১ হালি ইলিশের দাম ১২০০ টাকা, প্রতিটির ওজন ৯০০ গ্রাম
বাংলাদেশের মানুষ এবার মন খুলে রূপালি ইলিশ খাচ্ছে। ক্রেতারা বাজারে গিয়ে এখন একটির দাম জিজ্ঞেস করে না। তারা বলে মামা হালি কত? এমনটাই বলছিলেন কাওরান বাজারের ইলিশ মাছ বিক্রেতা রশিদ মিয়া। তিনি এক হালি ইলিশের দাম রাখেন ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা। প্রতিটির ওজন তাও আবার ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম। গত ছয় মাস আগে যে ইলিশের প্রতিটির দাম ছিল ১০০০ টাকা থেকে ১৫০০ টাকা।
এমন অবস্থা এখন সারা দেশে। প্রায় অর্ধযুগের দুর্দিন কাটিয়ে রূপালি ইলিশ আহরণ ও বাজারজাতকরণে সুদিন ফিরে এসেছে। তাই ভোজনরসিকরা এবার মন ভরে ইলিশ খাওয়ার সুযোগ পেয়েছে।
রাজধানী ঘুরে দেখা গেছে পাড়া-মহল্লায় রাস্তার অলিগলিতে এবং মসজিদের সামনে ইলিশের ঝুড়ি নিয়ে বসে আছে বিক্রেতারা। ক্রেতারাও প্রচুর পরিমাণে ইলিশ কিনছে।
রাজধানীর বাড্ডায় ইলিশ কিনতে এসেছিলেন স্কুল শিক্ষীকা জেসমিন হক। তিনি বলেন, আমার মনে হয় গত ১০ বছরেও এত কম দামে ইলিশ কিনি নি। আমি এক হালি ইলিশ কিনেছি মাত্র ১২০০ টাকায়। যার দাম কয়েক মাস আগে ছিল ৪০০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকা।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর ইলিশ ধরা ও বিক্রি করা নিষেধ থাকার কারণে অনেকে বেশি করে কিনে বাসার ফ্রিজে সংরক্ষণ করছেন।
মৎস্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ইলিশ আহরণ বিগত প্রায় অর্ধযুগের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। ফিশিং বোট, ট্রলার মালিক, ক্যাপ্টেন, ক্রু, মাঝিমাল্লা, গদি মালিক, পাইকার ও খুচরা বিক্রেতা থেকে শুরু করে ক্রেতাকূল পর্যন্ত সকলের ইলিশ নিয়ে এবার আনন্দের সীমা নেই।
এবার এত বেশি ইলিশ প্রাপ্তির বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁদপুর ফিশারি ঘাটের ইলিশ মাছ ব্যবসায়ী মো: আবুল খায়ের বলেন, সরকার ইলিশ নিয়ে যে আইন করেছেন তা কার্যকর করেছে। জাটকা নিধন বন্ধ আর সরকারের সার্বিক পর্যালচনার কারনেই আমার এবার আগের তুলনায় অনেক বেশি ইলিশ পাচ্ছি। আশা করছি এটা অব্যাহত থাকবে।
মৎস্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র থেকে জানা জানায়, ২০০৭-০৮ সালে প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষার্থে আইন করে কার্যক্রম শুরু হয়। পরের বছর থেকেই সুফল পরিলক্ষিত হয়। ফলে প্রতি মৌসুমে ইলিশ আহরণের পরিমাণ বাড়তে থাকে।
পরিসংখ্যানে দেখা যায় প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১৫ হাজার টন হারে উৎপাদন বেড়েছে। ২০১১ সালে আইন করে প্রথমে এগারো দিন, পরে সতেরো দিন এবং এবার (১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর) ২২ দিন ইলিশ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা ইলিশের মজুদ, বেচাকেনার উপরও বলবৎ থাকবে।
গত প্রায় অর্ধযুগেরও বেশি সময় ধরে সরকারী কঠোর নজরদারি ও বিভিন্ন মহলের ইতিবাচক সংশ্লিষ্টতার কারণে এবার পদ্মা থেকে শুরু করে আড়িয়াল খাঁ, রূপসা, তেঁতুলিয়া, শাহবাজপুর চ্যানেল, হাতিয়া, মনপুরাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে ইলিশ মিলছে প্রচুর পরিমাণে। এছাড়া মধুমতি নদীতেও এবার ইলিশ মিলেছে। পাশাপাশি সুরমা, কুশিয়ারা, মহানন্দা, হাকালুকি হাউড়েও এবার ইলিশ মিলেছে। এর ফলে জেলেদের হাতেও প্রচুর ইলিশ ধরা পড়েছে।
আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নবেম্বর পর্যন্ত ২২ দিন ইলিশ আহরণ না করার বিষয়টি মাথায় রেখে সংশ্লিষ্ট সকলকে সজাগ থাকতে হবে। যা দেশ ও জাতির জন্য বড় ধরনের কল্যাণ বয়ে আসবে ইলিশের ক্ষেত্রে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
যে কারণে নতুন বছরের প্রথম দিনেও বিশ্ববাজারে বাড়লো স্বর্ণের দাম
নতুন বছরের প্রথম দিনেও স্বর্ণের দাম বেড়েছে আউন্সপ্রতি ১৮.২৫ ডলার।বিস্তারিত পড়ুন
অবৈধভাবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে ২ ভারতীয় নাগরিক আটক
অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের দায়ে ২ জন ভারতীয়বিস্তারিত পড়ুন
দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এলো ডিসেম্বরে
একক মাস হিসেবে সদ্যবিদায়ী বছরের ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২৬৩বিস্তারিত পড়ুন