আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি কি আগাম নির্বাচনের ইঙ্গিত?
টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পর তিন বছর পূর্ণ করেই পরের নির্বাচনের জন্য কিছুটা ব্যস্ত হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা নির্বাচনি ইশতেহার তৈরির তাগিদ এবং দলীয় নেতাকর্মীদের নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন এরই মধ্যে। নির্বাচন নিয়ে দলের শীর্ষস্থানীয় নেতারাও বক্তব্য দিচ্ছেন প্রায়ই। এসব আগাম নির্বাচনের ইঙ্গিত কিনা,তা নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা।
এছাড়া দল থেকে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম প্রচারের ওপর গুরুত্বারোপ, জেলায় জেলায় দলের বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণও আগাম নির্বাচনের ইঙ্গিতকে জোরালো করে তুলেছে।
সম্প্রতি ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে শেখ হাসিনা নির্বাচনি ইশতেহারের কাজ শুরু করার তাগিদ দিয়েছেন। এর আগে গত অক্টোবরে দলের জাতীয় সম্মেলনে নেতাকর্মীদের নির্বাচনমুখী হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি। সম্প্রতি দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঘোষণা করেন, আগামী তিন মাসের মধ্যে নির্বাচনি ইশতেহার তৈরি করা হবে।
এরপরই বিভিন্ন মহলে আগাম নির্বাচন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন বলেন, নির্বাচন আগাম না হলেও আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রস্তুতি যে আরম্ভ হয়ে গেছে, তা বলা যায়। আবার অন্যদিক থেকে ধরা হলে, আওয়ামী লীগ একটি বড় দল। এত বড় সংগঠনকে নির্বাচন উপযুক্ত করতে সময় প্রয়োজন। তাই একটু আগেই প্রস্তুতি নেওয়ার কাজ শুরু করেছে।
তবে নির্বাচনের প্রায় দুই বছর আগে এমন তোড়জোড়কে খুব একটা স্বাভাবিক মনে করছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সম্পাদক ড.বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ এত আগে কেন নির্বাচনমুখী হচ্ছে, তা আমার বোধগম্য নয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের কয়েকজন নেতা বলছেন, জানি না আগাম নির্বাচন হবে কিনা। তবে এটা ঠিক যে আমরা আগাম প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেছি। তারা আরও বলেন, আমরা ইশতেহার করার কাজ শুরু করেছি,নির্বাচন মাথায় নিয়ে নেতাকর্মীদের রাজনীতি করার নির্দেশনা পাঠাচ্ছি। দলের এই কর্মযজ্ঞকে অনেকেই আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসাবে মনে করতে পারেন।
এত আগে ইশতেহার ও কর্মীদের নির্দেশনা কেন, এই প্রশ্নে ক্ষমতাসীন দলের নীতি-নির্ধারকরা বলেন, আমরা একটি নির্বাচন পার করেই আরেকটি নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকি। এই ব্যস্ততা তারই অংশ। আমাদের এই ব্যস্ততা নিয়ে অনেকের ভেতরে আগাম নির্বাচনের ‘খোয়াব’ দেখা দিতে পারে। এটা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নাই।
আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, সুবিধামতো সময়ে নির্বাচন হতে পারে। তবে সেটা কখন, তা নিশ্চিত করে বলা যাবে না। তাই যে কোনও সময়ে নির্বাচন হতে পারে, এমন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে প্রস্তুতি সম্পন্ন করার চেষ্টা চলছে। এর ফলে সর্বস্তরে সংগঠনও চাঙ্গা হবে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগ এমন একটা রাজনৈতিক দল, যারা একটা নির্বাচন শেষ করে আরেকটা নির্বাচনের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে থাকে। আমাদের সব মন্ত্রী ইশতেহার পকেটে রাখেন। তারা প্রতিদিন দেখেন, ইশতেহারের কতটা কাজ বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি।
দলের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য সুরঞ্জিত সেনগুপ্তও এ বিষয়ে পরিষ্কার করে কিছু বলেননি। তিনি বলেন, এটা সত্যি যে আওয়ামী লীগ পরবর্তী নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন থেকেই কাজ শুরু করেছে। কিন্তু এটা ভাবার কোনও সুযোগ নাই যে কালই নির্বাচন। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাদের কাজ শুরু করার একমাত্র লক্ষ্য, কেন্দ্র থেকে প্রান্ত পর্যন্ত নেতাকর্মীদের চাঙ্গা রাখা।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচন কেন্দ্রিক কার্যক্রমকে আগাম নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসাবে অনেকেই দেখতে পারেন। এটা ঠিক যে নির্বাচন সময় মতো হবে। তবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলা মানে সাংগঠনিক চর্চা।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ফের ২ দিন রিমান্ডে আনিসুল হক
রাজধানীর বাড্ডা থানার স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা আল-আমিন হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রীবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
জামিন পেলেন সাবেক বিচারপতি মানিক
অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশের সময় সিলেটের কানাইঘাটের ডোনা সীমান্ত এলাকা থেকেবিস্তারিত পড়ুন