অসহায় দরিদ্ররা বিনামূল্যে মামলা পরিচালনার সুযোগ পাচ্ছেন
দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের অসহায় দরিদ্ররা বিনামূল্যে মামলা পরিচালনার সুযোগ পাচ্ছেন।
সাধারণ মানুষের মধ্যে ধারণা ছিল যে উচ্চ আদালতে অনেক বেশি টাকা ছাড়া মামলা করার সুযোগ নেই। সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির কার্যক্রম সেই ধারণা পাল্টে দিয়েছে।
গত বছরের আগস্ট থেকে উচ্চ আদালতে শুরু হয়েছে এই বিনামূল্যে আইনী সেবা প্রদান।
সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসের কো-অর্ডিনেটর অ্যাডভোকেট রিপন পৌল স্কু জানান, গত এক বছরে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার সুপ্রিম কোর্ট ইউনিট অসহায় দরিদ্রদের ৩৫০টি মামলা নিয়েছে।
এর মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছে ১৯৬টি। গত এক বছরে আবেদন পড়ে ৩৯৭টি। এর বেশির ভাগ জেল আপিল, দেওয়ানি ও ফৌজদারি আপিল ও রিভিশন, রিট ও লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন)।
এছাড়া গত এক বছরে মৌখিক ভাবে আইনী পরামর্শ দেয়া হয়েছে ৩৯৫ জনকে।
সুপ্রিম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার সাব্বির ফয়েজ বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে অসহায় ব্যক্তিদের বিনামূল্যে আইনি সহায়তা ও পরার্মশ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি। প্রতি বছর তুলনামূলকভাবে জাতীয় আইনগত সহায়তা কেন্দ্রের সেবার মান বাড়ছে। সুপ্রিমকোর্ট লিগ্যাল এইডের কার্যক্রম গতিশীল হচ্ছে। তাদের কার্যের পরিধি বাড়ছে।
তিনি বলেন, আশা করি সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি আগামীতে আরো বেশি সেবা দিতে পারবে।
অসচ্ছল, সহায়সম্বলহীন ব্যক্তিকে বিনা মূল্যে আইনি সহায়তা দিতে ২০০০ সালের ২৬ জানুয়ারি আইনগত সহায়তা প্রদান আইন পাস হয়। এরপর সরকার জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা প্রতিষ্ঠা করে। তবে প্রয়োজনীয় প্রবিধানমালা ও জনবলের অভাবে সংস্থাটি ছিল অকার্যকর।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালে সংস্থাকে ঢেলে সাজানো হয়। জেলা আদালতে সংস্থার কার্যালয় স্থাপনের পাশাপাশি স্থানীয় কমিটিও গঠন করা হয়। গত বছর থেকে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কার্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হয়।
এই কার্যালয়ের তথ্য অনুসারে, মামলা পরিচালনায় বর্তমানে হাইকোর্ট বিভাগে ৭৭ ও আপিল বিভাগে ছয় আইনজীবী কাজ করছেন। সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির তত্ত্বাবধানে লিগ্যাল এইড কার্যালয়ের মাধ্যমে আইনগত পরামর্শ, মামলা দায়ের ও পরিচালনার জন্য আইনজীবী নিয়োগ, মামলার গুণাগুণ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মতামত প্রদান ও মামলার আনুষঙ্গিক ব্যয় সরকারিভাবে বহন করা হয়।
কারা পাবেন এই সেবা : ২০১৪ সালের আইনগত সহায়তা প্রদান নীতিমালা অনুসারে সুপ্রিম কোর্টে কোনো মামলায় আইনগত সেবা পেতে হলে আর্থিকভাবে অসচ্ছল ব্যক্তির বার্ষিক গড় আয় দেড় লাখ এবং অন্যান্য আদালতের ক্ষেত্রে এক লাখ টাকার ঊর্ধ্বে হবে না।
এদিকে কারাগারে আটক বন্দিদের আইনি সেবার মানোন্নয়নে দেশের প্রত্যেকটি জেলার কারাগারগুলোতে চিঠি পাঠিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি।
গত ৫ অক্টোবর প্রেরিত এ চিঠিতে বিনা বিচারে আটক ও অসহায় বন্দিদের সরকারের বিনামূল্যে আইনি সেবার বিষয়ে অবহিত করার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি তাদের বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষ যেন লিগ্যাল এইড কমিটির সঙ্গে তথ্য বিনিময় করে- সে কথাও বলা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসের কো-অর্ডিনেটর অ্যাডভোকেট রিপন পৌল স্কু বলেন, ‘কারাগারে আটক বন্দিদের আইনি সেবার মানোন্নয়নে গত ৫ মে দেশের প্রত্যেকটি জেলার কারাগারে চিঠি পাঠিয়ে তথ্য বিনিময়ের পাশাপাশি জেল আপিল মামলা অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
দেশের স্বল্প আয়ের ও অসহায় নাগরিকদের আইনি সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ২০০০ সালে আইনগত সহায়তা প্রদান আইন করা হয়। এ আইনের অধীনেই প্রতিষ্ঠা করা হয় জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা।
এ সংস্থার অধীনে সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের ৬৪ জেলায় লিগ্যাল এইড কমিটি বিনামূল্যে আইনি সেবা নিয়ে কাজ করছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন
ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন