রবিবার, নভেম্বর ২৪, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

অতিষ্ঠ গ্রাহকরা ! উটকো এসএমএস

যোগাযোগের ক্ষেত্রে বিপ্লব নিয়ে এসেছে মোবাইল ফোন। মানুষের জীবনকে আরও সহজ করেছে, গতি এনেছে ব্যবসা বাণিজ্যে। এক দশক আগেও যে বিষয়টি ছিল স্বপ্নের মতো, মুঠোফোন সেই স্বপ্নটি এনে দিয়েছে হাতের মুঠোয়। কিন্তু মুঠোফোন এখন বিরক্তি বাড়াচ্ছে উটকো এসএমএস। যখন তখন বেজে ওঠে মুঠোফোন। দেখা যায়, মুঠোফোন অপারেটর কোম্পানি তার নতুন কোনো অফার জানাতে পাঠিয়েছে এসএমএস।

গভীর রাত আর ভোরে শব্দ করে বেজে ওঠা এসএমএসগুলো প্রায়শ ঘুম ভাঙিয়ে দেয়। পাশাপাশি মোবাইল ফোন কোম্পানির নিজেদের নানা অফার জানাতে ইদানীং শুরু হয়েছে কল করার রীতি। স্বয়ংক্রিয় এসব ফোনও আসে যখন তখন। কখনো কখনো মানুষের বিশ্রাম আর ঘুমের সময়। এ কারণে জাদুর পরশে যে যন্ত্রটি দুনিয়ার এ প্রান্তের খবর সেকেন্ডেই ও প্রান্তে পৌঁছে দেয় সেটি চরম বিরক্তিকর হয়ে ওঠে। অথচ পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে এ ধরনের অহরহ উটকো এসএমএস পাঠানোর নজির নেই।

মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটরদের বিভিন্ন অফারসমৃদ্ধ এসএমএস নিয়ে খুবই বিরক্ত গ্রাহক সাব্বির। একসময় ছিল মোবাইল ফোনে দিনে একটি-দুটি বা অল্প কিছু এসএমএস আসত। সেটিও পাঠাত পরিচিত জনরা। এটি মোটামুটি একটি সহনীয় পর্যায়ে ছিল। কিন্তু বর্তমানে নানা ধরনের অফারযুক্ত এসএমএস আসতে শুরু করেছে তার মোবাইলে। সাব্বির বুঝে পান না বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তার মোবাইল নম্বর কীভাবে পেলো। আর এমন সব পণ্যের এসএমএস আসে যেগুলোর প্রতি ন্যূনতম আগ্রহ নেই সাব্বিরের।

আজকাল কখনো কখনো সাব্বিরের ঘুমই ভাঙ্গে এই জাতীয় মেসেজের শব্দে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাব্বিরের এখন সেমিস্টার বিরতি চলছে। তাই সকাল সকাল বিছানা ছেড়ে উঠার তাড়াও নেই। আবার ক্লাস না থাকায় প্রতি রাতেই ঘুমুতে একটু দেরি হয়। কিন্তু ভোর বেলায় তার ফোনে আসতে থাকে নানা রকম বিজ্ঞাপন ও প্রমোশনাল এসএমএস। আর এই জাতীয় মেসেজের শব্দে প্রায়ই ঘুম ভেঙে যায়। শুধু সকালে কেন? রাতেও এর হাত থেকে নিস্তার নেই। নিস্তার নেই ক্লাসেও।

নাজমুল চৌধুরী একজন চিকিৎসক। রোগীদের কথা ভেবে মোবাইল ফোনের রিংটোন সবসময় চালু করে রাখেন। তিনি চান না কোন রোগী যেন সংকটকালে তাকে না পেয়ে বিপাকে পড়–ক। কিন্তু প্রতিনিয়ত মোবাইল অপারেটরগুলোর বিজ্ঞাপন বা প্রমোশনাল কলের জন্য তার বিরক্তির সীমা থাকে না।

একদিন চিকিৎসক নাজমুলের ফোনে একটি কল আসলো। তিনি ধরার পর তিনি শুনতে চান, ‘কোনো সেলিব্রেটির সঙ্গে সময় কাটাতে চান কিংবা আড্ডা দিতে চান বা আপনার পছন্দের সেলিব্রেটি কি খাচ্ছে, কোথায় ঘুরছে জানতে চান? তাহলে কল করুন এই নম্বরে।’

