আজ নির্বাচনে যাঁরা জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান হয়েছেন-
সারা দেশে ৬১ জেলায় জেলা পরিষদে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ ও গণনা শেষে ফলাফল প্রকাশ শুরু হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত এ স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা হয়। পরে কিছুটা বিরতি দিয়ে গণনা করা হয়। এরপরই রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি বাদে ৬১ জেলায় ভোটগ্রহণ হয়েছে। এর মধ্যে ২২ জেলায় চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী থাকায় তাঁরা বিনাভোটে নির্বাচিত হয়ে আছেন। তাঁরা সবাই আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী। এর বাইরে আজ ৩৯ জেলায় চেয়ারম্যান পদে ভোট গ্রহণ করা হয়। সাধারণ সদস্যপদে ১৩৯ জন ও সংরক্ষিত সদস্যপদে ৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
যে ২২ জেলায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন তাঁরা হলেন নারায়ণগঞ্জে আনোয়ার হোসেন, গাজীপুর মো. আখতারুজ্জামান, ঠাকুরগাঁওয়ে সাদেক কোরাইয়াশী, জয়পুরহাটে আরিফুর রহমান রকেট, নাটোরে সাজেদুর রহমান খান, সিরাজগঞ্জে আবদুল লতিফ বিশ্বাস, যশোরে শাহ বদিউজ্জামান, বাগেরহাটে শেখ কামরুজ্জামান টুকু, ঝালকাঠিতে সরদার শাহ আলম, ভোলায় আবদুল মোমিন টুলু, নেত্রকোনায় প্রশান্ত কুমার রায়, মুন্সীগঞ্জে মো. মহিউদ্দীন, দিনাজপুরে আজিজুল ইমাম চৌধুরী, নওগাঁয় এ কে এম ফজলে রাব্বী, কুষ্টিয়ায় রবিউল ইসলাম, ঝালকাঠীতে সরদার মো. শাহ আলম, কিশোরগঞ্জে মো. জিল্লুর রহমান, ঢাকায় মো. মাহবুবুর রহমান, হবিগঞ্জে ডা. মো. মুশফিক হোসেন চৌধুরী, চট্টগ্রামে মোহাম্মদ আবদুস সালাম, টাঙ্গাইলে ফজলুর রহমান খান ও ফরিদপুরে মো. লোকমান মৃধা।
আজ নির্বাচনে যাঁরা জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান হয়েছেন-
কুড়িগ্রাম : আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী মো. জাফর আলী আনারস প্রতীকে ৬৫০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কাপপিরিচ প্রতীকের পনির উদ্দিন আহমেদ পেয়েছেন ২৭৯ ভোট।
সাতক্ষীরা : আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. নজরুল ইসলাম মোটরসাইকেল প্রতীকে ৬৪৮ ভোট পেয়ে চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত মুনসুর আহমেদ আনারস প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৭৮ ভোট।
পিরোজপুর : চেয়ারম্যান পদে জিতেছেন বিদ্রোহী প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন মহারাজ। তিনি পেয়েছেন ৪২৩ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহআলম পেয়েছেন ৩০২ ভোট।
চাঁদপুর : আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী আলহাজ ওসমান গণি পাটোয়ারী মোবাইল প্রতীকে ৭৬৭ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী নুরুল আমিন রুহুল ঘোড়া প্রতীকে ৪১৪ ভোট পেয়েছেন।
বরিশাল : আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. মইদুল ইসলাম বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন। তিনি আনারস প্রতীক পেয়েছেন ৯৬৮ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী খান আলতাফ হোসেন ভুলু ঘোড়া প্রতীকে পেয়েছেন ২৫৫
ভোট।
নীলফামারী : চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. জয়নাল আবেদীন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি পেয়েছেন ৪৪২ ভোট। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট মমতাজুল হক পেয়েছেন ৪১১ ভোট।
লক্ষ্মীপুর : চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী সামছুল ইসলাম ৫৫৫ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী পেয়েছেন ১৯৭ ভোট।
শরীয়তপুর : চেয়ারম্যান পদে জিতেছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিক ছাবেদুর রহমান খোকা।
বরগুনা : আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেলোয়ার হোসেন বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
চাঁদপুর : আওয়ামী লীগ-সমর্থিত ওসমান গণি বেসরকারিভাবে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছেন।
পাবনা : চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী রেজাউল রহিম লাল বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন।
রাজশাহী : চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী সরকার।
বরিশাল : আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মাইতুল ইসলাম বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
নরসিংদী : আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. আসাদোজ্জামান বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।
পঞ্চগড় : আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আমানুল্লাহ বাচ্চু চেয়ারম্যান পদে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন।
সিলেট : আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী লুৎফর রহমান বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন।
ঝিনাইদহ : আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী কনককান্তি দাস বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
সুনামগঞ্জ : আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নুরুল হুদা মুকুট বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
মেহেরপুর : চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী গোলাম রসুল বেসরকারিভাবে বিজয়ী হয়েছেন।
মাগুরা : চেয়ারম্যান পদে জিতেছেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী পঙ্কজ কুমার কুণ্ডু।
রংপুর : চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ-সমর্থিত অ্যাডভোকেট ছাফিয়া খানম বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন।
২০১১ সালের ১৫ ডিসেম্বর ৬১ জেলায় প্রশাসক নিয়োগ দেয় সরকার। তাঁদের মেয়াদপূর্তিতে এবারই প্রথম জেলা পরিষদে নির্বাচন হচ্ছে। জেলায় অন্তর্ভুক্ত সিটি করপোরেশন (যদি থাকে), উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ভোটে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হবেন।
চেয়ারম্যান পদে ৪১ জেলায় ভোট হয়। সাধারণ সদস্যপদে দুই হাজার ৯৮৫ জন ও সংরক্ষিত সদস্যপদে ৮০৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন।
এ হিসাবে স্থানীয় সরকারের চারটি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৬৭ হাজার নির্বাচিত প্রতিনিধি এ নির্বাচনে ভোট দেবেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভোটার রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদে। দেশের প্রায় চার হাজার ৫৭১টি ইউনিয়ন পরিষদে গড়ে ১৩ জন করে প্রায় ৬০ হাজারের মতো নির্বাচিত প্রতিনিধি রয়েছেন।
একইভাবে ৪৮৮টি উপজেলা পরিষদে নির্বাচিত প্রতিনিধি রয়েছেন প্রায় দেড় হাজার।
৩২০টি পৌরসভায় নির্বাচিত প্রতিনিধি রয়েছেন সাড়ে পাঁচ হাজার এবং ১১টি সিটি করপোরেশনে প্রায় ৫৫০ নির্বাচিত প্রতিনিধি রয়েছেন, যাঁরা জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
এ দিকে আদালতের নির্দেশে নোয়াখালীতে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে সব ধরনের পদে এবং ২, ৬ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্যপদে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। এ ছাড়া যশোরে ৩ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্যপদে এবং সংরক্ষিত ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভোট গ্রহণ স্থগিত আছে। আর মাগুরায় ১১ নম্বর ওয়ার্ডে সব ধরনের পদে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে। বগুড়ায় চেয়ারম্যান পদে ও গাইবান্ধায় ৮ ও ১০ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্যপদে ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়েছে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন