মঙ্গলবার, নভেম্বর ২৬, ২০২৪

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

অধ্যক্ষের দুই-তৃতীয়াংশ পদেই ভারপ্রাপ্ত

দেশের দুই-তৃতীয়াংশ সরকারি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ পদে কাজ করছেন ভারপ্রাপ্ত ও চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক শিক্ষকরা। নিয়ম অনুযায়ী একজন পূর্ণ অধ্যাপকের অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করার কথা। এসব কলেজে তেমন অধ্যাপকও আছেন। বিষয়টি নজরে আসার পর বিভিন্ন সরকারি মেডিকেল কলেজের জন্য এখন দক্ষ অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ খোঁজা হচ্ছে। দক্ষ ও যোগ্য চিকিৎসকদের প্যানেল গঠনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ হতে ইচ্ছুক চিকিৎসকদের নাম প্যানেলভুক্ত করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। গত ১৭ জানুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মইনউদ্দিন আহমদ এ চিঠি পাঠান। এ বিষয়ে তিনি সমকালকে জানান, অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদায়নের জন্য একটি প্যানেল গঠন করার কাজ চলছে। দক্ষতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে প্যানেল থেকে ওই দুই পদে পদায়ন করা হবে।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগে অনিয়ম: বর্তমানে দেশের ১২টি সরকারি মেডিকেল কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন অধ্যাপকের চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত ১২ জন সহযোগী অধ্যাপক। এ ছাড়া চারটিতে সহযোগী অধ্যাপক এবং চারটিতে সহযোগী অধ্যাপকের চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদে রয়েছেন। আবার পাঁচ বছর আগে থেকে চলতি বছর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত সাত মেডিকেল কলেজে সৃষ্টিই হয়নি অধ্যক্ষের পদ। এমনকি এসব মেডিকেল কলেজে কোনো অধ্যাপকও নেই।

সহকারী অধ্যাপককে সহযোগী অধ্যাপকের চলতি দায়িত্ব দিয়ে উপাধ্যক্ষের বেশিরভাগ পদে পদায়ন করা হয়েছে। দেশের পুরনো বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এবং সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজে সহযোগী অধ্যাপকদের অধ্যাপকের চলতি দায়িত্ব দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসব মেডিকেল কলেজে একাধিক জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক থাকার পরও অপেক্ষাকৃত জুনিয়র চিকিৎসক কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলে নির্ধারিত পদে দক্ষ ও যোগ্য শিক্ষক না থাকায় মেডিকেল শিক্ষা হুমকির মুখে পড়েছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ডা. রশিদ-ই মাহবুব বলেন, ‘একজন অধ্যক্ষকে ওই মেডিকেল কলেজের অধ্যাপকদের মধ্যে সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ হতে হয়। না হলে চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়ে। এ ছাড়া জুনিয়র কাউকে নিয়োগের ঘটনা আইনের লঙ্ঘন; কিন্তু বিভিন্ন রাজনৈতিক সরকারের সময় এ গর্হিত কাজ করা হয়েছে।’

একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মেডিকেল কলেজগুলো চিকিৎসক তৈরির প্রতিষ্ঠান। মানসম্পন্ন শিক্ষা না পেলে ভবিষ্যতে দক্ষ চিকিৎসক তৈরি হওয়া সম্ভব নয়। জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মেডিকেল শিক্ষা পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত করতে হবে।’

সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, প্রাইভেট প্র্যাকটিসের মাধ্যমে অর্থ আয় এবং ছেলে-মেয়েকে ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করানোর সুযোগ মফস্বল অঞ্চলে কম থাকায় জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকরা ঢাকার বাইরে যেতে চান না। আবার রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগের কারণে জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকদের বাদ দিয়ে জুনিয়রদের নিয়োগ দেওয়া হয়।

জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক আছেন, তবুও ‘ভারপ্রাপ্ত ও দায়িত্বপ্রাপ্ত’: স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর সূত্র জানাচ্ছে, ২০১৪ সাল থেকে প্রতিষ্ঠিত সাতটি মেডিকেল কলেজে সরকার সাতজন চিকিৎসককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয়। তাদের মধ্যে পাঁচজন সহযোগী অধ্যাপক এবং দু’জন সহকারী অধ্যাপককে সহযোগী অধ্যাপকের দায়িত্ব দিয়ে অধ্যক্ষ পদে পদায়ন করা হয়।

শিশু বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সুবাস চন্দ্র সাহা এবং পাবলিক হেলথের সহকারী অধ্যাপক ডা. এমএ মান্নানকে সহযোগী অধ্যাপকের চলতি দায়িত্ব দিয়ে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন মেডিকেল কলেজ ও পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হয়।

শিশু সার্জারি বিভাগের ডা. রেজাউল ইসলামকে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ, বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের ডা. মো. আখতারুজ্জামানকে মানিকগঞ্জ, একই বিভাগের ডা. মোহাম্মদ আলী খানকে টাঙ্গাইল, ফিজিওলজি বিভাগের ডা. আবদুল ওয়াকিলকে জামালপুর এবং মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ডা. টিপু সুলতানকে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। সম্প্রতি এই পাঁচ সহযোগী অধ্যাপককে অধ্যাপকের চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

