শনিবার, জুলাই ২৭, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

তারুণ্যের সংবাদ মাধ্যম

‘সোনার বাংলা’র নামে অনিয়মের যতো কাণ্ডকীর্তি’

রেজাউল করিম : আব্দুল কাদের সিদ্দিকীর সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থা প্রাইভেট লিমিটেড সবসময়ই বিতর্কিত এক প্রতিষ্ঠান। কোনো কাজেরই চুক্তিপত্র মানেন না কাদের সিদ্দিকী। তার প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া কোনো কাজই চুক্তি অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে শেষ করার নজির নেই। এসব কারণে তার প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করেছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। যথাসময়ে কাজ শেষ করতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিকে একাধিকবার জরিমানাও করা হয়েছে।

সর্বশেষ ওই প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের কারণে টাঙ্গাইল-৪ আসনের উপনির্বাচনে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। সম্প্রতি রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংক কাদের সিদ্দিকীর ৯ কোটি টাকার সুদ মওকুফ করার পরও ঋণ খেলাপের দায়ে নির্বাচনে অযোগ্য হয়েছেন তিনি। একই প্রতিষ্ঠানে মালিকানা থাকার কারণে তার সহধর্মিনী নাসরিন সিদ্দিকীর মনোনয়নপত্রও বাতিল হয়েছে।

এভাবে কাদের সিদ্দিকী সস্ত্রীক নির্বাচনী লড়াইয়ে অযোগ্য হওয়ার কারণে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দেওয়ার পাশাপাশি প্রতিবাদে বুধবার টাঙ্গাইলে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিলেও পরে তা বাতিল করে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ।

যেভাবে ঋণখেলাপি
বাংলাদেশ ব্যাংকের সেন্ট্রাল ইনফরমেশন ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, কাদের সিদ্দিকী দীর্ঘ সময় ধরেই একজন ঋণখেলাপি। তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থা অগ্রণী ব্যাংক থেকে ১০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা আর শোধ করেনি। সময়ের হিসাবে কাদের সিদ্দিকীর কাছে ব্যাংকের পাওয়া দাঁড়ায় ২০ কোটি টাকার বেশি।

কিন্তু স্বাধীনতা সংগ্রামে তার অবদানকে বিবেচনা করে সুদ মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো অগ্রণী ব্যাংক। পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তক্রমে তার ৯ কোটি টাকা সুদ মওকুফও করা হয়। কিন্তু তারপরও সময়মতো কিস্তি না দেওয়ায় ঋণখেলাপি থেকে যান তিনি।

মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিষ্ঠান দাবি করে বোর্ডে স্ত্রী ছাড়াও ব্যক্তিগত সহকারি
সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থাকে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাবি করেন কাদের সিদ্দিকী। বিভিন্ন সময় এরকম দাবি করে তিনি বিভিন্ন সুবিধাও নিয়েছেন বলে অগ্রণী ব্যাংক এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

আবার সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থা লিমিটেডকে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিষ্ঠান দাবি করা হলেও এর পরিচালনা পরিষদে শুধুই কাদের সিদ্দিকীর নিজস্ব লোক।

বোর্ডে যে চারজন আছেন তারা হলেন: কাদের সিদ্দিকী (চেয়ারম্যান), তার স্ত্রী নাসরিন সিদ্দিকী, কাদেরিয়া বাহিনীর সাবেক প্রশাসক এনায়েত করিম এবং কাদের সিদ্দিকীর ব্যক্তিগত সহকারী ফরিদ আহমেদ।

যে কারণে কালো তালিকাভুক্তির সুপারিশ
কাদের সিদ্দিকীর প্রতিষ্ঠানকে বেশ আগেই কালো তালিকাভুক্তির সুপারিশ করেছে হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

এ বিষয়ে কমিটির সদস্য মো. রুস্তম আলী ফরাজী প্রতিবেদককে বলেন: সরকারের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে কমিটিতে বিশদ আলোচনার পর দেখা গেছে কাদের সিদ্দিকী সাহেবের প্রতিষ্ঠান (সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থা) নিয়ম-নীতি না মেনে কাজ করেছে। তাই তার প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়।

‘নিয়ম ভঙ্গ করলে যে কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেই এমনটা করা হয়,’ বলে তিনি জানান।

এ সুপারিশ কিভাবে কার্যকর হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন: এটা কোনো ব্যক্তির বিষয় নয়, এটা রাষ্ট্রীয় এবং রাষ্ট্রীয় স্বার্থের বিষয়। উনার (কাদের সিদ্দিকীর) প্রতিষ্ঠান যদি পেছনের সবকিছু মিটিয়ে আবার রাষ্ট্রের সব আইন মেনে আসতে পারে আসবে।

তবে, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য রুস্তম আলী ফরাজী একথাও বলেন, কালো তালিকাভুক্ত এই কারণে করা হয় যে, অনিয়ম করা প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে আর কাজ না পায়।

অনিয়মের যতো হিসাব: দুবলাকুঁড়ি থেকে শুকনাকুঁড়ি
কাজের সময় বাড়িয়ে বরাদ্দ বাড়ানোর মতো বাণিজ্যের অসংখ্য অভিযোগ আছে কাদের সিদ্দিকীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থার বিরুদ্ধে। প্রতিটি কাজ ঝুলিয়ে রেখে সময় বাড়িয়ে নেয়ার পর ওই সময়ের বাজারদর অনুযায়ী বিল দাবি করে তা উঠিয়ে নিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

