আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির সঙ্গে দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময়ের রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করলো ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল ইসলামী ঐক্যজোট। অনেক দিনের চাপা ক্ষোভ থেকে দলটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সরকারের ক্রমাগত চাপ ও সুযোগ-সুবিধার প্রতিশ্রুতিও।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে দলের ত্রি-বার্ষিক জাতীয় কনভেনশনে জোট ছাড়ার ঘোষণা দেয় দলটি।

দলটির পুনর্নিবাচিত চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল লতিফ নিজামী কনভেনশনে বলেন, ‘ইসলামী ঐক্যজোট ঘোষণা করছে যে ২০ দলের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। আমাগী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিটি আসনেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা করছি।’

এদিকে বিকেলে জরুরি প্রেস ব্রিফিং ডেকেছে বিএনপি। ধারণা করা হচ্ছে এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরতেই এ ব্রিফিং ডাকা হয়েছে।

তবে ২০ দলীয় জোট ভাঙার ষড়যন্ত্র চলছে অভিযোগ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, দেশে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। ২০ দলীয় জোটের বিভিন্ন দলকে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সরানোর চেষ্টা চলছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ফেলানী ও আমাদের গণতন্ত্র শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ অভিযোগ করেন।

হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, জোট ভাঙার এই ষড়যন্ত্র সফল হবে না। আমরা অপেক্ষায় আছি, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ২০ দলীয় জোট ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে নামার।

২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপির নেতৃত্বে চার-দলীয় জোট গঠিত হয়। এই জোটের অন্য তিনটি দল হলো- জামায়াতে ইসলামী, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি) ও ইসলামী ঐক্যজোট। পরে এটি পর্যায়ক্রমে ২০-দলীয় জোটে পরিণত হয়। জোট গঠনকালীন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান ছিলেন প্রয়াত মুফতি ফজলুল হক আমিনী।

সে সময়ের মহাসচিব আব্দুল লতিফ নেজামী বর্তমানে দলটির চেয়ারম্যান। আর মহাসচিব আছেন মুফতি ফয়জুল্লাহ। দলটির ভাইস চেয়ারম্যান আমিনীর ছেলে মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী।

গত মঙ্গলবার ৫ জানুয়ারি বিতর্কিত নির্বাচনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি সমাবেশ করে। এতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বক্তব্য দেন। তবে বরাবর যেভাবে এ জাতীয় সমাবেশে বিএনপি জোটের শরিক দলগুলোর নেতাকর্মী যোগ দেয়, এবার তা দেখা যায়নি।

এরপর বুধবার রাতে ইসলামী ঐক্যজোটের মজলিসে শুরার সদস্যরা জরুরি বৈঠক করে। সেখানেই জোট ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে দলটির কয়েকজন শীর্ষ নেতা নিশ্চিত করেছেন।