আইনে নিষিদ্ধ, তবু কিশোরকে হাতকড়া
হৃদয় (ছদ্মনাম), ১৬ বছরের কিশোর। গাজীপুরের কিশোর উন্নয়নকেন্দ্র থেকে ঢাকার আদালতে হাজিরার জন্য তাকে আনা হয়েছে। তাও আবার হাতকড়া পরিয়ে, যা আইনে নিষিদ্ধ। আজ রোববার তার মতো একাধিকজনকে ঢাকার কিশোর আদালতে হাতকড়া পরিয়ে হাজির করা হয়।
আজ দুপুরে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিমের হাজতখানার সামনে হাতকড়া পরানো এসব কিশোরকে দেখা যায়। গাজীপুরে কিশোর উন্নয়নকেন্দ্র থেকে একটি কালো মাইক্রোবাসে করে তাদের হাতকড়া পরিয়ে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়।
২০১৩ সালের শিশু আইনে বলা হয়েছে, ১৮ বছরের নিচে সবাই শিশু হিসেবে গণ্য হবে। এই আইনের ষষ্ঠ অধ্যায়ের গ্রেপ্তার ইত্যাদি প্রসঙ্গে ৪৪-এর (৩) এ বলা হয়েছে, ‘শিশুকে গ্রেফতার করিবার পর গ্রেফতারকারী পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেফতারের কারণ, স্থান, অভিযোগের বিষয়বস্তু, ইত্যাদি সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে শিশুবিষয়ক পুলিশ কর্মকর্তাকে অবহিত করিবেন এবং প্রাথমিকভাবে তাহার বয়স নির্ধারণ করিয়া নথিতে লিপিবদ্ধ করিবেন।
তবে শর্ত থাকে যে, গ্রেফতার করিবার পর কোন শিশুকে হাতকড়া বা কোমরে দড়ি বা রশি লাগানো যাইবে না।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আদালতে কিশোরদের নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত একজন কনস্টেবল বলেন, ‘আমাদের বলে লাভ নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবে। এরা ১৬ বছরের নিচে হলেও ভয়ঙ্কর অপরাধী। পালিয়ে গেলে দায় কে নেবে?’
তবে এ বিষয়ে আইনের ব্যাপারে জানতে চাইলে ওই পুলিশ সদস্য বলেন, ‘এসপির কাছ থেকে জেনে নিন।’
এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সুলাইমান রাতে বলেন, ‘কিশোরদের হাতকড়া পরানোর কথা নয়। এটা আইনত নিষিদ্ধ। যদি তারপরও কোনো পুলিশ সদস্য এটা করে থাকেন, তাহলে বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’
পুলিশ ‘ভয়ংকর অপরাধী’ হিসেবে দাবি করলেও কিশোর হৃদয় জানায়, যাত্রাবাড়ী থানার একটি ছিনতাইয়ের মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। তাকে পুলিশ হাতকড়া পরিয়ে গাজীপুরের কিশোর উন্নয়নকেন্দ্র থেকে এনেছে। হাজিরা শেষে আবার তাকে কিশোর উন্নয়নকেন্দ্রে পাঠিয়ে দিবে। সে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে।
এ বিষয়ে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখার পরিদর্শক আসাদুজ্জামান বলেন, ‘পুলিশ কিশোরদের হাতকড়া পরিয়েছে তা সত্য। কিন্তু কিশোররা ভয়ঙ্কর অপরাধী। এদের হাতকড়া না পরিয়েও উপায় নেই।’
পরিদর্শক আরো বলেন, ‘এরা আমাদের আদালতে আসেনি। তাদের তোলা হয়েছে কিশোর আদালতে এবং সব কিশোরদের মামলা ঢাকার তেজগাঁও, উত্তরা পশ্চিম থানা ও ডিএমপির বিভিন্ন থানায়।’
শিশু আইনের ৪৪ ধারায় গ্রেপ্তার, আটকের ব্যাপারে বিস্তারিত বলা আছে উল্লেখ করে পরিদর্শক আরো বলেন, ‘সেই আইন অনেক পুলিশ মানেন না। কিন্তু আমাদের আদালতে সে ধরনের কিশোর অপরাধী আসলে আমরা আইনানুযায়ী কাজ করি।’
ঢাকা আদালতের পুলিশ প্রধান উপকমিশনার আনিসুর রহমান জানান, আসামিদের গাজীপুরের কিশোর আদালত থেকে হাতকড়া পরিয়ে আনা হয়েছে। আদালতের কোনো পুলিশ হাতকড়া পরাননি। এ বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারবে গাজীপুরের পুলিশ। ওখানে খোঁজ নিলে বিস্তারিত জানা যাবে।
‘আইন অনুযায়ী পুলিশ হাতকড়া পরাতে পারেন না- এটা ঠিক’, যোগ করেন উপকমিশনার।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ড. ইউনূসের মন্তব্য দেশের মানুষের জন্য অপমানজনক : আইনমন্ত্রী
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাকে পৃথিবীর বিভিন্নবিস্তারিত পড়ুন
ময়মনসিংহে ওসি-এসপি’র বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর
সরকারি দায়-দায়িত্ব ও কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি, সম্পদের যথাযথবিস্তারিত পড়ুন
ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় জনগণের সাথে রায়েছে বিচার বিভাগ
দেশের মানুষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে বিচার বিভাগ জনগণের সঙ্গে আছেবিস্তারিত পড়ুন