আবারও গুরতর ইনজুরিতে মাঠের বাইরে ইমরুল
কলম্বোতে শততম টেস্টে বিশাল রদবদল করে লঙ্কানদের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ দল। ঐতিহাসিক এই টেস্টে অভিষিক্ত হন প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটে ৭০ ছুঁই ছুঁই গড়ের ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসাইন।
তিন নম্বর ব্যাটসম্যান মমিনুল হককে বাইরে রেখে ইমরুল কায়েসকে সুযোগ দেয় ম্যানেজমেন্ট। তাইজুলকে জায়গায় দিতে তাসকিনের বাইরে বসতে হয় শততম টেস্টে। লিটনের ইনজুরিতে গ্লাভস তুলে নিতে হয় অধিনায়ক মুশফিককে।
তবে বাংলাদেশের জন্য ঘটনাবহুল এই টেস্টে টস ভাগ্যে হারলেও বল হাতে নিজেদের সেরা পারফর্মেন্সটা দেয় দুই বাংলাদেশি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান ও শুভাশিস রয়। কয়েকদফা সিম মুভমেন্টে লঙ্কান ওপেনারদের খাবি খাইয়েছে ছাড়েন দুই টাইগার পেসার।
ইনিংসের সাত ওভারে মাত্র ১১ রান খরচ করে বাংলাদেশ। তাও আবার পাঁচ রান এসেছে ওয়াইড ও বাই রানে। ইনিংসের অষ্টম ওভারে মিরাজে বল তুলে দেন মুশফিক।
তবে লঙ্কানদের প্রথম উইকেটের পতন ঘটান পেসার মুস্তাফিজ। ইনিংসের নবম ওভারে অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে গালিতে মিরাজের দারুন ক্যাচে ধরা পড়েন করুনারাত্না।
সেখানেই থামলেন না মুস্তাফিজ। ইনিংসের ১১তম ওভারে তফ কাটারে ওপেনার থারাঙ্গার ব্যাট পরাস্ত করে প্যাডে আঘাত হানেন মুস্তাফিজ। বাংলাদেশি ক্যাম্পের আবেদনে আম্পায়ার আউট দিলেও রিভিউতে এযাত্রায় বেঁচে যান লঙ্কান ওপেনার।
ঠিক পরের ওভারে লঙ্কান ক্যাম্পে আঘাত হানেন মেহেদী মিরাজ। গত ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় কুশাল মেন্ডিসকে লেন্থ থেকে সোজা হয়ে আসা বলে পরাস্ত হয়ে মুশফিকের স্ট্যাম্পিংয়ের শিকারে পরিণত করেন মিরাজ।
লঙ্কানরা মাঝের কয়েক ওভারে কিছু রান যোগ করলেও মিরাজ ছিলেন অপ্রতিরোধ্য। ইনিংসের ১৬তম ওভারে এসে মৃদু টার্ন মেশানো বলে ওপেনার থারাঙ্গাকে প্রথম স্লিপে সৌম্যর লো ক্যাচে পরিণত করেন মিরাজ। দলের স্কোর তখন ৩৫ রানে তিন উইকেট।
সেখান থেকে ৩৫ রানের জুটি গড়ে চান্দিমান ও গুনারাত্না। বলের মেধা বুঝে খেলে রান বাড়ানোর চেষ্টা করছিল এঈ জুটি। তবে লাঞ্চ বিরতির ঠিক আগেই শুভাশিসের বলে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন ১৩ রান করা গুনারাত্না।
ইনিংসের ২৮তম ওভারে উইকেট পড়ায় আম্পায়াররা লাঞ্চ ঘোষণা করেন। প্রথম সেশনে ৭০ রান তুলতে চার উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে থেকে লাঞ্চ বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।
বাংলাদেশের হয়ে দুই পেসার শুভাশিস ও মুস্তাফিজ উইকেটের দেখা পান। বাকি দুই উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। বিরতির পর ধনাঞ্জয়া ডি সিলভার সাথে জুটি গড়ে লঙ্কানদের স্কোর শত পার করেন দীনেশ চান্দিমাল।
জুটি গড়ে স্বাচ্ছন্দ্যে রান তুলছিল দুই লঙ্কান ব্যাটসম্যান। ইনিংসের ৩৮তম ওভারে সাকিব আল হাসানের আর্ম বলে চান্দিমালের বিপক্ষে কট বিহাইন্ড জরালো আপিল করে বাংলাদেশ। কিন্তু রিভিউ নিয়ে রক্ষা পান ৩৮ রানে অপরাজিত থাকা চান্দিমাল।
