আইএস প্রশিক্ষণ স্কুলের প্রথম স্নাতক ভারতীয় যুবক
আইএস জঙ্গি দমনে সবসময় কড়া মনোভাব পোষণ করেছে ভারত। অথচ আইএসের প্রশিক্ষণ স্কুল থেকে যে প্রথম স্নাতক মানবোমা হওয়ার শিক্ষা নিয়েছিল, সে ভারতেরই যুবক।
যদিও শিক্ষাগত যোগ্যতায় স্নাতক হলেও মানববোমা হওয়ার শিক্ষায় ভালোভাবে পাশ করেনি মহারাষ্ট্রের ওই সিভিল ইঞ্জিনিয়ার। কেননা প্রতিটি আক্রমণেই সে ব্যর্থ হয়েছে। তাই ব্যর্থ হয়ে পুলিশের কাছে ধরা পড়ার পর নিজের কৃতকার্যের জন্য নয়, শহীদ হতে না পারার জন্য আক্ষেপ রয়ে গিয়েছে মাজিদের।
জানা গেছে, আইএসের প্রশিক্ষণ স্কুলের ওই প্রথম স্নাতকের নাম আরিব ফইয়াজ মাজিদ। মহারাষ্ট্রের পানভেলের বাসিন্দা বছর ২৩-এর মাজিদ পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার ছিল। শহীদ হওয়ার তাগিদে গত বছর আইএসে যোগ দেয়। তারপর আইএসের প্রশিক্ষণ স্কুল থেকে মানববোমা হওয়ার প্রশিক্ষণ নিয়ে পুরোদমে লড়াইয়ে নেমে পড়ে। লড়াইয়ে নেমে ইরাকের মসুলে কুর্দিস সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধেই প্রথম আক্রমণ হানে মাজিদ। কিন্তু ব্যর্থ হয়। তারপর আরও দু’বার অভিযান করেও ব্যর্থ হয়।
পরপর তিনবার ব্যর্থ হওয়ার পর একরাশ আফসোস নিয়েই গত বছরের নভেম্বরে দেশে ফিরে আসে এবং পুলিশের জালে ধরা পড়ে মাজিদ।
কিন্তু সিভিল ইঞ্জিনিয়ার মাজিদের জীবনটা তো অন্যরকম হতে পারত! সমস্ত কিছু ছেড়ে সে আইএসে নাম লেখাল কেন?
এমন প্রশ্ন করা হলে বছর তেইশের যুবকের সোজাসাপ্টা জবাব, শহীদ হতে চেয়েছে সে। তাই বারবার চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর পুলিশের কাছে ধরা পড়েও অকুতোভয় পানভেলের বাসিন্দা মাজিদ। তাই তার কৃতকর্মের কথা বলতেও সে ভয় পায় না। বরং জোর গলায় সমস্ত কিছুর বর্ণনা দেয়।
গোয়েন্দাদের মাজিদ জানায়, ২০১৪ সালের ২৪ মে চার বন্ধুর সঙ্গে মুম্বই ছেড়ে সুদূর ইরাকে পাড়ি দেয় মাজিদ। তারপর সেখানে গিয়ে আইএসে নাম লেখায় এবং আইএসের প্রশিক্ষণ স্কুলে মানবোমা করিগর হওয়ার প্রশিক্ষণ নেয়।
২০১৪ সালের অগস্টে কুর্দিস সেনাবাহিনীর উপর প্রথম আক্রমণ হানার চেষ্টা করে মাজিদ। কিন্তু আক্রমণের আগের দিন ন্যাটো বাহিনীর অভিযানের ফলে তার অভিযান ব্যর্থ হয়ে যায়।
মাজিদ যে গাড়িতে বোমা রেখেছিল, সেটি বুঝতে পেরে বোমা নিষ্ক্রিয় করে দেয় ন্যাটো। প্রথম অভিযানে ব্যর্থ হলেও ভেঙে পড়েনি ভারতের সিভিল ইঞ্জিনিয়ার মাজিদ। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে ফের রাবিয়ায় কুর্দিস সেনাবাহিনীর উপর আক্রমণ আনার চেষ্টা করে সে।
এবারেও গাড়িতে বিস্ফোরণের পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু সেটিও ব্যর্থ হয়। তারপর কুর্দিস সেনাবাহিনীর সঙ্গে মাজিদের একবার তুমুল গুলির লড়াই হয়। তখন তার স্বপ্নপূরণের সময় আসন্ন বলে মনে করেছিল মাজিদ। কেননা, মাজিদের দেহে বোমা বাঁধা ছিল।
তাই সে ভেবেছিল, এই গুলির লড়াইয়ে একটি গুলি তার গায়ে লাগবে এবং প্রচণ্ড বিস্ফোরণের সঙ্গে শহীদের মত মৃত্যুবরণ করবে সে। কিন্তু আবু সাদিক নামে আরেক আইএস সদস্য তাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
ফলে গুলির লড়াইয়ে আহত হলেও তার স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে যায়। সিভিল ইঞ্জিনিয়ার মাজিদ অভিযানে সফল হতে তার ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার প্রয়োগও যে করেছিল, সে কথা গোয়েন্দাদের জানাতেও দ্বিধাবোধ করেনি। যদিও তার কোনও চেষ্টাই সফল হয়নি।
মাজিদকে গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহীতার মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। বর্তমানে ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনীর অধীনে রয়েছে সে। ভবিষ্যতে তার কী পরিণাম হবে, তা জানা নেই।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা মৃত্যুদণ্ডের সাজাও হতে পারে মাজিদের। কিন্তু সেদিকে তার ভ্রুক্ষেপ নেই। তার একটাই আক্ষেপ, আইএসে যোগ দিয়েও শহীদ হতে পারল না।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
প্রকাশ্যে জানালেনঃ দুই পরিচালকের সঙ্গে ‘প্রেম’ ছিল পায়েলের
টলিউড ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির স্বনামধন্য দুজন পরিচালক রাজ চক্রবর্তী ও আবিরবিস্তারিত পড়ুন
প্রথম ‘সন্তানের’ জন্মলগ্নে কেঁদেছিলেন দেব ! দায়িত্ব অনেকটাই একা সামলাচ্ছেন তিনি
শিরোনাম পড়ে ভাবছেন, নায়ক দেব তো বিয়েই করেননি, তাহলে সন্তানবিস্তারিত পড়ুন
আলোচিত বাবা রাম রহিমের আয় কত, অনেকেই জানেনা?
ভারতের বিতর্কীত ধর্মগুরু বাবা রাম রহিমের পঞ্জাব, হরিয়ানায় স্থাবর সম্পত্তিরবিস্তারিত পড়ুন