জরুরি কাজ চলাকালে এই ফোনে যারপরনাই বিরক্ত নাজমুল। কিন্তু প্রতিকার কী জানা নেই তার। এ জাতীয় এসএমএস বা কল আসতেই থাকে। ইদানীং মনে করছেন মোবাইল অপারেটরই বদলে ফেলবেন। কিন্তু আত্মীয়সহ সব রোগীদের কাছেই এই নাম্বারটি আছে। আর পরিবর্তন করলেই যে এর হাত থেকে মুক্তি পাবেন এমন নিশ্চয়তা তো নেই। পরিচিত অনেকের কাছে ভিন্ন ভিন্ন অপারেটরের ক্ষেত্রে একই সমস্যার কথা শুনেছেন।

মিনা একজন গৃহবধূ। সংসারের সব কাজ থেকে শুরু করে সন্তানদের পড়াশোনাটা পর্যন্ত তাকে একাই সামলাতে হয়। স্বামী চাকরিজীবী হওয়ায় ছুটির দিন ছাড়া তার দেখা পাওয়া ভার। ভোরে উঠে সবার জন্য নাস্তা বানানো আর টিফিন প্যাক করার মধ্য দিয়ে শুরু হয় মিনার প্রতিদিনকার সংগ্রাম। তার সাথে উটকো ঝামেলা হিসেবে মোবাইল অপারেটরগুলোর বিজ্ঞাপনের কল তো আছেই। রিং হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জরুরি ফোন এলো ভেবে রান্নাঘর থেকে বারবার ছুটে আসতে হয়। গত কয়েকদিন আগে গভীর রাতে মেসেজের রিংটোনের শব্দে ঘুম ভেঙে গেল। ফোন হাতে নিয়ে সে দেখে, অপারেটর থেকে প্রমোশনাল এসএমএস এসেছে। ব্যস, ঘুম আর ঠিকমতো এলোই না। এর জন্য পরের দিনের সকালের কাজগুলোও এলোমেলো হয়ে গেল। মিনা এখন রীতিমতো বিরক্ত।

আসলেই এই এসএমএসগুলো এখন বিরক্তির উদ্রেক ছাড়া আর কোনো কাজেই আসছে না। বর্তমান প্রযুক্তির এ যুগে ফোন প্রাপ্তবয়স্ক প্রায় সবার হাতেই থাকে। আর স্মার্টফোনে কম বেশি সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। মোবাইল অপারেটরদের কাছ থেকে প্রতি মুহূর্তে মেসেজ পাঠানো হয় গ্রাহকদের কাছে। প্রতিটি মোবাইল অপারেটরের আছে কাস্টমার কেয়ার সার্ভিস, মোবাইল হেল্পলাইন। এগুলো থেকে সহজেই অনুসন্ধান করে জেনে নেওয়ার সুবিধা থাকলে তা ঠিকমতো জানানো বা গ্রাহকদের সেই সেবা দেওয়া হয় না। আর এই প্রমোশনাল এসএমএসগুলো যেন না আসে সে স¤পর্কিত কোনো সুবিধা বাংলালিংক, রবি কিংবা গ্রামীণফোন অপারেটর থেকে দেওয়া হয় না।

এয়ারটেলে নির্দিষ্ট এসএমএস পাঠিয়ে এই বিজ্ঞাপন সম্বলিত এসএমএসগুলো বন্ধ করার সুযোগ আছে। তবে এর স্থায়িত্ব হয় মাত্র এক সপ্তাহ। নিজের গাঁটের পয়সা খরচ করে যন্ত্রণাদায়ক এসএমএস বন্ধ করার কয়েকদিন পর আবার চালু হয় তা এবং আবারও নিজের পয়সা খরচ করে এমএসএম পাঠাতে হয় বা ফোন করতে হয়।

গ্রামীণফোনের ক্ষেত্রে কাস্টমার কেয়ার থেকে এই ধরনের সেবা দেওয়া হয় না, বরং কাস্টমার কেয়ার থেকে বলা হয় এ বিষয়ে আপনার তরফ থেকে একটি অভিযোগ রেখে দেওয়া হচ্ছে, অমুক তারিখের পর থেকে আপনার ফোনে এই জাতীয় মেসেজ আর আসবে না। কিন্তু তাদের এই অভিযোগ শুধু বলা পর্যন্তই শেষ। কিছুদিন পর থেকে আবার বিজ্ঞাপন আসা শুরু হয়।

আরেক বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর বাংলালিংকেও একই অবস্থা। আর রবিতে তো এমন কোনো সুবিধা নেই বললেই চলে।

