একদিনেই ফেসবুক সেলিব্রেটি হয়ে গেছে শাকিব-অপুর ছেলে আব্রাহাম খান জয়। পুরো ফেসবুক জুড়ে তার বন্দনা। শাকিব খান ও অপু বিশ্বাস যে কত জনপ্রিয় তারও প্রমাণ মিলল আজ। এখন টক অব দ্য কান্ট্রি শাকিব-অপু। দীর্ঘদিন ধরে বিয়ে ও সন্তানের কথা গোপন রাখার জন্য সমালোচনা হলেও, শাকিব-অপুর সুখের সংসার চান সবাই। শাকিবকে আব্রাহাম ও অপুর কাছে ফিরে যেতে পরামর্শ দিয়েছেন চলচ্চিত্রসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

চিত্রনায়িকা মাহিয়া শারমীন আক্তার নীপা

আমি প্রতিদিন আল্লাহকে বলব, তুমি ঠিক ওর মতোই আমাকে একটা বেবি দিও। অত্ত মায়া, অত্ত নিষ্পাপ চোখের একটা জয় দিও। ইনশাআল্লাহ।

চিত্রনায়ক কাজী মারুফ

২০০৮ সালে মিথ্যে একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে একটি মামলার পর অপু বিশ্বাস মানুষটাকে পছন্দ করতাম না। কিন্তু অপু বিশ্বাসের ভালোবাসা শাকিব খানের প্রতি কতটা হতে পারে সেটাই বুঝলাম। অপু বিশ্বাস, আপনি হয়তো অনেক কষ্ট পেয়ে অথবা সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আজ ক্যামেরার সামনে এসেছেন। কিন্তু এর পরও আমি বলব, অপু বিশ্বাস আপনি এখনো শাকিবকে যথেষ্ট ভালোবাসেন। এবং তার পরিবারকে যথেষ্ট সন্মান করেন।

শাকিব ভাই, তোর নম্বর আমার কাছে নেই, একটা কথা বলি তোরে, হয়তো তোমাদের ঝগড়া হয়েছে বা মনোমালিন্য হয়েছে, যা কিছু হোক, বাচ্চাটার দিকে তাকিয়ে দ্যাখ, তোর ছেলেটা কিছুই বোঝে না, কিন্তু আস্তে আস্তে ও বড় হবে, বুঝতে শিখবে, কিন্তু সে যখন এগুলো জানতে পারবে তখন অনেক কষ্ট পাবে। তোর ছেলেরে কষ্ট দিবি? বাচ্চা বাপ ছাড়াও থাকতে পারে না, মা ছাড়াও থাকতে পারে না। যাই হোক, শাকিব তুই হিরো, পর্দার বাইরেও হিরো। আর অবশ্যই তুই ভালো মানুষ…সবকিছু ভুলে…এবং ফিরে যাও তোর স্ত্রী ও সন্তানের কাছে। পলিটিক্স করার সুযোগ করে দিস না ভিনদেশিদের। শুভ কামনা অপু বিশ্বাস, শাকিব খান এবং ছোট খান।

