সিরাজের মৃত্যুদণ্ড, আকরামের আমৃত্যু কারাদণ্ড: ট্রাইব্যুনাল
মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাগেরহাটের শেখ সিরাজুল হককে মৃত্যুদণ্ড এবং খান মো. আকরাম হোসেনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করেন।
একই মামলার আসামি আবদুল লতিফ তালুকদার গত ২৭ জুলাই দিবাগত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ কারণে মামলার আসামির তালিকা থেকে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়। আজ রায় ঘোষণার সময় সিরাজুল ও আকরাম ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন।
বাগেরহাটের ওই তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার কার্যক্রম শেষে গত ২৩ জুন রায় অপেক্ষমাণ (সিএভি) রাখেন ট্রাইব্যুনাল-১। রায় ঘোষণার জন্য ১১ আগস্ট তারিখ ধার্য করে ৫ আগস্ট আদেশ দেন একই ট্রাইব্যুনাল। অভিযোগ গঠনের আদেশ অনুসারে, মুক্তিযুদ্ধকালে সিরাজ মাস্টার নামে পরিচিত সিরাজুল হক ছিলেন তৎকালীন বাগেরহাট মহকুমা রাজাকার বাহিনীর ডেপুটি কমান্ডার। লতিফ ও আকরাম বাগেরহাট রাজাকার বাহিনীর সদস্য ছিলেন।
সাত অভিযোগ: প্রথম অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরের ১৩ মে সিরাজ মাস্টারের নেতৃত্বে রাজাকার বাহিনী বাগেরহাটের রণজিৎপুর গ্রামে হামলা চালিয়ে ঘরবাড়ি লুট ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় ৪০-৫০ জন হিন্দুকে হত্যা করা হয়। দ্বিতীয় অভিযোগ, মুক্তিযুদ্ধকালে ভারতের শরণার্থীশিবিরে যাওয়ার জন্য বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ডাকরা গ্রামের কালীমন্দিরে দুই-তিন হাজার হিন্দু জড়ো হয়েছিলেন। ২১ মে সিরাজ মাস্টারের নেতৃত্বে রাজাকাররা ওই হিন্দুদের ওপর হামলা চালালে ৬০০-৭০০ জন গণহত্যার শিকার হন।
তৃতীয় অভিযোগ, একাত্তরের ১৮ জুন সিরাজ মাস্টারের নেতৃত্বে রাজাকার ও পাকিস্তানি সেনারা বাগেরহাট সদর উপজেলার বেসরগাতী, কান্দাপাড়া ও কান্দাপাড়া বাজার এলাকার ২০ জনকে অপহরণের পর আটকে রেখে নির্যাতন করে। তাঁদের মধ্যে ১৯ জনকে হত্যা করা হয়, একজন ভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান।
চতুর্থ অভিযোগ, ১৪ অক্টোবর সদর উপজেলার চুলকাঠি, চুলকাঠি বাজার ও ঘনশ্যামপুরে হামলা চালিয়ে ৫০টি ঘর লুট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সিরাজের নেতৃত্বে রাজাকাররা সাতজনকে হত্যা করে।
পঞ্চম অভিযোগ, ৫ নভেম্বর সিরাজ, লতিফ ও আকরামের নেতৃত্বে রাজাকাররা বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার শাখারীকাঠিতে হামলা চালিয়ে ৪২ জনকে আটক করে। পরে আটককৃতদের নির্যাতন ও হত্যা করা হয়। অনেক বাড়ির মালামাল লুট করে ঘরে আগুন দেওয়া হয়।
ষষ্ঠ অভিযোগ, ২২ অক্টোবর সিরাজ-লতিফ-আকরামের নেতৃত্বে রাজাকাররা কচুয়া সদরের বিভিন্ন গ্রাম থেকে পাঁচজনকে আটক করে নির্যাতন ও হত্যা করে।
সপ্তম অভিযোগ, ১৩ ডিসেম্বর লতিফ ও আকরামের নেতৃত্বে রাজাকাররা মোরেলগঞ্জ উপজেলার তেলিগাতীতে মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমান শিকদারকে আটক, নির্যাতন ও হত্যা করে।
গত বছরের ১০ জুন ওই তিনজনের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল-১ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। ওই রাতেই লতিফকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই বছরের ২০ জুন আকরামকে রাজশাহী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। আত্মগোপনে থাকা সিরাজুলকে গত বছর ২১ জুলাই বাগেরহাট সদর উপজেলার ডেমা গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সাময়িক বরখাস্ত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনেবিস্তারিত পড়ুন
কমলা হ্যারিসের ভোটের প্রচারণায় বাজবে এ আর রহমানের গান
আগামী নভেম্বরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন উপলক্ষে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসেরবিস্তারিত পড়ুন
উপদেষ্টা আদিলুর: পূজায় বিশৃঙ্খলাকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না
দুর্গাপূজায় বিশৃঙ্খলাকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না বলে সতর্ক করেবিস্তারিত পড়ুন