আপনি কি খুব আবেগপ্রবণ?
আবেগ এক ধরনের অনুভব। এর মধ্যে রয়েছে ভালোবাসা, ঘৃণা, উদ্বেগ, রাগ, বিশ্বাস, আনন্দ, প্যানিক, ভয়, দুঃখ ইত্যাদি। আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে অনেককেই অনেক মূল্যবান জিনিস হারাতে হয়। আবার আবেগহীনতাও কখনো কখনো ক্ষতির কারণ হয়। তাই জানা প্রয়োজন আবেগ নিয়ন্ত্রণের কৌশল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক সালমা পারভীন আবেগের কিছু কারণ জানিয়ে বলেন, ‘কোনো একটি পরিস্থিতি একজন ব্যক্তি যখন অনেক চাপ নিয়ে দেখে, অবস্থা যদি তাঁর কাছে হুমকির মতো মনে হয় এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকে—তখন সে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে। এ ছাড়া নেতিবাচক, অনাকাঙ্ক্ষিত বা অপ্রত্যাশিত কিছু ঘটলে নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।
আবেগ নিয়ন্ত্রণের কিছু কৌশল জানান শিক্ষক সালমা পারভীন। এগুলো হলো :
১. আবেগ নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে সচেতন হতে হবে। কোন কোন পরিস্থিতিতে সে নিজেকে সামলে রাখতে পারছে না, সেগুলো বুঝতে করতে হবে। আর সে নিজের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললে কোন কোন ধরনের আবেগের প্রকাশ তার মধ্যে ঘটছে, সেগুলো খেয়াল করতে হবে, যেমন : রাগ, ক্ষোভ, হতাশা, অস্থিরতা ইত্যাদি। নেতিবাচক চিন্তাগুলো চিহ্নিত করতে পারলে আবেগ নিয়ন্ত্রণ সম্ভব।
২. অনেকে কিছু কিছু পরিস্থিতিকে খুব বিপৎসংকুল বা ভয়ংকর মনে করে। এই প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। যেকোনো একটি পরিস্থিতিকে অতিরঞ্জিত না ভেবে, এর ইতিবাচক দিক ভাবা যায় কি না, সেটা খেয়াল করতে হবে। তাহলে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে।
৩. নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে ধ্যান, শিথিলায়ন এগুলো করা যেতে পারে। গবেষণায় বলা হয়, দিনে অন্তত ২০ মিনিট ধ্যান বা মেডিটেশন আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।
৪. যে বিষয়গুলো আপনাকে আবেগপ্রবণ করে তোলে, সেই বিষয়গুলো থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিতে হবে। বেশি মনোযোগ দিলে বা ভাবলে এগুলো বেশি গ্রাস করে। তাই অন্য কিছুর প্রতি মনোযোগী হোন এ সময়।
৫. যদি কারো কোনো বিষয় খারাপ লাগে, তবে সেটি ওই ব্যক্তিকে বুঝিয়ে বলুন, মুখোমুখি হয়ে সরাসরি কথা বলুন।
৬. তবে একবার-দুবার বললেই যে লোকটি সেটি করতে পারবে বা করে ফেলবে, তা নয়। তাকে বারবার বোঝাতে হবে। সে কেন বুঝল না, এটা নিয়ে হীনমন্যতা বা মন খারাপ করা যাবে না। এতে আবেগ বেড়ে যাবে।
৭. প্রত্যেকেরই একটি সীমাবদ্ধতা থাকে। সব আপনার মতো নাও হতে পারে। এটা বুঝতে হবে। সহমর্মী হতে হবে। এতে বিষয়টি আপনার অনুকূলে আসতে পারে।
৮. কোনো একটি পরিস্থিতিকে আবেগ দিয়ে বিবেচনা না করে যুক্তি দিয়ে বিবেচনা করুন।
৯. ক্ষমা করতে হবে।
১০. সবকিছু নিজের গায়ে টেনে না নিয়ে কিছু কিছু বিষয় উপেক্ষা করুন।
১১. নেতিবাচক চিন্তাগুলো কমিয়ে বিষয়গুলোকে ইতিবাচকভাবে চিন্তা করার চেষ্টা করতে হবে।
১২. সমালোচনা গঠনমূলকভাবে গ্রহণের ক্ষমতা থাকতে হবে। কেউ সমালোচনা করলেই নিজেকে হীনমন্য করা যাবে না। আত্মবিশ্বাস রাখতে হবে।
১৩. নিজের শক্তি ও দুর্বলতা সম্বন্ধে জানতে হবে।
১৪. অন্যকে অনুরোধ করতে পারা, না করতে পারা ইত্যাদি বিষয় শিখতে হবে।
১৫. খুব বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন। একটু শিথিল হয়ে বসে লম্বা দম নিন। কিছুক্ষণ দম আটকে রাখুন। এরপর ধীরে ধীরে মুখ দিয়ে দম ছাড়ুন। এভাবে ৭ থেকে ১০ বার করুন। রিল্যাক্স লাগবে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
মানবদেহে আদার অনেক উপকার
আমাদের দিনে কয়েকবার রঙিন খাবার খাওয়া উচিত, কিন্তু আপনি কিবিস্তারিত পড়ুন
হোটেল ঘরে বিছানার চাদর সাদা হয় কেন ?
বেড়াতে গিয়ে হোটেলের ঘরে ঢুকে প্রথম যে বিষয়টি নজরে আসে,বিস্তারিত পড়ুন
ধনিয়া পাতার উপকারি গুণ
চিকিৎসকদের মতে, ধনে বা ধনিয়া একটি ভেষজ উদ্ভিদ যার অনেকবিস্তারিত পড়ুন