অবশেষে সমাপ্ত হলো ‘কিরণমালা’, ২ বছরে যে নির্মম ঘটনাগুলোর সাক্ষী বাংলাদেশ
অবশেষে শেষ হল ওপার বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক সিরিয়াল ‘কিরণমালা’। চলেছে টানা ২ বছর ৩ মাস। এই ধারাবাহিককে কেন্দ্র করে দর্শকদের মধ্যে তর্কাতর্কি শেষ পর্যন্ত রক্তারক্তি-দাঙ্গাহাঙ্গামায়ও পরিণত হয়েছে। কোথাও কোথাও ঝরেছে অনেক প্রাণ।
ভারতীয় টিভি চ্যানেল স্টার জলসায় প্রতি সোম থেকে রবিবার রাত ৮ টায় কিরণমালা সিরিয়ালটি প্রচারিত হতো। ‘ঠাকুর মা’র ঝুলি থেকে নেয়া সিরিয়ালটির কাহিনী মূলত ‘কিরণমালা’ চরিত্রটিকে কেন্দ্র করে। এই ধারাবাহিককে কেন্দ্র করে বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি অঘটন ঘটেছে। ঘটেছে গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও। কিরণমালার নেশা এদেশের কোন কোন দর্শকের মাথা এতটাই ভোঁতা করে দিয়েছিলো যে, কোলের শিশুটি আগুনে পুড়লো নাকি পানিতে পড়লো তা খেয়াল থাকতো না।
১৬ পরিবার নিঃস্ব:
২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার রাধানগর বড়দাপ (সরকারপাড়া) গ্রামে কিরণমালা সিরিয়ালটি দেখতে গিয়ে ১৬টি পরিবারের বসতবাড়ি-জিনিসপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। জানা যায়, ওইদিন রাত ৮.৪০ মিনিটে বাড়িতে সবাই ‘কিরণমালা’ সিরিয়াল দেখার সময় চুলার আগুন ফুসকে রান্নাঘরে আগুন লাগে।
এরপর তা আশপারের বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও মালামাল কিছুই রক্ষা করা যায়নি।
পানিতে ভাসে ২ শিশুর নিথর দেহ:
কিরণমালার সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে সাতক্ষীরার শ্যামনগরে। উপজেলার বাদুড়িয়া গ্রামের সবুর মোল্লা নামের এক পরিবারের সবাই একত্রে দেখছিলেন কিরণমালা। একই সময় পুকুর পাড়ে খেলা করছিলেন সবুর মোল্লার ছেলে আসাদুর রহমান (৬) ও তার চাচাতো বোন মনিরা খাতুন (৪)। একপর্যায়ে সবার অগোচরে শিশু দুটি পুকুরে পড়ে যায়। যখন সিরিয়াল শেষ হয় ততক্ষণে না ফেরার দেশে চলে যায় অবুঝ শিশু দুটি। পরিবারের সদস্যরা দেখেন পুকুরের পানিতে ভাসছে দুটি নিথর দেহ। দুই সন্তানকে হারিয়ে শোকের ছায়া নেমে আসে পুরো বাড়িতে।
ঘরের ভেতরে পুড়ে অঙ্গার তালাবদ্ধ মেয়ে:
কিরণমালা দেখতে গিয়ে আরেক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে কুষ্টিয়ার খোকসায়। উপজেলার চকহরিপুর গ্রামের খলিলুর রহমানের স্ত্রী শোকেলা খাতুন বাড়ির পাশের দোকানে দলবেঁধে কিরণমালা দেখতে যান। স্টার জলসার এই সিরিয়ালের প্রতি এতটাই নেশা ছিল তার যে দুই শিশু কন্যাকে ঘরে ঘুম পাড়িয়ে রেখে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে দেন তিনি। এরই মাঝে ঘটে যায় দুর্ঘটনা। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন ধরে তা পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় বড় মেয়ে সায়মা (১০) ঘরের জানালা দিয়ে বেরিয়ে আসতে হলেও আগুনে পুড়ে অঙ্গার হয় ছোট মেয়ে ঋতু (৭)। কিরণমালায় মগ্ন থাকা মা খবর পেয়ে যখন বাড়িতে পৌছান তখন দেখেন সব শেষ।
বোনের সঙ্গে অভিমান করে আত্মহত্যা:
কিরণমালা দেখা নিয়ে ২০১৫ সালের ২৭ আগস্ট নীলফামারীর ডোমার উপজেলার বোড়াবাড়ি এলাকায় চিত্তরঞ্জন সাহার দুই কন্যার মধ্যে ঝগড়া হয়। এটা এতোটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করে যে এক পর্যায়ে বড় বোন সঞ্জিতা সাহা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
সমুদ্র পাড়ে দুর্গারূপে নওশাবা
শুধু ঈদ কিংবা পূজা নয়, বিশেষ ধর্মীয় দিন উপলক্ষে ফটোশুটেবিস্তারিত পড়ুন
শুল্কমুক্ত গাড়ি খালাস করেছেন সাকিব-ফেরদৌস, পারেননি সুমনসহ অনেকে
আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের জন্য আমদানি করাবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত নায়িকা পরীমনির পরিবার সম্পর্কে এই তথ্যগুলো জানতেন?
গভীর রাতে সাভারের বোট ক্লাবে গিয়ে যৌন হেনস্তা ও মারধরেরবিস্তারিত পড়ুন