অভিজাত এলাকায় অফিস নিয়ে প্রতারণাই ওদের পেশা
প্রতারণাই তাদের পেশা। রাজধানীর অভিজাত এলাকায় সাজানো গোছানো অফিস নিয়ে তারা এই কর্মটি করে যাচ্ছিল। তবে পরিস্থিতির চাপে মাঝে মধ্যেই তাদেরকে অফিস বদল করতে হয়েছে। নতুন অফিস নেয়ার পরই নতুন প্রতারণার ছক কষত চক্রটি।
গত ২০ বছর ধরেই চক্রটি সক্রিয় ছিল উত্তরা ও গুলশানের মতো এলাকায়। শত শত মানুষের পকেট থেকে তারা কৌশলে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি কোটি টাকা। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখের সামনে বা কাউকে ম্যানেজ করে এই কর্মটি করে যাচ্ছিলেন বাধাহীনভাবে। অবশেষে র্যাবের জালে ধরা পড়ে চক্রটি। এর মূল হোতা হচ্ছে- হুমায়ুন কবির ও সৈয়দ মারুফ হাসান।
র্যাবের একটি সূত্র জানায়, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে চাকরি প্রত্যাশীদের কাছে দেয়া হতো লোভনীয় বেতনের প্রস্তাব। নানা ছলচাতুরি করে ঐসব সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে আদায় করা হতো মোটা অংকের টাকা। এক পর্ব শেষ হলেই নতুন অফিস খোঁজা হতো। এছাড়া সরকারি চাকরি দেয়ার নাম করে বা কাউকে ব্যবসার অংশীদার বানানোর ফাঁদ পেতে আদায় করা হতো মোটা অংকের টাকা। গত ২০ বছরে বহুবার এই চক্রটিকে অফিস বদল করতে হয়েছে।
সম্প্রতি একটি অভিযোগের তদন্ত করতে গিয়ে এই পেশাদার প্রতারক চক্রের সন্ধান পায় র্যাব। পরে এই চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকতৃরা হলেন- হুমায়ুন কবির, সৈয়দ মারুফ হাসান, শাহাবুদ্দিন ও জামাল শেখ। জিজ্ঞাসাবাদে বের হয়ে আসে চাঞ্চল্যকর নানা কাহিনী।
গত মঙ্গলবার রাতে উত্তরার সেক্টর-১২, রোড-৫ এর ৪৪ নম্বর বাড়ি থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃতরা অভিজাত এলাকায় সুসজ্জিত অফিস খুলে আকর্ষণীয় বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা বারিধারায় কথিত নাতান গ্রুপ নামে একটি বায়িং হাউজ খোলে এবং পত্রিকায় ওই কোম্পানির বিভিন্ন পদে লোক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেয়। বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে একাধিক ব্যক্তি আবেদন করে। এক পর্যায়ে কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার (একাউন্টস) পদে চাকরি হয়ে গেছে জানিয়ে এক ভুক্তভোগিকে অফিসে যেতে বলা হয়। আবু হেনা নামে ওই ভুক্তভোগী অফিসে যাওয়ার পর আবেদনকারীর সামনে প্রতারক চক্র মোবাইল ফোনে কথিত বিদেশির সঙ্গে শিপমেন্টের বিষয়ে কথা বলে। কথোপকথনের একপর্যায়ে চট্টগ্রাম পোর্টে তাদের কোম্পানির মালামালের একটি লাভজনক চালান আটকে আছে, টাকার অভাবে চালানটি খালাস করা যাচ্ছে না বলে জানায়।
২৫/৩০ লাখ টাকা হলে মালগুলো খালাস করা সম্ভব হবে উল্লেখ করে আবু হেনাকে টাকার বিনিময়ে কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার হওয়ার প্রস্তাব করে প্রতারক চক্রটি। আবেদনকারী প্রতারকদের প্রতারণায় প্রলুব্ধ হয়ে ২৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা প্রতারকদের হাতে তুলে দেন আবু হেনা। এর ২-৩ দিন পর অফিসে যোগদান করতে গেলে তিনি অফিস তালাবদ্ধ দেখতে পান।
পরে জানা যায়, প্রতারক চক্রটি উত্তরায় আরেকটি অফিস খুলে প্রতারণা শুরু করে। উত্তরার সেই অফিস থেকে মঙ্গলবার রাতে প্রতারক চক্রের মূলহোতা হুমায়ুন কবিরসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মারুফ ও হুমায়ুন ২০ বছরের বেশি সময় ধরে এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত বলে জানিয়েছেন। তারা ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থানে অফিস নিয়ে ছদ্মনাম, পরিচয় ও মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছিলেন। ওই চক্রে আরো ৪ থেকে ৫ জন রয়েছে। তাদের ধরতেও অভিযান চলছে বলে জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
টসে জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে স্বাগতিক ওয়েস্টবিস্তারিত পড়ুন
রাস্তা আটকে যমুনা ফিউচার পার্কের ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ
যমুনা ফিউচার পার্কে মোবাইলের দোকানে চুরির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভবিস্তারিত পড়ুন
যে ৫ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশি নাগরিকদেরবিস্তারিত পড়ুন