চলচ্চিত্র গীতিকার সুদীপ কুমার দীপ

চুপ ছিলাম। গতকাল থেকে এখন পর্যন্ত কী লিখব বুঝতে পারছিলাম না। শাকিব ভাই এবং অপু দিদি- দুজনই খুব কাছের মানুষ। আশপাশের অনেকেই সেটা জানেন। এই তো ৭ এপ্রিলের কথা। বিকাল ৫টার ফ্লাইটে কলকাতা যাবেন শাকিব ভাই। অফিসে কাজ করছি। এমন সময় তাঁর ফোন। ‘দীপ, তোমার অফিসের সামনে আসছি। ২০ মিনিট লাগবে। বের হও। কথা আছে।’ আমি গেলাম। আমাকে নিয়ে এয়ারপোর্ট গেলেন। নতুন ছবির পরিকল্পনার কথা জানালেন। রাজু চৌধুরী পরিচালক। বললেন, ‘এই বার রাজুভাইকে বইলো, একটু বাজেট বাড়াইতে। আর তোমার অপু দিদি অনেকদিন পরে স্ক্রিনে আসবে, সেটার দিকেও খেয়াল রাখতে বইলো।’ আমি সায় দিলাম। তিনি গাড়ি থেকে নামার সময় ড্রাইভারকে বললেন, ‘দীপকে অফিস দিয়ে তারপর যাবা।’
৯ এপ্রিল রাত ১০টা। অপু দিদির ফোন। রিসিভ করতেই….
-দাদা, শাকিবের সঙ্গে কি কথা হয়েছে?
-হুম, দিদি হয়েছে।
-আমার কথা কী বললো?
-বললো, অনেকদিন পর ক্যামেরায় ফিরছেন, অবশ্যই বড় বাজেট থাকতে হবে।
-(হাসি) যাক। শুনে খুশি হলাম। কাল সাইন করাবেন?
-রাজু ভাই তো পারলে আজই করায়।
-না, থাক। কাল করালেই হবে (হাসি)।
গতকাল অফিস এলাম। কাজ করছি। হঠাৎ বিকাল ৩টা ২৫ মিনিটে অপু দিদির ফোন।
-দাদা কই? অফিসে?
-হ্যাঁ, দিদি। সন্ধ্যায় ওয়েস্টিনে শাকিব ভাইয়ের সঙ্গে বসব।
-তার আর দরকার হবে না। আমি আসছি আপনাদের অফিসে (কণ্ঠটা কান্না জড়ানো)
-কী হয়েছে? কোনো সমস্যা?
ফোন কেটে দিলেন। একটু পরেই শুনলাম তিনি নিউজ টুয়েন্টিফোরে আসছেন। এক্সক্লুসিভ কিছু বলবেন। আর বুঝতে বাকি রইলো না। বেশ আগেই তাঁদের সন্তানের সঙ্গে আমি পরিচিত। বদিউল আলম খোকন ভাই মাস চারেক আগে মোবাইলে ছবি দেখিয়েছিলেন। অপুদিও স্বীকার করেছিলেন। কিন্তু সাংবাদিক হিসেবে পেশাদারিত্ব দেখাতে পারিনি।
শাকিব ভাই অপুদিকে কতোটা ভালোবাসেন তা খুব কাছ থেকে দেখেছি। কতো পরিচালককে চাপ দিয়েছেন অপুদিকে নায়িকা নিতে তার জলজ্যান্ত সাক্ষী আমি। গান লেখার সুবাদে সব চোখের সামনে দেখেছি। বদিউল আলম খোকন ভাই ‘ডেয়ারিং লাভার’ নির্মাণের সময় অন্য নায়িকা নিতে চেয়েছিলেন। শাকিব ভাই বেঁকে বসেন। শাহীন সুমন ভাই ‘ল্যাভ ম্যারেজ’ নির্মাণের সময় প্রযোজকের কারণে অন্য নায়িকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তখনও শাকিব ভাই একই কাজ করেন। ছবি দুটির গান লিখতে যেয়ে সব দেখেছি।
ঠিক একই ভাবে আরিফিন শুভর বিপরীতে দুটি ছবির সাইনিং মানি নিয়ে ঘুরেছি আমি নিজেই, প্রযোজক আমার বন্ধু মানুষ। কিন্তু কাজ হয়নি। শাকিব ছাড়া অপুদি ছবি করবেন না। এফ আই মানিক ভাই নতুন নায়কের বিপরীতে ২০১৪ সালে অপুদিকে নিতে চাইলেন। আমার সামনে ১০ লাখ টাকা অফারও করলেন। তবুও শাকিব ছাড়া ‘না’ করলেন অপু।
দুজন-দুজনের প্রতি এই ভালোবাসা দেখে সত্যিই তৃপ্তি পেতাম। আনন্দ লাগত। অথচ আজ দুজনের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি। একে অন্যকে ঘৃণা করছেন। কী এমন হলো মাঝখানে?
হুম। সেটাই খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। অবশ্য কদিন সময় লাগবে। শাকিব ভাইয়ের পাশে যেমন কয়েকজন দালালকে চিহ্নিত করা গেছে, ঠিক একই ভাবে অপু দিদির পাশেও কেউ না কেউ আছে। অন্ধকার থেকে তারাও আলোতে আসবেন। পরিষ্কার হবে তাদের রূপ। শুধু মাঝখান থেকে মায়া লাগছে আব্রাহামের কথা ভেবে।
কি নিষ্পাপ চেহারা! মায়ের কান্নাঝরা চোখের দিকে অপলক তাকিয়ে থেকে সে কিসের ইঙ্গিত দিলো, অপরাধীরা কি জানে? পতন অনিবার্য যারা এই চক্রান্তের সঙ্গে জড়িত। শাকিব ভাইকে যারা ফুলিয়ে ফাপিয়ে বিষিয়ে তুলছেন অপুদির কথা বলে, তাদের উপরওয়ালা ছাড় দিবেন না। ছাড় দিবেন না তাদেরও, যারা রাতারাতি অপুদিকে নিয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি করলেন।
আমি বিশ্বাস করি, খুব শিগগির শাকিব-অপু এক হয়ে আব্রাহামকে নিয়ে সুখে-শান্তিতে বাস করবেন।

‘ঘুড়ি তুমি কোন আকাশে ওড়ো’ গান খ্যাত গীতিকার ও সাংবাদিক লুৎফর হাসান লিখেন-

বাচ্চাটা একদম রাজপুত্তর। কী দারুণ দেখতে।

বিপাশা কবির, চিত্রনায়িকা

মাশা আল্লাহ পুরাই শাকিব খান। নেক্সট সুপারস্টার।
চিত্রপরিচালক দেবাশীষ বিশ্বাস

২০ বছর পর আমার সিনেমার নায়কের নাম আব্রাহাম খান জয়!!