মহাজোট সরকারের আমলে সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. এম এম মঈনউদ্দীন আহমদকে গোপালগঞ্জ শেখ সায়েরা খাতুন মেডিকেল কলেজে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। সম্প্রতি তাকে অধ্যাপকের চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অর্থোপেডিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রিয়াজুল হককে পাবনা মেডিকেল কলেজে, যশোর মেডিকেল কলেজে সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবু হেনা মো. মাহবুব উল মওলা চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে ২০১৪ সালের জুন মাসে ডা. মওলা চৌধুরীকে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দিয়ে অধ্যক্ষ করা হয়। কিন্তু সেখানে তার চেয়ে জ্যেষ্ঠ একজন অধ্যাপক আছেন।
এ ছাড়া সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মতিউর রহমান ভূঁইয়াকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হয়। সেখানেও তার চেয়ে একাধিক জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক রয়েছেন।

ওই সময়ে সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবদুর রউফকে রংপুর মেডিকেলে এবং সহযোগী অধ্যাপক ডা. এস জেড আতীককে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। পরে অধ্যাপক ডা. জাকির হোসেনকে রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ করা হয়। এ ছাড়া সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজে আরেক সহযোগী অধ্যাপক ডা. কাজী হাবিবুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সহকারী অধ্যাপক ডা. জামাল উদ্দিন মোল্লাকে সহযোগী অধ্যাপকের চলতি দায়িত্ব দিয়ে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে পদায়ন করা হয়। এ ছাড়া ডা. মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে কক্সবাজার, ডা. কামরুল আহসানকে দিনাজপুর, ডা. আবদুল্লাহ আল মাহবুবকে খুলনা, ডা. মোহাম্মদ মহসিন-উজ্জামান চৌধুরীকে কুমিল্লা, ডা. মোরশেদ আহমেদ চৌধুরীকে সিলেট এমএজি ওসমানী, ডা. ভাস্কর সাহাকে বরিশাল শেরেবাংলা, ডা. মাসুম হাবীবকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হয়েছে। এই ছয় সহযোগী অধ্যাপককে অধ্যাপকের চলতি দায়িত্ব দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হয়। অথচ প্রতিটি মেডিকেল কলেজেই তাদের চেয়ে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক রয়েছেন।

আবার কিশোরগঞ্জের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ, সিরাজগঞ্জের এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ, কুষ্টিয়া, টাঙ্গাইল, জামালপুর, রাঙামাটি, পটুয়াখালী ও মুগদা মেডিকেল কলেজে এখনও অধ্যক্ষের পদই সৃষ্টি হয়নি। তবে দেশের সরকারি ৩০ মেডিকেল ও একটি ডেন্টাল কলেজের মধ্যে অন্য ১১টিতে অধ্যাপকরাই অধ্যক্ষের দায়িত্বে রয়েছেন।

সরকারি পদক্ষেপ :মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ নিয়োগে বর্তমান সরকার অনেকটা বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নীতিকেই অনুসরণ করেছে। নিয়োগপ্রাপ্তদের মধ্যে বেশির ভাগই আওয়ামী লীগ সমর্থিত স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) নেতা ও সমর্থক। আবার কেউ কেউ মন্ত্রণালয়, অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠজন। তাই তাদের এ পদায়ন ঘটেছে। বিষয়টি নজরে আসার পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম দক্ষ সংশ্লিষ্টদের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ খুঁজে বের করার নির্দেশ দেন। এর পরই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যোগ্যদের এ দুই পদে পদায়নের জন্য প্যানেল গঠনের উদ্যোগ নেয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. দীন মো. নূরুল হক বলেন, ‘কয়েকটি মেডিকেল কলেজে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের পদ ভারপ্রাপ্তদের দিয়ে চলছে। এসব পদে যোগ্যদের পদায়নের জন্য প্যানেল গঠনের কাজ চলছে।’

সাতটি মেডিকেল কলেজে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদ সৃষ্টি না হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বাস্থ্য সচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘পদ সৃষ্টির জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।’ খুব শিগগিরই অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষের পদ সৃষ্টি হবে বলে জানান তিনি।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না

গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন

জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে ‍সুবিধা পাওয়া যাবে

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন

ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত

ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন

  • শাকিব: আমার ক্যারিয়ারের সব বিগ হিট সিনেমা ঈদ ছাড়াই এসেছে
  • এক বছরের মধ্যে নির্বাচন চান ৬১.১% মানুষ, সংস্কার শেষে ৬৫.৯%
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুপক্ষের সংঘর্ষ
  • ডেঙ্গুতে একদিনে আরও ১০ মৃত্যু
  • জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করার পরামর্শ কমিশনের
  • দেশের সংকটে যে সমাধান দেখছেন তারেক রহমান
  • যে কারণে প্রতিমন্ত্রীর বাড়ির সামনে বৃষ্টির মধ্যে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা
  • ‘হেফাজতের আপত্তির মুখে’ নারায়ণগঞ্জে লালন মেলা বন্ধ
  • স্বর্ণের দামে ফের বড় লাফ, এগোচ্ছে নতুন রেকর্ডের দিকে
  • টসে জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
  • রাস্তা আটকে যমুনা ফিউচার পার্কের ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ
  • যে ৫ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা