আন্দোলনকারী আনসারদের কথা-কাজের ধরনই বলছে উদ্দেশ্য ভিন্ন: সারজিস আলম
চাকরি জাতীয়করণসহ কয়েকটি দাবিতে আনসার সদস্যরা যে আন্দোলন করছেন, তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, যখন দেশের দুটি বিভাগে প্রায় ১০টি জেলায় লাখ লাখ মানুষ বন্যা কবলিত, তখন সেখানে সর্বোচ্চ সহযোগিতা না করে রাষ্ট্রকে এভাবে অস্থিতিশীল করার কারণ কী?
নিজেদের চাকরি জাতীয়করণসহ কয়েকটি দাবিতে আনসার সদস্যরা কয়েকদিন ধরে ঢাকায় বিক্ষোভ করছিলেন। রবিবার তারা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সচিবালয় ঘেরাও করে রাখেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে চাকরি জাতীয়করণের ঘোষণা দেওয়ার দাবি জানান। ঘেরাও করে রাখায় সচিবালয় থেকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বের হতে পারছিলেন না। দিনভর রাজধানীতে ছিল ব্যাপক যানজট।
রাতে জাতির উদ্দেশে ভাষণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সবাই ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এখনই সব দাবি পূরণ করার জন্য জোর করা, প্রতিষ্ঠানে ঢুকে ব্যক্তিবিশেষকে হুমকির মধ্যে ফেলা, মামলা গ্রহণের জন্য চাপ সৃষ্টি করা, বিচারের জন্য গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে আদালতে হামলা করে আগেই এক ধরনের বিচার করে ফেলার যে প্রবণতা, তা থেকে বের হতে হবে।
সারজিস আলমের ফেসবুক পোস্টটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
বিগত ১ সপ্তাহ ধরে ঢাকার সরকারি ও প্রাইভেট অন্তত ২০টির অধিক হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে আমরা আমাদের আহত ভাইদের দেখেছি ৷ ডাক্তার, রোগী, স্টাফদের সাথে কথা বলেছি ৷ এই দুর্নীতিগ্রস্থ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভিতর ও বাইরের নানা গল্প জেনেছি ৷
সেগুলো আমরা স্বাস্থ্য উপদেষ্টা মহোদয় জানাতে চাই ৷ তিনি আমাদের কথাগুলো শুনতে আমাদেরকে ডাকেন ৷
আবার আমাদের ত্রাণ নিয়ে বন্যাদুর্গত এলাকায় যাওয়া ট্রাকগুলো কিংবা যে গাড়িগুলোতে ত্রাণ বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্যাম্পাসে আসছিলো সেগুলোও ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে পারছিলো না ৷ তাছাড়া বন্যাকবলিত এলাকার নানা প্রত্যন্ত প্রান্ত থেকে কল ম্যাসেজ আসছিলো ত্রাণের জন্য ৷ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা, কার্যক্রম ও পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার বিষয় নিয়ে কথা বলার জন্য আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয়ের সাথে কথা বলতে যাই ৷
এই দুই বিষয় নিয়ে কথা বলতে যাওয়ার সময় আমরা সচিবালয়ের চারপাশের রাস্তাগুলো অবরুদ্ধ করে আনসারদের আন্দোলন দেখতে পাই ৷ পরে এ বিষয়টিও আমরা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয়কে জানাই ৷ আমরা জানতে পারি আমাদের পূর্বেই আমাদের অন্য দুই উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয়ের সাথে এই বিষয়ে কথা বলে যৌক্তিক সমাধানের আহবান জানান ৷
পরে আমাদের দুই উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ তাদের সাথে কথা বলে তখনই আলোচনার আহ্বান জানাই এবং সাত সদস্যের একটি টিম নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয়সহ একাধিকবার আলোচনায় বসে ৷
তাদের অনেক দাবি মেনে নেওয়া হয় এবং বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় বাকি দাবিগুলোর বিষয়ে ধৈর্য ধরে যৌক্তিক সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হয় ৷
কিন্তু একটা গোষ্ঠী এসব আলোচনা মানতে চাচ্ছিলো না ৷ তাদের কথা ও কাজের ধরনই প্রকাশ করছিলো তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন ৷ নাহলে সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত আলোচনার পরও সচিবালয়ে সকলকে অবরুদ্ধ করে রাখার যৌক্তিকতা কি ? অথচ তখন তাদের প্রতিনিধি দল সচিবালয়ের ভিতরেই ছিল ৷
যখন দেশের ২টি বিভাগে প্রায় ১০টি জেলায় লক্ষ লক্ষ মানুষ বন্যা কবলিত তখন সেখানে সর্বোচ্চ সহযোগিতা না করে রাষ্ট্রকে এভাবে অস্থিতিশীল করার কারণ কি ?
আর স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয়কে প্রশ্ন করতে চাই- পুলিশ কবে পুরোদমে মাঠে নামবে? সচিবালয়ে নিরাপত্তার এই অবস্থা কেন? ছাত্রজনতাকে কেন যেতে হবে? আমার ভাইদের উপর গুলি কেন চললো? এই আর্মস আনসার পেলো কোথায়? গুলি চললো কার অর্ডারে?
পরিশেষে দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে একটা কথাই বলবো ৷
১৬ বছরের ফ্যাসিস্ট সরকারের অত্যাচার তো মুখ বুজে অনেক সহ্য করেছেন ৷ এবার রাষ্ট্র গঠনের জন্য অন্তত কয়েক মাস ধৈর্য ধরুন ৷ একটা সিস্টেম কয়েকদিনে পরিবর্তন করা সম্ভব নয় ৷
ব্যক্তিগত জায়গা থেকে পরিবর্তন হোন, পরামর্শ দিন, ধৈর্য ধরুন অতঃপর প্রশ্ন করুন ৷ আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ আমরা গড়বোই ইননশাআল্লাহ ৷
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
রবিবার যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
গ্যাস পাইপলাইনের মেরামত কাজ ও জরুরি স্থানান্তরের জন্য রবিবার দেশেরবিস্তারিত পড়ুন
জেমিনি চ্যাটবটে যুক্ত হলো মেমোরি, যে সুবিধা পাওয়া যাবে
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট জেমিনিতে নতুন সুবিধা যুক্ত করেছে গুগল।বিস্তারিত পড়ুন
ঢাকা সিটি কলেজে ক্লাস বন্ধ রাখা নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত
ঢাকা কলেজের বাস ভাঙচুরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার সংঘর্ষেবিস্তারিত পড়ুন