তাসনোভা এলভিন, টিভি অভিনেত্রী

কি কিউট অপু বিশ্বাস আর শাকিব খানের বেবি আব্রাহাম খান জয়, মাশা আল্লাহ।

শান আরাফ রিপন, চিত্রনায়ক

আর যাই হোক ছিঃ ছিঃটা কিন্তু সিনেমার লোকদেরই শুনতে হবে… সব করবেন আপনি দোষ ঘাড়ে নিবে অন্যেরা…. বাহ ভালো তো….

এইচ এম রানা, গায়ক

ঘরের সিক্রেট আর ঘরের সৌন্দর্য পাবলিকলি টেনে এনে আমাদের জাতিসত্তাকে বিজাতিদের কাছে ছোট না করি … আসুন আমাদের ফেরেশতার মতো নিষ্পাপ সন্তানদের এতটাই সুন্দর করে মানুষ করে তুলি যেন তারা একদিন সুবিশাল আকাশকে চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারে সরে দাঁড়াও আমি মাথা উঁচু করব… আল্লাহ পাক আমাদের সকলের শুভবুদ্ধির বিকাশ ঘটান । (আমীন )

কস্টিউম ডিজাইনার ও কোরিওগ্রাফার রামীম রাজ

ভাই বিয়ে করেন নাই, বাচ্চা আপনার স্বীকার করছেন! তো বিয়ে না করলে বাচ্চার দরকার কি ছিল! আপনি একজন জনপ্রিয় ব্যক্তি, অভিনেতা, শিল্পী। আপনাকে দেখে মানুষ শিখবে। কাদা ছোড়াছুডি না করে সন্তান ও পরিবার নিয়ে সুখী হোন । পারিবারিক জীবন ও প্রফেশনাল জীবন আলাদা। পার্শ্ববর্তী দেশের শিল্পীদের দেখুন। নিজের বিবেকের কাছে প্রশ্ন করুন। ব্যক্তিজীবনে অসুখী হলে সারাবিশ্বের মানুষ কিংবা দর্শক কেউ মানসিক সান্ত্বনা ও ভালোবাসা দিতে পারবে না । মানুষের ভালোবাসা ও একজন শিল্পী হিসেবে আপনার গ্রহণযোগ্যতা আছে এবং থাকবে ।

শামীম আহমেদ রনি, চিত্রপরিচালক (শাকিবের ছবির)

ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের অপচেষ্টা যারা করছেন তাদের জন্য করুণা হচ্ছে… জয় অবশ্যই শাকিব খানের ছেলে…  জয়ের দায়-দায়িত্বও তাঁর… পিতা হিসেবে উনি সবই করেছেন জয়ের জন্য… এটা দিদিও কোনোভাবেই অস্বীকার করতে পারবে না… কিন্তু গল্পের পেছনেও হাজারো গল্প থাকে… সেই গল্পও আসবে… পুরো বিষয়টা সাধারণভাবে দেখলে ভুল হবে; কারণ এটা একজন সুপারস্টারের গল্প।… সবশেষে বলতে চাই, শাকিব খান আমাদের দেশের সম্পদ… আমাদের গর্ব… পাশে থাকুন… সত্য সত্যই.. সত্য বের হবেই…।

ওয়াসেক বিল্লাহ সৌধ- সিনিয়র সাংবাদিক

অপু-শাকিব ইস্যুতে সাধারণের প্রতিক্রিয়া অসাধারণ। মানুষ নারীর পাশে দাঁড়াতে শিখে গেছে।

বিনোদন সাংবাদিক ও চিত্রনাট্যকার সিমিত রয় অন্তর

‘কিং খান’ পদবি জুড়ে দিলেই কিং খান হওয়া যায় না। বুকের পাটা লাগে। সাহস লাগে। (শাহরুখ খান) অরিজিনালরা এভাবেই সন্তানদের নিয়ে সবার সামনে আসে। পুত্রসন্তানের পিতা হওয়ায় শাকিব খানকে অভিনন্দন। কিন্তু স্বামী হিসেবে ব্যর্থ হওয়ায় তিরস্কার।

তানজিল রিমন, সাংবাদিক

অপু বিশ্বাসকে দাবিয়ে রাখতে চেয়েছেন শাকিব খান। কিন্তু পারলেন না। সাহস নিয়ে মিডিয়ার সামনে যদি অপু বিশ্বাস না আসতেন, হয়তো বিষয়টা গুঞ্জনই থেকে যেত।