আদিতমারী উপজেলা ভুমি অফিস ডিসপ্লে বোর্ডে নিয়মাবলী উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে অফিস চলে সার্ভেয়ারের হুকুমেই!
সোহানুর রহমান ,লালমনিরহাট প্রতিনিধি: ভোগান্তির অপর নাম আদিতমারী উপজেলা ভুমি অফিস। প্রতিটি টেবিলেই মোটা অংকের উৎকোচ ছাড়া নামজারি নিস্পত্তি হয় না লালমনিরহাটের আদিতমারী ভুমি অফিসে। ভুক্তভুগিরা অতিষ্ট জেলা প্রশাসক বরাবরে ভুমি মালিকদের অভিযোগ।
অভিযোগে জানা গেছে, জমি ক্রয় বা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে খারিজ বা নামজারি অত্যবশ্যক। আর এক কাজটি করতে ইউনিয়ন ভুমি অফিস থেকে শুরু করে দৌড়াতে হয় উপজেলা ভুমি অফিস পর্যন্ত। এসব প্রক্রিয়া সম্মন্ন করতে ভুমি মালিকদের গুনতে হচ্ছে মোটা অংকের উৎকোচ। শুধু তাই নয় নামজারির আবেদন করার ৪৫ দিনের মধ্যে তা নিস্পত্তির বিধান থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে মাসের পর মাস ভুমি অফিসে ঘুরতে হয় ভুক্তভুগিদের।
এ উপজেলায় নির্বাহী কর্মকর্তা সাড়ে ৩মাস , সহকারী ভুমি কমিশনার ও কানুনগো পদটি কয়েক বছর ধরে শুন্য রয়েছে। তাই নামজারিসহ ভুমি অফিসের সমস্ত কাজ করছেন সর্ভেয়ার আকরাম হোসেন।
এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন অজুহাতে নামজারির প্রতিটি আবেদনের পিছনে ৫ থেকে ১০হাজার টাকা পর্যন্ত উৎকোচ নিচ্ছেন উপজেলা ভুমি সার্ভেয়ার আকরাম হোসেন। উৎকোচ না দিলে মাসের পর মাস ঘুরতে হয় ভুমি মালিকদের।
এমন একজন ভুক্তি ভুগি উপজেলার ভেটেশ্বর গ্রামের লুৎফর রহমান। যার নামজারি কেস নং ১৪১৪/১৫-১৬। তার কাছে প্রথম দিকে ১০হাজার টাকা দাবি করা হলেও সমঝোতা হয় সাড়ে তিন হাজারে। তাকে নামজারির রশীদ দেয়া হয় মাত্র এক হাজার একশত ৫০টাকা। বাকী টাকা বন্টক হয় উপজেলা সার্ভেয়ার আকরাম হোসেন, অফিস সহকারী(নাজির) শৈলেন্দ্র নাথ রায়ের মাঝে। ভুক্তভুগি লুৎফর রহমানকে উৎকোচ গুনার পরও ৪মাস ঘুরতে হয়েছে ভুমি অফিসের বারান্দায়। নামজারি কাগজ বুঝে দেয়ার পর তাকে বলা হয় টাকার বিষয়টি কাউকে না বলতে। কিন্তু প্রতিবাদী লুৎফর রহমান এর প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত ভাবে অভিযোগ দায়ের করেন।
বৃহস্পতিবার(১৮আগষ্ট) দুপুরে আদিতমারী উপজেলা ভুমি অফিসে গিয়ে দেখা যায় ডিসপ্লে বোর্ডে নামজারির নিয়মাবলীতে বলা হয়েছে- নামজারির ফিস এক হাজার এক শত ৫০টাকা এবং নামজারি আবেদনের ৪৫দিনের মধ্যে নিস্পত্তি করতে হবে। ডিসপ্লে বোর্ডে নিয়মাবলী উল্লেখ থাকলেও বাস্তবে অফিস চলে সার্ভেয়ারের হুকুমেই। ভুমি অফিসের বারান্দায় অপেক্ষায় থাকেন কয়েকজন দালাল। তারাও খদ্দর ধরে দাম-দস্তর ঠিক করে নিয়ে যাচ্ছেন সার্ভেয়ারের কক্ষে অভিযোগ ভুক্তভুগিদের।
ভুক্তভোগি লুৎফর রহমান বলেন, উৎকোচ ছাড়া নামজারি করা অসম্ভব এ ভুমি অফিসে। উৎকোচের বিষয়টি কাউকে জানালে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুমকী দেন সার্ভেয়ার। দেখার কেউ না থাকায় সার্ভেয়ার নিজেই এ অফিসের রাজা হয়েছেন।
আদিতমারী উপজেলা ভুমি অফিসের সার্ভেয়ার আকরাম হোসেন উৎকোচ নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ৪ মাস নয়, মাত্র ৪৫দিনের মধ্যেই নামজারি নিস্পত্তি করা হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগটি সত্য নয় বলেও তিনি দাবি করেন।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ভার) শাহীনুর আলম জানান, বিষয়টি তার জানা নেই। তবে কেউ উৎকোচ গ্রহন করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ শুরু
লালমনিরহাট থেকে বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনের লাইনচ্যুত হওয়া ৩টি বগি উদ্ধারবিস্তারিত পড়ুন
পাটগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক আটক
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে অণুপ্রবেশের দায়ে ভারতীয় নাগরিকবিস্তারিত পড়ুন
ভিক্ষুক মুক্ত হচ্ছে লালমনিরহাট জেলা
মানুষের দ্বারে দ্বারে আর ভিক্ষাবৃত্তি নয়। সরকারই নিচ্ছে ভিক্ষুকের দায়।বিস্তারিত পড়ুন