বৃহস্পতিবার, অক্টোবর ২৩, ২০২৫

আমাদের কণ্ঠস্বর

প্রধান ম্যেনু

ন্যাশনাল ক্রাইম নিউজ পোর্টাল

অনভিজ্ঞ রিলায়েন্সের ‘অভদ্র’ প্রস্তাবেও বিদ্যুৎ বিভাগের তাড়া

ভাসমান এলএনজি (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) টার্মিনাল ও এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিমার্ণ করতে চায় এ বিষয়ে অনভিজ্ঞ ভারতীয় কোম্পানি রিলায়েন্স। টেন্ডার ছাড়াই সমঝোতার ভিত্তিতে কোম্পানিটি এ কাজ পেতে আগ্রহী। কার্যাদেশের জন্য কোম্পানিটি অত্যাধিক চাপ দিচ্ছে সরকারকে, যাকে অনৈতিক বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

একই সঙ্গে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে বিদ্যুৎ বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলো কোন কাজ কোন দিন করবে তার একটি কর্ম পরিকল্পনা রিলায়েন্স ‘পরামর্শ আকারে’ বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে। এটাকে স্বাভাবিক শিষ্ঠতার বরখেলাপ বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

রিলায়েন্সের এ ধরনের অযাচিত উদ্যোগকে নেতিবাচক মনে করলেও বিদ্যুৎ বিভাগ দ্রুত একটি সিদ্ধান্তে আসতে চাইছে। তারা ভারতীয় কোম্পানির প্রস্তাবের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সরাকরি সংস্থাগুলোকে দ্রুত মতামত দিতে বলেছে।

গত ৪ জানুয়ারি রিলায়েন্স বিদ্যুৎ, জ্বালানি খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের সঙ্গে দেখা করে। বিদ্যুৎ বিভাগ সেদিনই প্রস্তাবিত প্রকল্প অনুমোদন ও বাস্তবায়নের বিষয়ে তিন কার্যদিবসের মধ্যে মতামত জানাতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি), পেট্রোবাংলা, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) ও গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানি লিমিটেডকে (জিটিসিএল) চিঠি দেয়।

সূত্র জানিয়েছে, গত ৭ জানুয়ারি রিলায়েন্স বিদ্যুৎ বিভাগে আরেকটি চিঠি পাঠিয়েছে। এতে আগামী ২৪ জানুয়ারির আগেই নিজেদের প্রস্তাবে বাংলাদেশ সরকারের অনুমোদন চায় কোম্পানিটি। কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ওই চিঠিতে বলা হয়, আগামী ২৪ ও ২৫ জানুয়ারি ঢাকায় বাংলাদেশ বিনিয়োগ বোর্ড কর্তৃক আয়োজিত ‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড পলিসি সামিট ২০১৬’ এ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন রিলায়েন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান অনিল ধীরুবাই আম্বানি। সামিটের আগে প্রস্তাবটি প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত হলে সামিটের মধ্যেই রিলায়েন্স বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের ঘোষণা দিবে।

নসরুল হামিদকে এ চিঠি পাঠিয়েছে রিলায়েন্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং বাণিজ্যিক প্রধান সমীর কুমার গুপ্ত।

চিঠিতে তারা প্রতিমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছে, দ্রুত কাজ সম্পাদনের জন্য তিনি যেনো তার কর্মকর্তাদের তাগদা দেন। একই সঙ্গে রিলায়েন্স তাদের প্রস্তাবিত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের একটি তারিখভিত্তিক একটি কমর্পরিকল্পনাও উল্লেখ করেছে।

এ প্রসঙ্গে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ‘রিলায়েন্স ব্যবসায়ী গ্রুপ। তারা দ্রুত কাজ পেতে চাইবেই। কিন্তু কখন কোন কাজ করবো তা একান্ত আমাদের নিজস্ব বিষয়। এ বিষয়ে কোনো পরামর্শ দেয়া শোভন নয়।’

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শাসসুল আলম বলেন, ‘টেন্ডার ছাড়া এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করাটাই অবৈধ। ফলে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে যা ঘটবে তার সবই অনৈতিক হবে এটা বলাই যায়।’

