অবৈধভাবে ঋণ নিয়েছিলেন খালেদার নিরাপত্তা কর্মকর্তা
অগ্রণী ব্যাংক থেকে অবৈধভাবে ঋণ অনুমোদনে বাধ্য করেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল (অব.) আবু আহমেদ জহিরুল হক।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের শাসনামলে এ ঘটনা ঘটে। তিনি নিজের প্রতিষ্ঠান মেসার্স পটেটো ফ্লাক্স (বিডি) লিমিটেডের নামে একাধিক প্রকল্প দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা গ্রহণ করেন।
বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সরকারি হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বাংলাদেশের মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় উপস্থাপিত এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
কমিটির সদস্যরা এনিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। কমিটির সভাপতি ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। একইসঙ্গে অনাদায়ী টাকা আদায় করে অনধিক ৬০ দিনের মধ্যে অডিট অফিসের মাধ্যমে বিষয়টি কমিটিকে জানানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সংসদের গণসংযোগ অধিশাখা থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ কর হয়, আবু আহমেদ জহিরুল হকের ইচ্ছাতে আমদানিকৃত যন্ত্রপাতি স্থাপনের আগেই অনিয়মিতভাবে জামানত ছাড়াই একাধিক চলতি মূলধন ঋণ বিতরণ করেন কর্মকর্তারা। এসব ঋণে টাকা কোনো প্রকল্পে লাগানো হয়নি। ভিন্ন খাতে তা স্থানান্তর করে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি প্রকল্প ও চলতি মূলধন ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেলেও অদ্যাবদি ব্যাংকে ফেরত দেওয়া হয়নি।
বৈঠকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের (সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, অগ্রণী ব্যাংক লিমিটেড, রূপালী ব্যাংক লিমিটেড, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, আইসিবি, বেসিক ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক লিমিটেড) ২০০৯-২০১০ অর্থ বছরের হিসেবের উপর বার্ষিক নিরীক্ষা প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) এ বিডিবিএল কর্তৃক বন্ধকীকৃত প্রকল্প সম্পদ বিক্রয়লব্ধ অর্থ হতে আইসিবি সংঘের আনুপাতিক হারে প্রাপ্য টাকা অনাদায়ী এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ব্যতীত অনিয়মিতভাবে স্বতন্ত্র বেতন স্কেলে বেতন ভাতাদি প্রদান নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থাপিত প্রতিবেদনে বলা হয়, সোনালী ব্যাংক গ্রাহকের রপ্তানি সামর্থ্য যাচাই না করে ব্যাক টু ব্যাক এলসি স্থাপন, পুনঃ তফসিলের শর্তানুযায়ী কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হওয়া সত্ত্বেও পুনরায় ব্যাক টু ব্যাক এলসি খোলার সুযোগ দিয়েছে। রপ্তানী ব্যর্থতার কারণে প্রকল্প ঋণসহ অন্যান্য দায় আদায় করতে পারছে না ব্যাংকটি।
প্লেজের ঘাটতি মালামালের মূল্য আদায় না করে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সিসি হাইপো ঋণসীমা বর্ধিতসহ নবায়ন করা, ফোর্সড পিএডি সৃষ্টির মাধ্যমে অতিরিক্ত বিনিয়োগ, অন্য ব্যাংকের প্রকল্প ও সিসি দায় অধিগ্রহণকালে উদ্যোক্তার ব্যবসায়িক পারফরমেন্স যাচাই ছাড়া ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে। সীমাতিরিক্ত ঋণপত্রের দায়সহ মালিকানা পরিবর্তনের নামে ব্যাংকের দায় বৃদ্ধি, মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ ও অন্য ব্যাংকের দায় গ্রহণের শর্তাদি বাস্তবায়নের আগেই প্রকল্প ঋণ বিতরণ এবং পর্যাপ্ত জামানত বিহীন প্রকল্প গ্রহণসহ ব্যাংকটিতে নানা অনিয়ম হয়েছে।
এছাড়াও অপ্রতুল জামানত নিয়ে প্রকল্পে বিনিয়োগকৃত অর্থের সুদ মওকুফসহ একাধিক সুবিধা প্রদান করা সত্ত্বেও সমুদয় পাওনা আদায় না হওয়া, রপ্তানি বিল প্রত্যাবাসিত না হওয়া, বিভিন্ন প্রকার অনিয়মের মাধ্যমে শামীম এ্যালুমিনিয়াম ইন্ডাষ্ট্রীজকে ঋণ প্রদান, খেলাপী ঋণ গ্রহীতা হওয়া সত্ত্বেও অনিয়মিতভাবে ভিন্ন ব্যাংকের দায় অধিগ্রহণ করে ঋণ বিতরণ, পর্যাপ্ত জামানত থাকা সত্ত্বেও পুনঃ পুনঃ ঋণ সুদ মওকুফ সুবিধা প্রদান এবং শর্তানুযায়ী ঋণের টাকা সমন্বয় না করে ব্যাংকের ক্ষতি করা হয়েছে।
বৈঠকে কমিটির সদস্য এ কে এম মাঈদুল ইসলাম, পঞ্চানন বিশ্বাস, আ ফ ম রুহুল হক, মো. শামসুল হক টুকু, মইন উদ্দীন খান বাদল ও রেবেকা মমিন এবং সিএন্ডএজি মাসুদ আহমেদ ও সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন উপস্থিত ছিলেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
উপদেষ্টা হাসান আরিফ আর নেই
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়েরবিস্তারিত পড়ুন
গাড়িচাপায় বুয়েট শিক্ষার্থীর মৃত্যু: ডোপ টেস্টে গ্রেপ্তার দুজন ‘পজিটিভ’
প্রাইভেট কার চাপায় বুয়েট শিক্ষার্থী মুহতাসিম মাসুদের নিহতের ঘটনায় গ্রেপ্তারবিস্তারিত পড়ুন
সেন্টমার্টিনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান
দেশের প্রবাল সমৃদ্ধ একমাত্র দ্বীপ সেন্টমার্টিনের পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষায় সরকার পর্যটকবিস্তারিত পড়ুন