আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে রয়েছে আরো ২৩ কিলার
নিষিদ্ধ আনসারুল্লাহ বাংলা টিমে (এবিটি) স্লিপার সেলে রয়েছে ভয়ংকর ২৩ কিলার। এদের বেশিরভাগই উচ্চশিক্ষিত এবং ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান। তথাকথিত ঈমানি দায়িত্ব নিয়ে হত্যার মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে এসব সদস্য। আর তাদের প্রধান টার্গেট হচ্ছে ব্লগার ও মুক্তচিন্তার মানুষ।
এবিটির ভয়ংকর খুনিদের তালিকা রয়েছে গোয়েন্দা পুলিশের কাছে। এ তালিকায় আছে ২৩ জনের নাম। নিলয় হত্যার আগে আরও সাত ব্লগারকে হত্যার উদ্দেশ্যে দফায় দফায় বৈঠক করে উগ্রপন্থীরা। কিন্তু ডিবি পুলিশের অব্যাহত তৎপরতা ও ব্লগারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় তাদের সে টার্গেট ভেস্তে গেছে। সাতজনের
তালিকার অন্যতম ছিলেন ব্লগার সুব্রত অধিকারী শুভ, মশিউর রহমান বিপ্লব এবং রাসেল পারভেজ। তাদের খুন করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করে স্লিপার সেলের সদস্য। নিলয় হত্যায় গ্রেফতার সাদ আল নাহিন ও মাসুদ রানার কাছে পাওয়া গেছে এসব তথ্য। জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাদের পরবর্তী টার্গেটের তথ্যও স্বীকার করেছে। এমনকি এসব ব্লগারের পুরো প্রোফাইল পর্যালোচনা শেষ হয়েছে বলেও জানায় এ দুজন।
এদিকে ডিবি পুলিশের হাতে থাকা আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের ভয়ংকর খুনির তালিকায় যাদের নাম আছে তারা হল- রেজওয়ানুল আজাদ রানা, আবদুল করিম ওরফে জাবের, রেজওয়ান শরীফ, আলী আজাদ, নাইম, সাইফুল, আমিনুল, জাহিদ, জুন্নুন, কাওসার হোসেন, কামাল হোসেন, কামাল উদ্দিন, কামাল সর্দার, নবীর হোসেন, আবদুল্লাহ, হাসিব, ফাহিম, আরেক আবদুল করিম, মানিক, আবু সায়েম, সৌরভ সালেহ, আসলাম ও জাহাঙ্গীর। এ তালিকায় থাকা উগ্রপন্থী সদস্যরা এবিটির একেকটি স্লিপার সেলের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে তথ্য দিয়েছে গ্রেফতার সাদ আল নাহিন। এ নাহিন নিজেও ব্লগার আসিফ মহিউদ্দিনকে হত্যার চেষ্টা করেছিল।
ব্লগার নীলাদ্রি চট্টোপাধ্যায় ওরফে নিলয় হত্যায় রিমান্ডে থাকা আনসারুল্লাহর ভয়ংকর সদস্য সাদ আল নাহিন ও মাসুদ রানা গোয়েন্দাদের কাছে স্বীকার করেছে, তাদের হাতে আরও একটি লম্বা তালিকা আছে। ওই তালিকা ধরে তারা খুন করতে প্রস্তুত রয়েছে। আর এটাকে তাদের ভাষায়, ইমানি দায়িত্ব হিসেবে মনে করা হয়।
নাহিন ও মাসুদের তথ্য অনুযায়ী, নিলয় খুনের বিষয়ে সে আরও আগেই আবদুল করিম ওরফে জাবের ও রেজওয়ানুল আজাদ রানার কাছে শুনেছে।
তাছাড়া আরও কয়েকবার আসিফ মহিউদ্দিনকে তাদের দল হত্যার চেষ্টা করে। পাশাপাশি তাদের টার্গেট ছিল আরও কিছু ব্লগার ও মুক্তচিন্তার বুদ্ধিজীবী। সে ক্ষেত্রেও তারা বারবার হত্যা চেষ্টা করেছে। কিন্তু আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিরাপত্তার কারণে তা হয়ে উঠেনি। বিশেষ করে ডিবি পুলিশের অব্যাহত তৎপরতায় তাদের এসব পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) মনিরুল ইসলাম শনিবার যুগান্তরকে বলেন, নিলয় হত্যায় যে দুজনকে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তারা অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। আমরা সব তথ্য পর্যালোচনা করছি। তিনি বলেন, উগ্রপন্থীদের আরও কয়েক ব্লগার ও মুক্তচিন্তার মানুষকে হত্যার চেষ্টা করেছিল, যা আমাদের অব্যাহত নজরদারি ও আভিযানিক তৎপরতার কারণে ভেস্তে গেছে।
গোয়েন্দা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেন, আমরা আশা করছি ব্লগাররা আর কোনো কটাক্ষ করে কিছু লিখবেন না। যারা এ ধরনের লেখালেখি করবে তাদের কঠোর আইনের আওতায় আনা হবে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৭ আগস্ট রাজধানীর খিলগাঁওয়ে পূর্ব গোড়ানের বাসায় ব্লগার নিলয় হত্যায় গ্রেফতার দুজনের সূত্র ধরে তদন্তে বেশ অগ্রগতি আছে, বাঁহাতি-ডানহাতি মিলে খুনিদের বিষয়ে তথ্য পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে তিনজনকে নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে।
যে কোনো মুহূর্তে তাদের আটক বা গ্রেফতার দেখানো হতে পারে বলে জানা গেছে। এদিকে শনিবার নিলয়ের স্ত্রী আশামণি ও তার বোন ইসরাত তন্বীর সঙ্গে কথা বলেন তদন্তসংশ্লিষ্টরা। এ সময় তাদের সম্ভাব্য আরও কয়েকজন খুনির ছবি দেখানো হয়।
তদন্ত সূত্র বলেছে, ২০১৩ সালে ব্লগার রাজীব হায়দার শোভনকে হত্যার পর থেকে বেশসংখ্যক ব্লগারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে। সম্প্রতি অমি রহমান পিয়াল নামে একজন ব্লগার খিলগাঁও থানা পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়ে খিলগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়া মো. মুস্তাফিজ বলেন, এটা আমাদের দায়িত্ব। সবার নিরাপত্তা নিশ্চিতই আমাদের কাজ। সম্প্রতি ব্লগার পিয়াল ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় তিনি কিছুটা ঝুঁকিমুক্ত বলেও উল্লেখ করেন।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
ডিএমপি: ৫ আগস্ট পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. সারোয়ার জাহানবিস্তারিত পড়ুন
আমির খসরু: নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণকে দেশের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হবে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, “গণতন্ত্রেরবিস্তারিত পড়ুন
নারায়নগঞ্জে কোটা আন্দোলনকারীর উপর আক্রমন
নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়নগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ এলাকায় কোটা আন্দোলনকারী সংগঠকবিস্তারিত পড়ুন