সেরার পুরস্কার পেলেন মুশফিক-মুস্তাফিজ
গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ের একই ছাদের নিচে জড়ো হয়েছিল বাংলাদেশের সব খেলার নামীদামী ক্রীড়াবিদরা। আলো ঝলমলে অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রধান করা হল রূপচাঁদা-প্রথমআলো ক্রীড়া পুরস্কার।
২০১৪ ও ২০১৫ সালের বর্ষসেরার পুরস্কার এবার একসঙ্গে দেয়া হয়েছে। ২০১৪-এর আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু। ২০১৫-এর আজীবন সম্মাননা দেয়া হয়েছে বাংলাদেশের কিংবদন্তি অ্যাথলেট সুফিয়া খাতুনকে। তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বাংলাদেশ এডিবল অয়েল লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক ইনাম আহমেদ ও প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান।
জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও বিসিবির সাবেক পরিচালক গাজী আশরাফ হোসেনের নেতৃত্বে এবারের বিচারক প্যানেলে ছিলেন গ্র্যান্ড মাস্টার নিয়াজ মোরশেদ, সাবেক অ্যাথলেট শামীমা সাত্তার মিমু, জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক জুয়েল রানা ও জাতীয় হকি দলের সাবেক খেলোয়াড় রফিকুল ইসলাম।
২০১৫ সালের সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছেন বিস্ময়বালক মুস্তাফিজুর রহমান। তবে অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত ছিলেন না ক্রিকেটের এই ‘কাটার’। আইপিএল-ক্লান্ত বাঁহাতি পেসার বিশ্রামে আছেন সাতক্ষীরার তেতুঁলিয়া গ্রামে নিজ বাড়িতে। বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব কুতুবউদ্দিন আহমেদ ও বিসিবির প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদের হাত থেকে মুস্তাফিজের দুটি পুরস্কারই নিয়েছেন তার বড় ভাই মাফুজার রহমান।
২০১৪ সালের বর্ষসেরা পুরস্কার জিতেছেন টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। এ নিয়ে টানা দ্বিতীয়বার তিনি বর্ষসেরা হলেন। যার অধীনে তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক, সেই হাবিবুলের হাত থেকেই পুরস্কার নিলেন বাংলাদেশ দলের বর্তমান টেস্ট অধিনায়ক। বিচারকদের রায়ে ২০১৩ বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ হয়েছিলেন। পরের বছরও জয় হলো তারই।
ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজাকে ঘিরে হলরুমের একটা অংশে তৈরি হয়েছিল ড্রেসিংরুমের আবহ। অনুষ্ঠান শুরুর অনেক আগে থেকেই সেখানে জমে ওঠে ক্রিকেটারদের আড্ডা। তামিম ইকবাল, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার, তাসকিন আহমেদ, তাইজুল ইসলাম, এনামুল হক, নুরুল হাসান, কামরুল ইসলাম, মেহরাব হোসেন জুনিয়রদের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন জাতীয় দলের সাবেক ওপেনার জাভেদ ওমর, দুই কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও মিজানুর রহমান। হাবিবুল মুশফিকের নাম ঘোষণা করলে উল্লাসধ্বনিটা সবচেয়ে বেশি উঠেছে হলরুমের ওই অংশ থেকেই।
মুশফিক ২০১৪ সালে ৭ টেস্টে ১ সেঞ্চুরি, ২টি হাফ সেঞ্চুরিসহ ৩৯.৩৬ গড়ে করেছেন ৪৩৩ রান, যেটি বাংলাদেশের পক্ষে তৃতীয় সর্বোচ্চ। ওয়ানডেতে ১৮ ম্যাচে ৪৪ গড়ে ১টি সেঞ্চুরি ও ৬ ফিফটিতে রান ৭০৪, বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ। সেন্ট ভিনসেন্ট টেস্টে ফলো-অনে পড়ে লড়াকু ১১৬ রান, ফতুল্লায় এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে ১১৭ রানসহ রয়েছে আরও বেশ কটি মুগ্ধতা ছড়ানো ইনিংস।
বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস নিয়ে মুশফিক যখন মঞ্চে ওঠেন চারদিকে তখন কড়তালিতে মুখর। পুরস্কার হাতে মুশফিক বলেন, ‘অবশ্যই ভালো লাগছে। ধারাবাহিকতা বজায় থাকল। ২০১৩-এ পেয়েছি, ২০১৪ সালেও পেলাম। আমার বাবা-মা ও স্ত্রীকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আমাকে তাঁরা অনুপ্রাণিত করেছেন এবং পাশে থেকেছেন। পুরস্কার যেকোনো খেলোয়াড়কেই অনুপ্রাণিত করে। আপনি যেটা করবেন সেটার যদি স্বীকৃতি পান, ভালো তো লাগবেই। চেষ্টা করব সামনে আরও ভালো করতে।’
আসলে দুই বছরের পুরস্কারজয়ীর বেশির ভাগই মিশে ছিলেন ক্রিকেটারদের ভিড়ে। ২০১৫-এর দুই রানারআপই ক্রিকেটার—তামিম ও মাহমুদউল্লাহ। সৌম্য হয়েছেন ২০১৫-এর বর্ষসেরা উদীয়মান ক্রীড়াবিদ, তাইজুল ২০১৪-এর। এ ছাড়া ২০১৪-এর বর্ষসেরা নারী ক্রীড়াবিদও একজন ক্রিকেটার, সালমা খাতুন। তবে ২০১৫-এর বর্ষসেরা নারী ক্রীড়াবিদের পুরস্কারটা উঠেছে কমনওয়েলথ ভারোত্তলনে সোনা জয়ী মাবিয়া আক্তারের হাতে।
২০১৪-এর দুই বর্ষসেরা রানারআপের কেউই ক্রিকেটার নন। একজন জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম, অন্যজন কমনওয়েলথ গেমসে রুপাজয়ী জাতীয় শ্যুটার আব্দুল্লাহ হেল বাকি। দুজনের কেউই অবশ্য আসতে পারেননি অনুষ্ঠানে। তাজিকিস্তানে থাকা মামুনুলের হয়ে পুরস্কার নিয়েছে তাঁর বাবা নুরুল ইসলাম। বাকির পুরস্কার নিয়েছেন আরেক শ্যুটার আসিফ হোসেন খান। বর্ষসেরা ক্রীড়াবিদ ও আজীবন সম্মাননার পুরস্কার হিসেবে ক্রেস্টের সঙ্গে ছিল দুই লাখ টাকা এবং অন্য সব পুরস্কার হিসেবে ছিল ক্রেস্ট ও এক লাখ টাকা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
আলোক স্বল্পতায় তৃতীয় দিনের খেলা শেষ, বাংলাদেশের প্রয়োজন আরও ৩৫৭
চেন্নাই টেস্টে ভারতের দেওয়া পাহাড়সম ৫১৫ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতেবিস্তারিত পড়ুন
খেলার মাঝেই সন্তানের সুসংবাদ, উইকেট পেয়ে উদযাপন শাহিন আফ্রিদির
রাওয়ালপিণ্ডিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে ব্যস্ত পাকিস্তানি ফাস্ট বোলার শাহিনবিস্তারিত পড়ুন
বন্যার্তদের সহায়তায় এবি পার্টির কেন্দ্রীয় সমন্বয় সেল গঠন
সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় দুর্গত মানুষের মাঝে মানবিক সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যেবিস্তারিত পড়ুন