সুযোগ পেয়ে চান্দিমাল ধীর ধীরে অর্ধশত রানের দিকে এগোতে থাকেন। আরেকপ্রান্তে ধনঞ্জয়া দ্রুত রান তুলতে থাকেন। ইনিংসের ৪৬তম ওভারে তাইজুলকে সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটের উপরের অংশ থেকে স্কয়ার লেগের যাওয়া বলটি দৌড়ে এসে ডাইভ দিয়ে তালুবন্দি করার চেষ্টা করেন মিরাজ।
মিরাজ ও মাঠের সবাই চান্দিমালের বিদায় উদযাপন করতে থাকলেও থার্ড আম্পায়ার নট আউট ঘোষণা করেন। পরের ওভারেই ব্যক্তিগত অর্ধশত তুলে নেন চান্দিমাল। দলের স্কোর তখন ১৩৬ রান চার উইকেটে। চান্দিমাল অর্ধশত পূর্ণ করলেও তাইজুলের করা পরের ওভারে পুল করতে গিয়ে বোল্ড হন আরেক থিতু ব্যাটসম্যান ধনাঞ্জয়া।
গুড লেন্থ থেকে ভেতরে আসা বলটি পড়তে ব্যর্থ হওয়ায় ভুল শট খেলে ৩৪ রানে থামতে হয় ধনাঞ্জয়াকে। ধনাঞ্জয়ার বিদায়ে ৬৬ রানের জুটিতে ফাটল ধরে।
সেখান থেকে চা পান বিরতি পর্যন্ত আর কোন উইকেট হারায় নি লঙ্কানরা। ৫৪ ওভার শেষে চা পান বিরতিতে যাওয়ার আগে লঙ্কানদের স্কোর দাঁড়ায় পাঁচ উইকেটে ১৪৯। দিনের দ্বিতীয় সেশনে অন্যরা সুযোগ সৃষ্টি করলেও টাইগারদের একমাত্র শিকার বোলার ছিলেন তাইজুল ইসলাম।
পা পান বিরতির পর বাংলাদেশ দলের উইকেটের দরকার ছিল। কিন্তু শুভাশিস ও মিরাজে উইকেট আসার বদলে রান খুইয়েছে বাংলাদেশ। তবে মুশফিক ইনিংসের ৬০তম ওভারে উইকেটের আশায় বল তুলে দেন সাকিবের হাতে।
নিরাশ করেননি সাকিব। আগ্রাসী ব্যাটিং করা ডিকওয়ালাকে সরাসরি বোল্ড করেন সাকিব। লেগ স্ট্যাম্পের উপরের বলটিতে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হন তিনি। আউট হওয়ার আগে ৩৭ বলে ৩৪ রান যোগ করেন ডিকওয়ালা।
ইনিংসের ৬৪তম ওভারে মুস্তাফিজকে বোলিংয়ে এনে আরেকবার উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। অফ স্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বলটি খেলতে গিয়ে স্লিপে সৌম্য সরকারের হাতে ৯ রান যোগ করে আউট হন। লঙ্কানদের স্কোর তখন সাত উইকেটে ১৯৫ রান।
উইকেট হারিয়ে চাপের মুখে থাকা লঙ্কানদের কোন রকম ছার দেয় নি বাংলাদেশি বোলিং অ্যাটাক। ইনিংসের ৬৮তম ওভারে সাকিবকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফরের ফাঁদে পড়েন লঙ্কান কাপ্তান হেরাথ।
তবে হেরাথ রিভিউ নিলে দেখা যায় যে, বল প্যাডে আঘাত হানার আগে হেরাথের গ্লাভস ছুঁয়ে যায়। চাপের মুখে থাকলেও শক্ত প্রতিরোধ গড়ে খেলে যান চান্দিমাল ও হেরাথ।
ইনিংসের ৭৬তম ওভারে বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। কিছুদিন আগে ইনজুরি থেকে ফেরা ওপেনার ইমরুল কায়েস দিনে দ্বিতীয়বারের মত বলের আঘাত পান। এযাত্রায় মাঠ ছাড়তে হয় ইমরুলকে।
এই সংক্রান্ত আরো সংবাদ
নারী ফুটবল দলের বেতন বকেয়া, দ্রুত সমাধানের আশ্বাস
টানা দ্বিতীয়বার সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেবিস্তারিত পড়ুন
প্রোটিয়াদের রানের পাহাড়, টাইগাররা নামতেই বদলে গেল পিচের ধরন!
চট্টগ্রাম টেস্টে প্রথম ৫ সেশনেরও বেশি সময় ব্যাটিং করেছে দক্ষিণবিস্তারিত পড়ুন
নেপালকে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে স্বাগতিকদের ২-১ গোলে হারিয়ে সাফবিস্তারিত পড়ুন