তথ্য অনুসারে, রিলায়েন্স পাওয়ার লিমিটেড ভারতের মধ্য প্রদেশে কয়লাভিত্তিক ৪ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি কেন্দ্র এবং মহারাষ্ট্রে ৫শ মেগাওয়াট ক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ ও পরিচালনা করে। তাদের এলএনজি নির্ভর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ বা পরিচালনার কোনো অভিজ্ঞতা নেই।

রিলায়েন্সের প্রস্তাবিত কার্যসূচি অনুসারে, মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে ১০ জানুয়ারি পিজিসিবি পিডিবিকে একটি ফিডব্যাক দিবে। একই দিন জিটিসিএল পেট্রোবাংলাকে তার মতামত জানাবে। ১৪ জানুয়ারি পেট্রোবাংলা পিডিবি বরাবর একটি পত্র ইস্যু করবে। ১৮ জানুয়ারি পিডিবি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাবনার সারাংশ পাঠাবে। ২০ জানুয়ারি মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সারাংশটি পাঠিয়ে দেবে।

এছাড়া কারিগরি সমিক্ষা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন চুক্তি সম্পর্কিত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে একটি কর্মপরিকল্পনা জুড়ে দিয়েছে রিলায়েন্স। তাদের সূচি অনুযায়ী ২৫ জানুয়ারি বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ, বাস্তবায়ন চুক্তি- আইএ), ভূমি লিজ সংক্রান্ত চুক্তি (এলএলএ) ও গ্যাস সঞ্চালন চুক্তি (জিটিএ) এর চার বিষয়ে সমঝোতা আলোচনা হবে। একই দিন এলএনজি টার্মিনাল ও বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে কারিগরি সমীক্ষার সম্মতি দিতে হবে। আর সব প্রক্রিয়া শেষ করে দু’মাসের মধ্যেই চূড়ান্ত চুক্তি হবে। এজন্য ৩১ মার্চ দিনটিকে ধার্য করেছে ভারতীয় কোম্পানিটি।

প্রসঙ্গত, পাচঁশ মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতার ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল (এফএসআরইউ)ও এলএনজি ভিত্তিক ৩ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার তিনটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ২০১৪ সালের ২৪ আগস্ট আগ্রহ প্রকাশ করে রিলায়েন্স। একই বছরের ২১ অক্টোবর তারা আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দেয়।

রিলায়েন্সের কার্যিক্রম পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ২০১৪ সালের আগস্ট থেকে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৭ মাসে ২৩টি পত্র বা প্রস্তাবনা বিদ্যুৎ বিভাগ বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে (পিডিব, পিজিসিবি, পেট্রোবাংলায়) পাঠিয়েছে কোম্পানিটি। অর্থাৎ প্রতি মাসেই কমপক্ষে একটি চিঠি দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে গত বছরের জুনেই সর্বোচ্চ ৮টি পত্র দেয়া হয়েছে। এছাড়াও প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা, বিদ্যুৎ সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কয়েকদফা বৈঠকও করেছে কোম্পানিটি।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, ২০১৪ সালের ২১ অক্টোবর রিলায়েন্সের দেয়া প্রথম প্রস্তাবে চট্টগ্রামের মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তাব করে। একই বছরের ৩০ আগস্ট নতুন করে প্রস্তাব দেয়। ওই প্রস্তাবে এলএনজি টার্মিনাল চট্টগ্রামের যেকোন একটি স্থানে হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি এলএনজি ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে প্রথম ধাপে মেঘনাঘাটে ৭৫০ মেগাওয়াট, দ্বিতীয় ধাপে চট্টগ্রামে ১ হাজার ৫শ মেগাওয়াট (দুটি কেন্দ্র) ও তৃতীয় ধাপে চট্টগ্রামের মহেশখালীতে ৭৫০ মেগাওয়াটের একটি কেন্দ্র নির্মাণের কথা উল্লেখ করে রিলায়েন্স।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৬ জুন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরকালে রিলায়েন্স পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে ৩ হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতার চারটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর সই হয়।