অভিযোগ আছে, টাঙ্গাইলের ঘাটাইলে দুবলাকুঁড়ি সেতুর কাজ শেষের নির্ধারিত সময়ের পর ১২ বছর পরও শেষ না করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থা।

কাজ শুরুর সময় সেতু নির্মাণের খরচ ধরা হয়েছিলো এক কোটি ৮৪ লাখ তিন হাজার ৫৪৬ টাকা। সময় আর বরাদ্দ বাড়ানোর ফলে পরে তা দুই কোটি ৫৬ লাখ ৯১ হাজার ৮৭০ টাকা দাঁড়ায়। প্রায় অর্ধেক কাজ বাকি থাকতেই দুই কোটি ১৫ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বিল হিসেবে তুলে নেয় প্রতিষ্ঠানটি।

একই রকম ঘটনা ঘটে নেত্রকোণার শুকনাকুঁড়ি সেতুর বেলায়ও।

এই সেতুর প্রাক্কলিত খরচ ছিলো তিন কোটি ১৩ লাখ ৩৩ হাজার ৮৭২ টাকা। কিন্তু সময় আর বরাদ্দ বাড়িয়ে এর সংশোধিত বাজেট ঠেকানো হয় আট কোটি ২৭ লাখ ২৯ হাজার ৮৭১ টাকায়।

এছাড়া মূল কাজ শেষ হওয়ার আগেই ২০০৬ সালের ৪ জানুয়ারি ওই সেতুর ওপর ঢালাই ও পাটাতন নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয় তাকে। এ জন্য খরচ ধরা হয় তিন কোটি ৩৭ লাখ ৭৮ হাজার টাকা। কাজ শেষ করার কথা ছিলো ২০০৭ সালের ৩ এপ্রিল। কিন্তু পাটাতন নির্মাণের কাজ সামান্য করে ৯১ লাখ টাকা তুলে নিয়ে আবার কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়।

আর জামালপুরের জিঞ্জিরামপুর সেতুর জন্য বরাদ্দ করা ৭ কোটি ৮৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার মধ্যে ৭ কোটি ৬১ লাখ ১২ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হলেও সময়মতো সেতুর কাজ শেষ করেনি সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থা।

টাঙ্গাইলে সেতু, সড়ক আর হাসপাতাল ভবন নির্মাণের মতো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নকাজ বছরের পর বছর ফেলে রেখেছিলো সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থা প্রাইভেট লিমিটেড। নিজের প্রভাব খাটিয়ে কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময়ের পর ক্ষেত্রবিশেষে এক থেকে ১৫ বছর পার হলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কোনো অনুরোধ বা চাপ তিনি বিবেচনায় নেন না। সাড়ে ২৩ কোটি টাকার এসব উন্নয়নকাজ আংশিকভাবে শেষ করে প্রায় ১৩ কোটি টাকা বিল তুলে নেন।

নেত্রকোণা ও জামালপুরের দুটি সেতুর কাজ নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে না পারায় কাদের সিদ্দিকীর সোনার বাংলা প্রকৌশলী সংস্থাকে এক কোটি ২৫ লাখ ৭৬ হাজার টাকা জরিমানাও করেছিলো সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। তত্ত্বাবধায়ক অামলে মামলাও হয়েছিলো তার বিরুদ্ধে।-চ্যানেল আই অনলাইন

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

বিএনপি ও সমমনা দলের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

সারা দেশে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে গতকাল মঙ্গলবার নিহতবিস্তারিত পড়ুন

বিকেলে বাসায় ফিরবেন খালেদা জিয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে বাসায় নেওয়াবিস্তারিত পড়ুন

খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে দেশের গণতন্ত্র মুক্তি পাবে : এ্যানী

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেছেন, দেশনেত্রী বেগমবিস্তারিত পড়ুন

  • রায়পুরায়  বিএনপির প্রায় ১০০ নেতা কর্মী আ’লীগে যোগদান
  • বিএনপির আন্দোলন ভুয়া, তারেক রহমানের নেতৃত্বে আতঙ্কিত: ওবায়দুল কাদের
  • খালেদা জিয়ার ৩ রোগ বড় সংকট : চিকিৎসকরা
  • মুক্তিযুদ্ধের নামে বিএনপি ভাওতাবাজি করে : ওবায়দুল কাদের
  • দেশের মানুষ ঈদ করতে পারেননি
  • বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে রদবদল
  • বিএনপির টপ টু বটম দুর্নীতিতে জড়িত: কাদের
  • চার্জ গঠন বাতিল চেয়ে রিট করবেন ড. ইউনূস
  • চার্জ গঠন বাতিল চেয়ে রিট করবেন ড. ইউনূস
  • আদালতে লোহার খাঁচায় থাকা অপমানজনক: ড. ইউনূস
  • বাংলাদেশের জনগণের প্রত্যাশাকে মর্যাদা দেবে ভারতের নতুন সরকার : ফখরুল 
  • ৫৩ বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ ১০৬ জনকে সম্মাননা দিল ‘আমরা একাত্তর’