অস্ত্রসহ আটকের পর জামিন পেয়ে উধাও হন ‘জঙ্গি’ আহসান
টাঙ্গাইলে সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় র্যাবের অভিযানে নিহত আহসান হাবিব শুভ প্রায় দুই বছর আগে রাজশাহীর এক শিবির কর্মীর সঙ্গে অস্ত্রসহ পুলিশের সঙ্গে ধরা পড়েছিলেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এই ছাত্র পরে জামিনে মুক্তি পান। এরপর তিনি আর বিশ্ববিদ্যালয়ে যাননি।
পুলিশ জানায়, ২০১৪ সালের ৯ ডিসেম্বর রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে আকাশ আলী নামে এক পুলিশ সদস্যকে গুলি করার পর রাজশাহীর শিবির ক্যাডার হাসান আলী ও আহসান হাবিবকে আটক করেছিল পুলিশ।
ওই অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন গোদাগাড়ী থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক মেহেদি হাসান। তিনি জানান, ওই দিন বিকালে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে উপজেলার কসাইপাড়া এলাকায় তিনি দুইজন কনস্টেবলকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখছিলেন।
সন্ধ্যার একটু আগে আহসান হাবিব ও হাসান আলী একটি মোটরসাইকেলে চড়ে রাজশাহীর দিকে যাচ্ছিল। মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল আহসান। আর পেছনে বসেছিলেন হাসান। থামাতে সংকেত দেয়ার পরও তারা পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সদস্য আকাশ আলী তাদেরকে ধরার চেষ্টা করেন।
এ সময় আহসান হাবিব তার কোমর থেকে পিস্তল বের করে আকাশকে লক্ষ্য করে গুলি করেন। গুলিটি আকাশের পায়ে লাগে। এরপর আরেক পুলিশ সদস্য আহসানকে জাপটে ধরেন। তখন তাদের কাছ থেকে একটি পিস্তল, সাতটি গুলি ও দুটি ম্যাগজিন উদ্ধার করা হয়।
উপপরিদর্শক মেহেদি জানান, ‘ওই দিন মোটরসাইকেলের পেছনে বসে থাকা হাসানের পায়ে অস্ত্রোপচার করা ছিল। এ কারণে তিনি পালাতে পারেননি। তাদের দুই জনকে আটক করে থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা করা হয়।
হাসান আলীর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার গোলাপবাজার গ্রামে। আর আহসান হাবিবের বাড়ি নওগাঁর রানীনগর উপজেলার রাজাপুর গ্রামে। গত শনিবার টাঙ্গাইলের কাগমারায় সন্দেহভাজন জঙ্গি আস্তানায় র্যাবের অভিযানে নিহত হন তিনি।
আহসান হাবিব শুভ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পড়াশোনা করতেন। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে অস্ত্রসহ আটক হওয়া সময় তিনি স্নাতক তৃতীয় বর্ষে ছিলেন। আটক হওয়ার পর ২০১৫ সালের মে মাস পর্যন্ত তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন। কিন্তু জামিনে মুক্ত হওয়ার পর তিনি নিখোঁজ হন।
পরে ২০১৫ সালের ৭ জুলাই আহসানের বাবা আলতাফ হোসেন রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন (নম্বর ৩৬৫)।
বোয়ালিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহাদত হোসেন খান বলেন, ‘আহসানকে খুঁজে পেতে বিভিন্ন স্থানে তার ছবিসহ বার্তা পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তার কোনো হদিস মেলেনি।’
রাজশাহী নগর পুলিশের মুখপাত্র সহকারী কমিশনার ইফতে খায়ের আলম বলেন, আহসান নিখোঁজ থাকায় সে জঙ্গি কর্মকা-ে জড়িয়ে পড়েছে, এমন আশঙ্কা পুলিশেরও ছিল। তার ব্যাপারে ব্যাপক অনুসন্ধান চালানো হয়েছিল। কিন্তু তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সভাপতি মাসুদ আখতার বলেন, গণমাধ্যমে ছবি দেখে তারা নিশ্চিত হয়েছেন, আহসানই তাদের নিখোঁজ শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘অস্ত্রসহ আটক হওয়ার পর জামিন পেলেও সে ক্যাম্পাসে আসতো না। তার পরিবারের লোকজন অনেক খুঁজেও তাকে পাননি।’
আহসানের গ্রামের বাড়ি নওগাঁর রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান মুঠোফোনে জানান, আহসান নওগাঁ কে ডি স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও নওগাঁ সরকারি কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। এরপর ইংরেজি বিভাগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। রাজশাহী যাওয়ার পরই তিনি জঙ্গি কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। তার ব্যাপারে এলাকার কোনো মানুষ কিছু জানেন না।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
টসে জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ
দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচে টসে জিতে স্বাগতিক ওয়েস্টবিস্তারিত পড়ুন
রাস্তা আটকে যমুনা ফিউচার পার্কের ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ
যমুনা ফিউচার পার্কে মোবাইলের দোকানে চুরির প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভবিস্তারিত পড়ুন
যে ৫ দেশে যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশিদের জন্য সতর্কতা
থাইল্যান্ড, মিয়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায় যাওয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশি নাগরিকদেরবিস্তারিত পড়ুন