অবৈধদের ধরতে ব্যাপক ধরপাকড় মালয়েশিয়ায়
মালয়েশিয়ায় অবৈধ অভিবাসীদের বৈধ হতে (রি-হিয়ারিং প্রোগ্রাম) দ্বিতীয় দফা বেঁধে দেয়া সময়ও ৩০ আগস্ট শেষ হয়েছে। আর এ সময়ের মধ্যে অবৈধদের স্বেচ্ছায় দেশ ত্যাগ করতে দেশটির সরকার সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছিল।
তার পরও যারা সুযোগ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে তাদের বিরুদ্ধেই ৩১ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছে ইমিগ্রেশন বিভাগের সাঁড়াশি ধরপাকড় অভিযান।
অভিযান শুরুর পর দুই দিনে রাজধানী কুয়ালালামপুরসহ অন্যান্য প্রদেশে অভিযানে কী পরিমাণ বাংলাদেশীসহ বিদেশী ধরা পড়েছে সেই হিসাব শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টা পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি।
এবারের ধরপাকড় অভিযানে আবাসিক এলাকা, চলন্ত বাস, রেল, বিভিন্ন মার্কেট, ফুটপাথসহ সবখানে একসাথে পরিচালিত হচ্ছে। আর সাঁড়াশি অভিযান শুরুর পর থেকেই হাজার হাজার অবৈধরা কুয়ালালামপুর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে পালিয়ে গ্রেফতার এড়ানোর চেষ্টা করছে বলে কুয়ালালামপুর থেকে একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন।
শনিবার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যার আগে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো: শহীদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। একইভাবে কাউন্সিলর (শ্রম) সায়েদুল ইসলাম মুকুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি টেলিফোন ধরেননি।
এর আগে তিনি বলেছেন, মালয়েশিয়া সরকার যে সাধারণ ক্ষমার সুযোগ দিয়েছিল আমরা সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অবৈধ প্রায় আড়াই লাখ বাংলাদেশীকে বৈধতা দিতে সক্ষম হয়েছি। এর পরও যদি অবৈধ কোনো লোক এ দেশে থেকে যায় তাহলে আমরা তো আর তাদেরকে বাড়িঘর থেকে ডেকে এনে বৈধ করতে পারব না?
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মালয়েশিয়া সরকার বাংলাদেশীদের ক্ষেত্রে খুবই আন্তরিক। এর পরও প্রতিদিন এয়ারপোর্ট দিয়ে ট্যুরিস্ট ভিজিট ভিসার নামে বাংলাদেশ থেকে লোক আসা অব্যাহত থাকায় সরকার খুবই বিরক্ত। এটি দ্রুত বন্ধ হওয়া উচিত বলে তিনি মনে করেন।
গতকাল মালয়েশিয়া থেকে একজন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ধরপাকড় অভিযান প্রসঙ্গে বলেন, এবারের অবৈধদের বিরুদ্ধে ধরপাকড় অভিযান অনেক কঠিন দেখা যাচ্ছে। তারা এবার পরিকল্পনা করে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েই মাঠে নেমেছে। আর কোনো অবৈধ শ্রমিক তাদের দেশে থাকতে পারবে না। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ মুহূর্তে দালালদের ফাঁদে পড়ে, যাতে কোনো বাংলাদেশী মালয়েশিয়ায় না আসার চেষ্টা করে। তাহলে তার টাকাও যাবে পুলিশের হাতে ধরাও খাবে?
অভিযানের বেশ কিছু ছবিতে দেখা গেছে, কুয়ালালামপুর সিটি সার্ভিস বাসের ভেতর থেকে অবৈধ অভিবাসীদের পুলিশ কর্মকর্তারা আটক করে নিয়ে যাচ্ছেন। শুধু তা-ই নয়, আবাসিক এলাকা, বাংলাদেশীদের প্রিয় মার্কেট কোতারায়া বাংলা মার্কেট, টুইন টাওয়ার, রেলস্টেশন, ছোট-বড় মার্কেট কোনো কিছুই বাদ যাচ্ছে না অভিযান থেকে। দেখা গেছে, যারাই অভিযানে আটক হচ্ছেন তাদের সাথে সাথে লোহার জিঞ্জির দিয়ে হাত ও কোমর বেঁধে ফেলা হচ্ছে। এরপর তাদের ডকুমেন্ট যাচাই করছে। তবে এ অভিযানে কী পরিমাণ বৈধ শ্রমিক ধরা পড়ছেন সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো তথ্য জানানো হয়নি।
উল্লেখ্য, ৩০ আগস্ট পর্যন্ত থ্রি প্লাস ওয়ান নামক কর্মসূচির আওতায় অবৈধদের বিশেষ সাধারণ ক্ষমার সুযোগ দেয় দেশটির সরকার। এর আওতায় অবৈধ অভিবাসীরা ৩০০ রিংগিত জরিমানা এবং বিশেষ পাসের জন্য আরো ১০০ রিংগিতের বিনিময়ে স্বেচ্ছায় নিজে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারবেন। সময় শেষ হওয়ার দুই দিন আগে ২৯ আগস্ট অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক দাতুক সেরি মুস্তাফার আলি জানান, সাধারণ ক্ষমার মেয়াদ আর বাড়বে না।
৩১ আগস্ট থেকেই অবৈধ বিদেশীদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করা হবে। সাধারণ ক্ষমার কর্মসূচিতে অংশ নিতে আমরা তাদের অনেক সময় দিয়েছি। অবৈধ অভিবাসীদের আটক অভিযান একটি চলমানপ্রক্রিয়া জানিয়ে তিনি বলেন, জানুয়ারি থেকে ১৫ আগস্ট মোট ৯ হাজার ২০৮টি অভিযানে ২৮ হাজার ৬৩ জন অবৈধ অভিবাসী এবং ৭৯৯ জন নিয়োগকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তবে এবার যারা ধরা পড়বে তাদের বিরুদ্ধে কী ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে, তা সময়ই বলে দেবে। ধরপাকড় অভিযান শুরুর পর ডিটেনশন ক্যাম্পগুলোতে ঠাঁই নেই অবস্থা হয়েছে। এ সুযোগে একশ্রেণীর দালাল আবার মাঠে নেমেছে গ্রেফতারকৃতদের ছাড়িয়ে নেয়ার কথা বলে। তাদের থেকে সাবধান থাকতে হাইকমিশনের পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা আটকদের স্বজনসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ধর্ষণের অভিযোগের তদন্ত চলায় এমবাপ্পেকে বিজ্ঞাপন থেকে সরাল রিয়াল
আর্থিক দ্বন্দ্বের মধ্যে পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে আসার পর একেরবিস্তারিত পড়ুন
মিয়ানমারে বন্যায় মৃতের সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে ২২৬
ঘূর্ণিঝড় ইয়াগির প্রভাবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ মিয়ানমারে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণেবিস্তারিত পড়ুন
ইসরাইলি হামলায় আরও ৩৮ ফিলিস্তিনি নিহত
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরাইলি বাহিনীর তান্ডবে প্রাণ গেছে আরও ৩৮বিস্তারিত পড়ুন