মোবাইল কোম্পানিগুলোর এই উটকো এসএমএসের ব্যাপারে জানতে চাইলে তথ্য-প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘এভাবে প্রমোশনাল এসএমএসগুলো আসা যথেষ্ট বিরক্তিকর। আমি মনে করি এটা মানুষের ব্যক্তিগত অধিকারে হস্তক্ষেপ করার মতো। এতে আমাদের ব্যক্তি স্বাধীনতা বিনষ্ট হচ্ছে। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে আমার জন্য কী কী অধিকার আছে বা কী কী অধিকার ভোগ করব সেটা আমিই জেনে নিতে পারব। এজন্য কাউকে নিজে থেকে তথ্য আমার বাড়ি বয়ে নিয়ে আসতে হবে না। আমাকে কেউ এভাবে বিরক্ত করতে পারে না। এ স¤পর্কে বিটিআরসির সু¯পষ্ট বিধিবিধান থাকা উচিত এবং জনগণকে এভাবে ভোগান্তিতে ফেলার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’

কেবল উটকো এসএমএস বা ফোন নয় বিভিন্ন সময়ে ইন্টারনেট, কলার টিউন নিউজসাইডসহ নানা রকম সার্ভিস হঠাৎ করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চালু হয়ে যাচ্ছে। আর গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে নেওয়া হচ্ছে টাকা। কাস্টমার কেয়ারে ফোন করলে এর কোনো যথাযথ উত্তর পাওয়া যায় না। অনেক সময় কাস্টমার কেয়ারের কর্মীরা নানা হাস্যকর যুক্তি দেন। আবার স্মার্টফোন থেকে কোনো নিউজ লিংকে ঢুকলে এবং নিউজ দেখলে ফোন অপারেটর কোম্পানি স্বয়ংক্রিয়ভাবে আমাদের ফোনে এই সংক্রান্ত সার্ভিসটি চালু করে দেয়। কখনো কখনো কারও সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময় কোনো বাটনে চাপ পড়লে চালু হয়ে যায় এমন অনেক সেবা যার ফলে অ্যাকাউন্ট থেকে কাটা হয় টাকা। কখনো কখনো আসতে থাকে অনাকাক্সিক্ষত বা বিরক্তিকর এসএমএস বা কল।

এভাবে ফোনের বাটন চাপার ক্ষেত্রেও ব্যক্তি স্বাধীনতার ওপর হস্তক্ষেপ করছে দেশের বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানিগুলো। গ্রাহকের অনুমতি ছাড়াই এই ধরনের স্বয়ংক্রিয় সার্ভিস চালু করে টাকা কেটে নেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত? অনেক সময় গ্রাহকরা লজ্জায় অল্প কিছু টাকার জন্য কারও কাছে সমস্যার কথা বলতেও পারেন না। বাস্তবে কিন্তু এটি ২০ বা ৫০ টাকার বিষয় নয়। এই জালিয়াতির ফাঁক ফোকরে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে মোবাইল ফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। আর এভাবেই দিনের পর দিন মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো সাধারণ মানুষের কাছ থেকে ছাড়পোকার রক্ত শুষে নেওয়ার মতো করে টাকা কামিয়ে নিচ্ছে।
সৈয়দ ঋয়াদ ও তানজিলা প্রিমা

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

মানবদেহে আদার অনেক উপকার

আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন

হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?

বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন

ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ

চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন

  • ওজন কমাতে যা খাওয়া যেতে পারে
  • প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রসুন
  • আমলকি কখনো স্বাস্থ্যের জন্য ‘বিপজ্জনক’ হয়ে ওঠে
  • বাসি দই ও পান্তা ভাতের আশ্চর্যজনক উপকারিতা
  • স্বাদে ও পুষ্টিগুণে ভরপুর সবজি হলো লাউ
  • মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে তাপমাত্রার পারদ উঠল ৪৩ ডিগ্রিতে
  • যেসব অঞ্চলে টানা ৩ দিন ঝড়বৃষ্টি
  • ২৪ ঘণ্টা না যেতেই ফের কমলো স্বর্ণের দাম
  • গরমে চুলের যত্ন নেবেন কীভাবে?
  • একলাফে সোনার দাম ভ‌রিতে কমলো ৩১৩৮ টাকা
  • কত দিন পর পর টুথব্রাশ বদলাবেন?
  • ত্বকের দাগ দূর করার ঘরোয়া উপায়