা থাকে বেশি থাকে। কারন AB গ্রুপের মানুষদের মাঝে A ও B উভয় গ্রুপের এন্টিজেন বিদ্যমান থাকে।

টাইপ AB গ্রুপের রক্তের মানুষদের জন্য নিম্নে উল্লেখিত খাবার গুলো খুবই উপকারী-
আগার, আপেল, বাঁশ দিয়ে তৈরি খাবার, ব্লুবেরি, ব্রাসেলস স্প্রাউট, গাজর, ক্র্যানবেরি, শশা, ডিম, ডুমুর, আদা, গ্লুটেন ফ্রি ব্রেড, কিউয়ি, পেঁয়াজ, ঢেঁড়স, জলপাই, পেঁপে, পিচফল, টমেটো, তরমুজ, ধুন্দল ইত্যাদি।

টাইপ O গ্রুপের রক্তের মানুষের খাবার তালিকা-
রক্তের এই গ্রুপকে সবচেয়ে পুরোনো হিসেবে ধরা হয়। প্রাচীনকালে এই গ্রুপের মানুষেরা ছিল শিকারি ও মাংসাশী। সেই হিসেবে O গ্রুপের রক্তের মানুষের খাবার তালিকায় উচ্চ প্রোটিনযুক্ত যেমন লাল মাংস, মাছ এবং পোল্ট্রি খাবার রয়েছে। এসব প্রোটিন খাবারের সাথে প্রচুর পরিমানে তাজা শাকসবজি এবং ফল রাখতে হবে। তবে বর্জনীয় খাবার গুলো হচ্ছে শস্য, ব্রেড ও ডাল জাতীয় খাবার। এছাড়া ন্যাচারোপ্যাথ D’Adamo এই গ্রুপের মানুষদের বিভিন্ন ধরনের সাপ্লিমেন্ট খেতে সুপারিশ করেছেন তাদের পেটের সমস্যা ও অন্যান্য সমস্যায় সাহায্য পেতে।

O গ্রুপের রক্তের মানুষের জন্য কিছু গ্রহনীয় উত্তম খাবারের নাম নিচে উল্লেখ করা হলো
কাঠবাদামের দুধ, আপেল, অ্যাস্পারাগাস, কলা, গরুর মাংস, মুরগি, হাঁসের মাংস, মাছ, কলিজা, গলদা চিংড়ী, চিংক, টার্কি, হরিণের মাংস, স্যামন, তেলাপিয়া, টুনা মাছ, কাঁকড়া, কালো, শিমবীজ, চেরি, খেজুর, পনির, ডুমুর, কুমড়া, টমেটো, পেয়াজ, রসুন, আদা, লেবু, মূলা, কিউয়িশ, তরমুজ, বড়ই, লেটুস, মালবেরি ফল, সয়াদুধ, কিশমিশ, মিষ্টি আলু ইত্যাদি।

তবে খাওয়ার এই পদ্ধতি জাতিগত কারনে বা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কারন দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। বিভিন্ন রক্তের গ্রুপের জন্য নির্দিষ্ট এসব খাবার কোন অ্যালার্জি থাকার জন্য বা কোন চিকিৎসা সংক্রান্ত কোন কারনে প্রয়োজন হলে পরিবর্তন করা যেতে পারে। তাই যদি এই সংক্রান্ত প্রয়োজনে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিয়ে করাই ভালো।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

মানবদেহে আদার অনেক উপকার

আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন

রেড মিট খাওয়ার আগে কিছু পরামর্শ জেনে নিন

কোরবানি ঈদে বেশ কয়েকদিন টানা খাওয়া হয় গরু বা খাসিরবিস্তারিত পড়ুন

জাপান ও ইউরোপে বিরল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ

জাপানে, একটি বিরল “মাংস খাওয়া ব্যাকটেরিয়া” এর কারণে এক রোগবিস্তারিত পড়ুন

  • ডেঙ্গুতে একজনের মৃত্যু
  • কোন খাবার কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে
  • ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
  • ওজন কমাতে যা খাওয়া যেতে পারে
  • প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রসুন
  • ফুড সিস্টেম ড্যাশবোর্ড নীতিমালা প্রণয়ন ও গবেষণা কার্যক্রমকে সহজ করবে : খাদ্য সচিব
  • আমলকি কখনো স্বাস্থ্যের জন্য ‘বিপজ্জনক’ হয়ে ওঠে
  • বিশ্বের শক্তিশালী এমআরআই মেশিনে মস্তিষ্কের প্রথম চিত্র প্রকাশ
  • H5N1 ভাইরাস ছড়াচ্ছে, কোভিডের চাইতে 100 গুণ বেশি বিপজ্জনক
  • কত দিন পর পর টুথব্রাশ বদলাবেন?
  • ত্বকের দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়
  • তরমুজ খেলে কি সত্যিই ওজন কমে?