গত বছরের সেপ্টেম্বরের শুরুতে আরেক প্রস্তাবে ভারতের কোম্পানিটি বিদ্যুতের দামের বিষয়টি উল্লেখ করে। দামের বিষয়ে তারা দুটি পৃথক মূল্য কাঠামোর প্রস্তাব করে। এতে ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের মুল্য ৭ টাকা ৯৯ পয়সা থেকে আট টাকা ২২ পয়সা পড়বে বলে জানানো হয়। ৭৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম কেন্দ্রটির ইউনিট প্রতি বিদ্যুতের মুল্য ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৯৯৪৬ টাকা। এর মধ্যে ৩ দশমিক ২০০৫ টাকা ক্যাপাসিটি পেমেন্ট এবং ৪ দশমিক ৭৯৪১ টাকা জ্বালানি মূল্য ধরা হয়েছে। একই কেন্দ্রের অন্য মূল্য কাঠামোতে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মুল্য পড়বে ৮ দশমিক ২১৯৮ টাকা। এর মধ্যে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট ৩ দশমিক ৪৪৪৫ টাকা এবং জ্বালানি মূল্য ৪ দশমিক ৭৭৫৩ টাকা। প্রস্তাবে আরও উল্লেখ করা হয়, প্রথম কেন্দ্রটি নির্মাণ হবে মেঘনা ঘাটে। এজন্য রিলায়েন্স সরকারের কাছে এই এলাকায় ৪০ একর জায়গা চেয়েছে।

প্রথম কেন্দ্রটি নির্মাণের পর দ্বিতীয় ভাগে চট্টগ্রামে ৭৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি কেন্দ্র নিমার্ণ করা হবে। এজন্য পিডিবির কাছে ১০০ একর জায়গা চাওয়া হয়েছে। তবে কোন কারণে পিডিবি জায়গা দিতে না পারলে রিলায়েন্স নিজেরাই জায়গার সংস্থান করবে বলেও প্রস্তাবে বলা হয়েছে। তৃতীয় ভাগে কক্সবাজারের মহেশখালীতে ৭৫০ মেগাওয়াট ক্ষমতার শেষ কেন্দ্রটি নির্মাণ করতে চায় রিলায়েন্স। এজন্য ৬০ একর জায়গা চেয়েছে।

প্রস্তাবে বলা হয়েছে, চূড়ান্ত চুক্তির ৩০ মাসের মধ্যে প্রথম কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। এতে আরও বলা হয়, জাতীয় গ্রিডে উৎপাদিত বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে প্রয়োজনীয় ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন নিমার্ণে পিজিসিবিকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত রিলায়েন্স।

এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ

৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জাতীয় পার্টিকে নিষিদ্ধের দাবি গণ অধিকার পরিষদের

জাতীয় পার্টিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষিদ্ধ করাসহ তিন দাবি জানিয়েছেবিস্তারিত পড়ুন

নুরুল হকের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিলেন খালেদা জিয়া

গণ অধিকার পরিষদের আহত সভাপতি নুরুল হকের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিয়েছেনবিস্তারিত পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে বন্দুক হামলায় দুই শিশু নিহত, আহত ১৭

যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের মিনিয়াপোলিস শহরে একটি ক্যাথলিক স্কুলে জানালা দিয়েবিস্তারিত পড়ুন

  • গাজায় অনাহারে ২ শিশুসহ ১০ জনের মৃত্যু
  • যুক্তরাষ্ট্রে কমছে বিদেশি শিক্ষার্থী ও সংবাদকর্মীদের ভিসার মেয়াদ
  • সিগারেটের আগুন থেকে দাবানল, সাইপ্রাসের ১০০ বর্গকিলোমিটার বনাঞ্চল পুড়ে ছাই
  • চবিতে ফের স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ-ইটপাটকেল নিক্ষেপ, সহ-উপাচার্যসহ আহত ১০
  • রাকসু কার্যালয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের তালা-ভাঙচুর
  • স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা: অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে ১,৬০৪ বার সড়ক অবরোধ হয়েছে
  • কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রেলপথ অবরোধ
  • স্ত্রী হত্যা মামলায় স্বামী গ্রেপ্তার
  • গণঅভ্যুত্থানে শহীদের কথা মাথায় রেখেই দেশটাকে নতুন করে গড়তে হবে
  • বিএনপি সুশাসনে ও জবাবদিহিতায় বিশ্বাস করে
  • ভাতার ১ম কিস্তি শুরু; গর্ভবতী ভাতার আবেদন শর্ত
  • ফোরজির সর্বনিম্ন গতি ১০ এমবিপিএস কার্যকর হচ্ছে সেপ্টেম্বর থেকে